অমি রহমান পিয়াল : আপনে প্রবাসে থাকেন, স্বচ্ছল। আপনার টাকা আপনি কীভাবে খরচ করবেনÑ এটা আপনার চয়েজ, আপনার সিদ্ধান্ত। চাইলে আপনার প্রাসাদোপম বাড়িতে একটা বনসাই সেকশন খুলে তার পরিচর্যা করতে পারেন। চাইলে আপনার এলাকার আচমকা বাটে পড়া লোকজনরে সাহায্য করতে পারেন। সেটা খাদ্য দিয়া হোক, চিকিৎসা দিয়া হোক, মাস্ক দিয়া হোক। সিদ্ধান্ত আপনার। এটা অবলিগেটরি না, ভলান্টারি ব্যাপার। কেউ আপনাকে কিছু বলবে না। তবে কেউ যদি দ্বিতীয় পথটা বেছে নেয়, আপনি ফুল গাছে পানি দিতে দিতে তার সমালোচনা করতে পারেন না। প্রশ্নটা তখন জাগে- আপনে কী করছেন?
আমেরিকায় আমার প্রচুর ডাক্তার বন্ধু আছে। বড় ভাই, সহপাঠী, ছোট ভাই- এরা সবাই নিজের মতো করে দিনরাত চেষ্টা করতেছে। যার যার সাধ্যমতো। ফেরদৌস এদেরই একজন। দেশের জন্য কিছু করার সিদ্ধান্তটা তার নিজস্ব। কেউ তারে জোর করে নাই। এতে কেউ ক্ষতিগ্রস্তও হয় নাই। বরং মানুষ দোয়া করতেছে তার জন্য। আপনি যখন সেটা না কইরা তারে পচানোর জন্য ১০০ ডলার দিয়া সাংবাদিক ভাড়া করেন, একটুও কি আফসোস হয় না, এই ডলারগুলা বাংলা টাকায় একটা পরিবাররে এক সপ্তাহ বাইচা থাকার রসদ জোগাইতো!
আমি বিদেশে আছি রিফিউজি হইয়া। পরের দয়ায় বাচি। তারপরও চেষ্টা করি দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে। এই করোনা পরিস্থিতিতে আমিও চেষ্টা করছি দূর্গত মানুষরে সাহায্য করতে, চেষ্টা করছি সম্মুখযোদ্ধাদের পাশে দাঁড়াইতে। সেইটা লেখা দিয়া হোক, অর্থ দিয়া, পিপিই দিয়া যেভাবেই হোক দাঁড়াইছি কয়েকটা পরিবারের পাশে, কয়েকজন বন্ধুর পাশে। এইটা কি আমি কোনো উদ্দেশ্য নিয়া করছি? আমি কি এমপি হমু, মন্ত্রী হমু বইলা লোক দেখাইতে করছি? ফেসবুকে পোস্ট করছি যে আমি হ্যান করছি, ত্যান করছি? করি নাই। কিন্তু আপনারা সেইটা নিয়াও সমালোচনা করছেন, একবারও আয়নার সামনে দাঁড়ায়া নিজেরে প্রশ্ন করেন নাই আপনে কি করছেন!
ফেরদৌস দেশে আইসা কয়েকজন হাড্ডি নিয়া কামড়া কামড়ি করা কুকুররে বিপন্ন কইরা দিছে। যারা কাজ করে, করতে চায় তাদের এরা শত্রু ভাবে। চিটাগাংয়ে ডাক্তারদের সুরক্ষার জন্য গলা ফাটানো ফয়সাল ইকবালের গলা এরা চাইপা ধরে সরকারের সমালোচনা করতেছে এই অজুহাতে। ফিল্ড হাসপাতাল নিয়া কাজ করা বিদ্যুৎ বড়ুয়ারে বলে খুনি। চিকিৎসক সমাজের বাপ-মা সাইজা এরা দিন রাত বয়ান দোচায় ফেসবুকে, গায়ে মানে না আপনি মোড়ল হইয়া বাল ফালানি পোস্ট দেয়। দুর্নীতিবাজদের পক্ষে কী-বোর্ড ধরে। কোথায় কি ধান্দা আছে, স্বাস্থ্য খাতে ডাক্তার পরিচয় দিয়া কোথায় ব্যবসা করা যায় টাকা কামানো যায় সেই ফিকিড় করে। আর ফেরদৌসের মতো কেউ যখন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়, তারে মানুষের শত্রু বানানোর চেষ্টা করে।
আপনাদের প্রত্যেককে আমি নাম ধরে চিনি, কাম ধরেও চিনি। কে কী করছেন, কবে কোথায় ধান্দা করছেন, কতো মারছেন, কোন দেশে আপনার কী অবস্থা, কার পিএইচডি থিসিস চুরি কইরা নিষিদ্ধ হইছেন, আপনার সহকর্মীরা আপনাদের কী চোখে দেখে, দেশে আইসা কী হইতে চাইছিলেন কেন… লাথি খাইছেন তাও জানি। এইটা অভাবে করেন কিংবা স্বভাবে সেইটা আপনাগো চয়েস। তবে দিনশেষে মানুষ কাজটাই দেখে। কারে দিয়া দেশের উপকার হইতেছে সেইটা কিন্তু মানুষ বোঝে। আর কেডা কাবাডি কাবাডি কইরা তার পা টাইনা ধইরা, তার বদনাম কইরা নিজের অক্ষমতা ঢাকার চেষ্টা করে- সেটাও। প্রচুর ফইন্নির পোলা আছে ফেসবুকে যাগোরে কিছু টাকা দিলেই দিনরাত আপনাগো পক্ষে গলা ফাটাইবো, আপনারে বিপন্ন করা লোকরে গালিগালাজ করবো। ওইটা না কইরা সেই অর্থ বিপদগ্রস্ত মানুষের পেছনে খরচ করেন, দোয়া পাইবেন। চয়েজ আপনার। ( অমি রহমান পিয়ালের ফেসবুক থেকে নেওয়া)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।