বিশ্বজুড়ে এখনো নিত্যনতুন ডিজাইন, রং ও বিভিন্ন ধরনের কাপড়ের পোশাক পরেই অভ্যস্ত মানুষ। আর এ খাতে মানুষের কর্মসংস্থানও ব্যাপক। এতসব কিছু ছাপিয়ে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে পিক্সেল ও প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে তৈরি হওয়া ডিজিটাল পোশাক। বাস্তবের শার্ট, প্যান্ট, টপস, টুপি, জুতাসহ সব ধরনের পরিধেয় বানানো যায় এ প্ল্যাটফরমে। অগমেন্টেড রিয়েলিটির (এআর) মাধ্যমে এ পোশাক পরে থাকেন গ্রাহকরা। মজার বিষয় হচ্ছে ডিজিটাল কাপর দেখতে আসল জামা-কাপড়ের মতোই। ডিজিটাল পোশাক নিয়ে লিখেছেন- সাইফ আহমাদ
নানারকম ডিজাইনের পোশাক পরে দাঁড়িয়ে আছে বিভিন্ন বয়সি নারী-পুরুষ। অথবা রেস্টুরেন্টে জমকালো পোশাক পরে আপনার পাশে বসে কফি খাচ্ছে দেখে মনে হতে পারে কোনো ব্র্যান্ডের মডেল, কিন্তু আদতে সবার গায়েই ডিজিটাল পোশাক।
ডিজিটাল পোশাক কী
ডিজিটাল ফ্যাশন হল কম্পিউটার প্রযুক্তি এবং 3D সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে তৈরি পোশাকের ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা।
ডিজিটাল এ পোশাক এমনি পরিধেয় যা ধরা বা ছোঁয়া যায় না। দেখতে হুবহু বাস্তবের জামা-কাপড়ের মতো। কোনোভাবেই দূর থেকে এটিকে আলাদা করা যাবে না। তবে এ পোশাকে কল্পনার রঙে রাঙানো যায় নিজেকে সাজানো যায় মন যেভাবে চায়। এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সুতা কিংবা কাপড়ের পরিবর্তে পিক্সেল ও প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে তৈরি হয় ডিজিটাল ক্লথ বা ডিজিটাল পোশাক। বাস্তবের শার্ট, প্যান্ট, টপস, টুপি, জুতাসহ সব ধরনের পরিধেয় বানানো যায় এ প্ল্যাটফরমে। অগমেন্টেড রিয়েলিটির মাধ্যমে এ পোশাক পরে থাকেন। বিগত কয়েক বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফরমগুলোর মাধ্যমে লোকজন গায়ে চড়াচ্ছেন ডিজিটাল কাপর। অবশ্য এতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে মেটাভার্স। ফেসবুকের ভবিষ্যৎ পৃথিবী নিয়ে পরিকল্পনার সাম্প্রতিক ঘোষণা যেখানে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট, এআর চশমা, স্মার্টফোন, ব্যক্তিগত কম্পিউটারের মতো ডিভাইস দিয়ে কল্পিত থ্রিডি ভার্চুয়াল পরিবেশ থাকবে।
ডিজিটাল পোশাকে আগ্রহের কারণ
ডিজিটাল কাপর কেনার বিষয়টি অদ্ভুত মনে হতে পারে, তবে এটি পরা সহজ এবং সাধারণ পোশাকের চেয়ে দামও কম। এছাড়া বাস্তবে জামা-কাপড় পরার ক্ষেত্রে সমাজ আরোপিত যে নীতি-নৈতিকতার বিষয় আছে, এ পোশাকে তা নেই। সাধারণত কোনো জামা কিনতে গেলে সেটি শরীরের সঙ্গে খাপ খাবে কি না, ছবিতে কেমন দেখাবে বা এ ধরনের পোশাক কেনা কতটা নৈতিক হবে, এমন অনেক দিক নিয়ে ভাবতে হয়। ডিজিটাল পোশাকের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা নেই। ডিজিটাল কাপরের আরেকটি উপকারিতা হলো এগুলো তৈরির উদ্যোগ নিতে বাস্তব জামা-কাপড়ের মতো খুব বেশি বিনিয়োগ লাগে না। ফলে অনেক ডিজাইনারই এ খাতে অপেক্ষাকৃত কম অর্থ খাটিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন।
ডিজিটাল পোশাকই তবে ভবিষ্যৎ
ডিজিটাল বিপ্লবের এ সময়ে ডিজিটালের সঙ্গে বাস্তবতা ব্যাপকভাবে মিশে যাচ্ছে। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাস্তবের মতো অনুভূতি দেওয়া অনেক ধরনের ডিজিটাল ক্লথ বানাতে মনোযোগী হচ্ছেন ডিজাইনাররা। যার ফলে বাস্তব হয়ে উঠছে ডিজিটাল ফ্যাশন। ডিজিটাল জগতে লোকজন চাইলেই পছন্দের কোনো পোশাক পরতে পারবে, কিন্তু সে পোশাকগুলো বাস্তবে তৈরি করতে হবে না। গত বছরের আগস্টে যাত্রা শুরু করে ড্রেসেক্স। এ কোম্পানি নিজস্ব ডিজাইনের পাশাপাশি অন্যদের তৈরি ডিজিটাল পোশাকও বিক্রি করছে।
যেভাবে কাজ করে
অগমেন্টেড রিয়ালিটির মাধ্যমে ড্রেসএক্সের গ্রাহকরা ডিজিটাল পোশাক পরতে পারেন। এ ধরনের পোশাক কিনতে চাইলে গ্রাহক শুরুতে ওয়েবসাইট বা অ্যাপে গিয়ে নিজেদের ছবি আপলোড করেন। এরপর ডিজিটাল ক্লথ পরিয়ে দেহের মাপ মতো এডিট করে সে ছবি এক থেকে দুই দিনের মধ্যে গ্রাহকের কাছে পাঠানো হয়। ডিজিটাল পোশাকের ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার উপযোগী করা থাকে। ড্রেসএক্সের সহপ্রতিষ্ঠাতা নাটালিয়া মডেনোভা বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য প্রত্যেককে তাদের ডিজিটাল কাপর সম্ভার দেওয়া।’
সৌদির ভবিষ্যৎ শহর : ট্রেন-বাস সবই থাকবে, দেখা যাবে না কিছুই!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।