ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার টেস্ট ম্যাচ পরিচালনায় দারুণ দক্ষতা দেখিয়েছেন বাংলাদেশি আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ সৈকত। বাংলাদেশিদের কাছে সেই ম্যাচের ফল অতটা গুরুত্ব না পেলেও, সৈকত আলোচনায় এসেছেন। কারণ ম্যাচটিতে তার দেওয়া ৮টি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ নিয়েছিল দুই দল। এর মধ্যে শতভাগই সফল ছিলেন আইসিসির এলিট প্যানেলে প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার সৈকত।
কেবল এই ম্যাচেই নয়, বছর জুড়েই আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ পরিচালনায় নিজের অসাধারণ কীর্তি দেখিয়েছেন তিনি। ফরম্যাটটিতে ৫টি ম্যাচে তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্রিকেটাররা মোট ৩২টি রিভিউ নিয়েছেন। এর মধ্যে কেবল ৭টি সিদ্ধান্ত গেছে তার বিপক্ষে। বাকি ২৫ সিদ্ধান্তেই সফল হয়েছেন সৈকত। এর মধ্যে দুটি ম্যাচেই ছিলেন শতভাগ সফল।
প্রোটিয়াদের বোলিং তোপে গতকাল চতুর্থ দিনে শ্রীলঙ্কা সিরিজের প্রথম টেস্টে ২৪৫ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে। সেই ম্যাচে অন-ফিল্ড আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেছেন শরফুদ্দৌলা সৈকত ও পল রাইফেল। সৈকতের মতো অস্ট্রেলিয়ান আম্পায়ার রাইফেলও ছিলেন ৬ সিদ্ধান্তের ৫টিতে সফল। সৈকতের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসের ২৪তম ওভারে রিভিউ নেয় শ্রীলঙ্কা। প্রোটিয়া ব্যাটার উইয়ান মুল্ডারের আউটের আবেদনে সাড়া দেননি তিনি। পরে রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হয় লঙ্কানরা।
দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সময় এইডেন মার্করামকে আউটের আবেদন করলে সৈকত নাকচ করে দিলে রিভিউ নেয় ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার দল। একই ইনিংসে প্রবাথ জয়সুরিয়ার বলে মুল্ডারকে এলবিডব্লু দেন তিনি। প্রোটিয়া ব্যাটার রিভিউ নিলেও সফল হননি। জয়সুরিয়ার বলেই ৮৯.৫ ওভারে টেম্বা বাভুমার বিরুদ্ধে নটআউট দিলে রিভিউ নেওয়া হয়।
পরবর্তীতে শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিংয়ে প্রথম ওভারের ৫ম বলে উইকেটের আবেদন করে দক্ষিণ আফ্রিকা। কাগিসো রাবাদার বলে তখন ব্যাট করছিলেন দিমুথ করুণারত্নে। এবারও আম্পায়ার তাদের আবেদনে কোনো সাড়া দেননি। রিভিউ নিয়ে আরও একবার ব্যর্থ। রাবাদার নবম ওভারে আরও একবার আবেদন করে দক্ষিণ আফ্রিকা। সৈকত সেই আবেদনও নাকচ করে দেন। রিভিউ নিয়েও কোনো লাভ হয়নি। পরের দুটি রিভিউ হয় মার্কো জানসেনের ওভারে। প্রথমে ম্যাথিউসের এলবিডব্লু এবং পরে কামিন্দু মেন্ডিসের ক্যাচ আউট দিয়ে সফল হন সৈকত।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনার প্রথম দায়িত্ব পাওয়া সৈকত এলিট প্যানেলে জায়গা পেয়েছেন ১৪ বছর পর। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথম কোনো বাংলাদেশি হিসেবে তিনি দায়িত্ব পান। এর অবশ্য ক্রিকেটার ছিলেন সৈকত। ১৯৯২ সালে সুযোগ পান সাফ গেমসের বাংলাদেশ দলে। একপর্যায়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়কও হয়েছিলেন। পরে কেনিয়ায় অনুষ্ঠিত ১৯৯৪ আইসিসি ট্রফিতে জায়গা হয় তার। যেখানে দ্বিতীয় রাউন্ডের তিন ম্যাচে তিনি ৬ উইকেট শিকার করেন। তবে দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কোনো ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করার আগেই ব্যাকপেইন ইনজুরির কারণে ছিটকে যান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।