আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতে এতদিন ডিজিটাল নিউজ মিডিয়ায় কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। সেই কাজই এ বার শুরু করল মোদী সরকার। খবর ডয়চে ভেলে’র।
ডিজিটাল নিউজ মিডিয়া ও কনটেন্ট প্রোভাইডারদের নিয়ে আসা হলো তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আওতায়। এতদিন এই বিষয়টি দেখতো তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। তবে এই সিদ্ধান্ত কেবল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বদলের গল্প নয়, এর পিছনে আছে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণহীন ডিজিটাল নিউজ মিডিয়ার উপর কিছু বিধিনিষেধ চাপানোর পরিকল্পনা।
এখন যে কেউ ইচ্ছে করলেই ডিজিটাল নিউজ পোর্টাল খুলে ফেলতে পারেন। শুরু করে দিতে পারেন ইউ টিউব নিউজ চ্যানেল। তারপর সেখানে ইচ্ছেমতো খবর পরিবেশন করতে পারেন। কোনো নজরদারি নেই, দায়বদ্ধতা নেই। স্বশাসিত কোনো সংস্থাও নেই তাদের নিয়ন্ত্রণের জন্য। খবরের কাগজের জন্য প্রেস কাউন্সিল আছে। টিভির জন্য সেলফ রেগুলেটরি মেকানিজম আছে। সিনেমার জন্য সেন্সর বোর্ড আছে। কিন্তু সামাজিক মাধ্যম ও ডিজিটাল নিউজ মিডিয়ার জন্য খোলা পড়ে আছে পুরো ময়দান।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট একটি মামলায় সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিল, সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকা ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি স্বশাসিত সংস্থার বিষয়ে মতামত জানাতে। সেই মতামত দেয়ার আগে ডিজিটাল নিউজ মিডিয়া ও নেটফ্লিক্সের মতো কনটেন্ট প্রোভাইডারকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসা হলো। তারা এ বার মন্ত্রকের বিধিনিষেধ মানতে বাধ্য থাকবে।
ইংরাজিতে একটি পোর্টাল চালান জয়ন্ত ভট্টাচার্য। ডয়চে ভেলেকে তিনি জানিয়েছেন, ”আমাকে পোর্টাল খোলার জন্য কোনো রেজিস্ট্রেশন করাতে হয়নি, কোনো অনুমতির দরকার হয়নি। এখন এক বছর সাংবাদিকতা করে বা না করে যে কেউ নিউজ পোর্টাল খুলে ফেলতে পারছেন। তাতে যা খুশি লেখা হচ্ছে। ফলে একটা কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকলে ভালো। সব চেয়ে ভালো কোনো স্বশাসিত সংস্থার অধীনে বিষয়টি নিয়ে আসা। সম্ভবত বিষয়টি সে দিকেই যাচ্ছে।”
প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা মনে করেন, ”বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে ভারতে সামাজিক মাধ্যমে রাজত্ব করে এসেছে এবং এখনো করছে। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, বিজেপি সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের পছন্দসই প্রচার করেছে। এখন বিষয়টি বুমেরাং হয়ে গিয়েছে। তাই সামাজিক মাধ্যম নিয়ন্ত্রণের দাবি তুলছে তারা। সম্প্রতি অর্ণব গোস্বামী মামলায় তারা সুপ্রিম কোর্টের কাছেও এই আবেদন জানিয়েছিল। সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, আগে এই মামলা নিয়ে তারা ভাববে, পরে অন্য বিষয় দেখবে।”
প্রশ্ন তো আরো অনেক আছে। টিভিতে সেলফ রেগুলেটরি মেকানিজম আছে। তা সত্ত্বেও ভারতের বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেল যেভাবে খবর করছে, আলোচনা করছে, তাতে প্রশ্ন উঠেছে, সেই মেকানিজমের কার্যকারিতা কতখানি? সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি কতখানি হওয়া উচিত? ভারতে স্বশাসিত সংস্থার তো অভাব নেই। অভিযোগ, অনেক সংস্থাতে সরকারের অঙ্গুলিহেলন ছাড়া কিছুই হয় না। তাই সামাজিক মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সরকারের হাতে থাকলে সেখানেও বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।