নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর ডালিয়ায় বিকাল ৩টায় বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে তিস্তায় পানি। পানি বন্দি হয়ে রয়েছেন ডিমলা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের দশ হাজার মানুষ। ডুবে গেছে নদী বেষ্টিত আশপাশ এলাকা ও চরসমূহ। মানুষ বাড়ি ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিতে শুরু করছেন উঁচু স্থানে।
এদিকে শনিবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে বন্যার্ত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ছাতুনামা চরে শুকনো খাবার বিতরণ করেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার।
এ সময় জেলা প্রশাসক(ভারপ্রাপ্ত) শাহিনুর আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার, এসি ল্যান্ড নুরে আলম সিদ্দিকী, জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা এস এ হায়াত, ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান জানান, দুটি ওয়ার্ডের অন্তত সাত’শ মানুষ পানিবন্দি হয়ে রয়েছেন। তারা নিরাপদ আশ্রয়ে আসার চেষ্টা করছেন। এছাড়া ৪০জনের মত ঘর বাড়ি ভেঙ্গে নিয়ে এসেছেন উঁচু স্থানে।
খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন জানান, শুক্রবার রাতে দোহল পাড়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণে ‘রিং বাঁধ’ বালুর বস্তা দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কার করা হয়।
এছাড়া শনিবার কিছামত ছাতনাই চরে খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং জার ও পানি বাহিত রোগের ওষুধ সরবরাহ করা হয় এলাকাবাসীর মধ্যে।
পাউবো সূত্র জানায়, পানি বৃদ্ধির ফলে দুটি বাঁধ প্লাবিত হয়েছে। ওই এলাকা পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বাস্তবায়নে প্রস্তুত রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পাউবো ডালিয়া বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়ার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
সবাই এখন কাজ করছেন তিস্তাসহ আশপাশ এলাকার পরিবেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে।
এদিকে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে জেলা পর্যায়ে এবং উপজেলা পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে সহকারী কমিশনার জাহাঙ্গীর হোসাইন ও ডিমলা উপজেলায় সহকারী কমিশনার নুরে আলম নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) শাহিনুর আলম বলেন, পানিবন্দি দুই’শ জনের মাঝে শনিবার দুপুরে সচিব মহোদয়ের উপস্থিতিতে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। তিনি বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ঢাকায় গিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত দেবেন।
পাউবো বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পুর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি শনিবার সকাল ৬টায় বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় ৪৮ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় ৪৬ সেন্টিমিটার এবং বেলা তিনটায় ৩৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা এস এ হায়াত জানান, বন্যা কবলিত এলাকার মানুষদের জন্য ১০০ মেট্রিক টন চাল, ১৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছেন নতুন করে।
এ পর্যন্ত ডিমলা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ২৬৮৯টি পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের চিকিৎসা সেবা প্রদানে সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার আবু হেনা মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।