কর্মস্থলের কাজ, বাজারসদাই, খেলা কিংবা খাবার অর্ডার—অনেক কিছুই এখন অনলাইনভিত্তিক হয়ে গেছে। অনলাইননির্ভর এসব কাজ করার জন্য বেড়েছে ক্লাউডভিত্তিক সেবা আর অ্যাপের ব্যবহার। আবার এসব লক্ষ্য করে সাইবার অপরাধীরাও বিভিন্ন কৌশলে হ্যাকিং, সাইবার হামলা বা প্রতারণা করছে। বাস্তব জগতের মতো অনলাইন পরিসরেও এখন নিরাপদ থাকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই ডিজিটাল জগতে সাবধানতা অবলম্বন করে চলতে হবে।
অনলাইনে বাড়তি তথ্য না দেওয়া
বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ঢুকতে বা বিভিন্ন অনলাইন সেবা নেওয়ার জন্য অনেক তথ্য দিতে হয়। এসব তথ্য দেওয়ার সময় সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজনের বাইরে বাড়তি কোনো তথ্য দেওয়া উচিত নয়। জন্ম তারিখ ও ঠিকানা—এ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ, তখন তৃতীয় পক্ষের কোনো পার্টি সেবায় আপনার তথ্য চলে যাবে।
ওয়াই-ফাই ব্যবহারে সতর্ক থাকা
অনলাইনে সুরক্ষিত থাকতে তারহীন ওয়াই-ফাই নেওয়ার্ক ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। গণ ওয়াই-ফাই ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ এবং ব্যক্তিগত তথ্য বিনিময়ে সতর্ক থাকতে হবে। ভ্রমণের সময় যন্ত্রের ওয়াই-ফাই এবং ব্লুটুথ–সংযোগ বন্ধ করে রাখতে হবে।
ক্লাউডে সংবেদনশীল তথ্য জমা না রাখা
ক্লাউড চালু হওয়ার ফলে প্রয়োজনীয় এবং ব্যক্তিগত নানা তথ্য এখানে ইন্টারনেটের এই ভান্ডারে জমা রাখা হয়। তবে সংবেদনশীল তথ্য ক্লাউডে জমা রাখার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, কোনো কারণে সাইবার অপরাধীরা ক্লাউডে প্রবেশ করলে এসব তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি তৈরি হবে।
ফিশিং ইমেইল থেকে সাবধান!
ফিশিং ইমেইল সাইবার অপরাধীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এ ধরনের ইমেইলে আপনার কাছে বিভিন্ন প্রলোভনমূলক বার্তা পাঠানো হয়, যার মাধ্যমে তারা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে চায়। ব্যাংক বা সরকারি সংস্থা সাধারণত ইমেইলের মাধ্যমে আপনাকে আপনার তথ্য চাওয়ার জন্য চাপ দেয় না। তাই কোনো সন্দেহজনক লিংক বা ইমেইল খোলার আগে সতর্ক থাকুন।
সফটওয়্যার আপডেট নিরাপত্তার প্রথম রক্ষক
সফটওয়্যার আপডেট না করার ফলে অনেক সময় সাইবার হামলাকারীরা আপনার ডিভাইসে প্রবেশের সুযোগ পেয়ে যায়। এটি প্রতিরোধ করার জন্য আপনার ডিভাইসের সফটওয়্যার নিয়মিত আপডেট রাখা জরুরি। আপনার ফোন বা কম্পিউটারে যদি কোনো নিরাপত্তা সমস্যা থাকে, তবে নির্মাতা কোম্পানি আপডেটের মাধ্যমে তা ঠিক করে দেয়। নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট থাকার কারণে আপনি আরও নিরাপদ থাকবেন।
সাইবার নিরাপত্তায় সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সচেতনতা। সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক শিক্ষা এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব। নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রক্রিয়াজাত করা এবং অন্যদেরও সচেতন করা কেবল আপনিই নয়, আপনার চারপাশের সবাইকেই সাইবার অপরাধ থেকে রক্ষা করবে।
একটি নিরাপদ ই-মেইল পরিষেবা ব্যবহার করা
ব্যবহারকারীদের অনেক সংবেদনশীল তথ্য থাকে ই-মেইলে। যদিও কিছু ই-মেইল পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন সুরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে থাকে, তবে বেশির ভাগ ই-মেইল পরিষেবাগুলো কোনো প্রকার এনক্রিপশন সুবিধা দেয় না। এজন্য একটি নিরাপদ ই-মেইল পরিষেবা ব্যবহার করা জরুরি। প্রোটন মেইল ও টুটা মেইল এমনি সুরক্ষিত ই-মেইল পরিষেবা। যেখানে পার্সোনাল প্ল্যান ব্যবহার বিনামূল্যে এনক্রিপ্টেড ই-মেইল পরিষেবা পাওয়া যাবে।
নির্ভরযোগ্য ভিপিএন পরিষেবা ব্যবহার করা
নিষেধাজ্ঞায় থাকা ওয়েবসাইটে প্রবেশ ও আইপি অ্যাড্রেস গোপন রাখার ক্ষেত্রে ভিপিএন বেশ কার্যকর। মূলত অনলাইনে শেয়ার করা তথ্যকে সুরক্ষিত করা ছাড়াও ভিপিএনের বেশ কয়েকটি সুবিধা রয়েছে। এ পরিষেবায় প্রায়ই কিল সুইচের মতো সুরক্ষা ফিচার থাকে, যা ভিপিএন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও ব্যবহারকারীর পরিচয় সুরক্ষিত রাখে। এছাড়া ভিপিএন পরিষেবাগুলো জিও-ব্লকিং কনটেন্ট দেখার সুযোগ করে দেয়ার পাশাপাশি কেনাকাটা ও ফ্লাইট বুকিংয়ের ক্ষেত্রেও অর্থ সাশ্রয়ে সাহায্য করতে পারে। বাজারে থাকা বর্তমানে কয়েকটি সেরা ভিপিএন হলো এক্সপ্রেসভিপিএন, নর্ডভিপিএন ও সার্ফশার্ক ভিপিএন। তবে পেইড ভিপিএন পরিষেবা বদলে প্রোটন ভিপিএনের ফ্রি ভার্সনও ব্যবহার করা যেতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।