জুমবাংলা ডেস্ক : নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম বেঁধে দিলেও সেই দামে পণ্য মিলছে না বাজারে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সবখানেই নির্ধারিত দামের চেয়ে বাড়তি দামে পণ্যগুলো বিক্রি হচ্ছিল। বেশির ভাগ দোকানেই টাঙানো হয়নি হালনাগাদ মূল্যতালিকা। কিছু দোকানে মূল্যতালিকা থাকলেও নিজেদের ইচ্ছেমতো দামেই বিক্রি করা হয় সব পণ্য।
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কয়েকটি বাজারে অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করেছে। তবে অভিযানের পর ব্যবসায়ীরা আবার আগের দামেই পণ্য বিক্রি করেছেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি আলুর সর্বোচ্চ খুচরা দাম ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা এবং ফার্মের মুরগির প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে। তবে গতকাল বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আলু প্রতি কেজি ৪২-৫০ টাকা, পেঁয়াজ ৭০-৮০ টাকা এবং ডিম ১৩-১৪ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
পণ্যমূল্যের ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম কারওয়ান বাজার। এই বাজারের কিছু দোকানে ডিম ও তেল সরকার-নির্ধারিত দামে বিক্রি হতে দেখা যায়। তবে পেঁয়াজ ও আলুর দাম সব জায়গায়ই নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি।
সরকার দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও বাজারে তার প্রভাব দেখতে না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।
রাজধানীর কচুক্ষেত বাজারে আবদুস সামাদ নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘টিভিতে দেখলাম মন্ত্রী বলছেন, শক্তভাবে সব মনিটরিং করা হবে। বাজারে এসে তো মনিটরিংয়ের ম-ও দেখতে পাচ্ছি না।’
গতকাল সারা দেশে অভিযান পরিচালনা করে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের তিনটি টিম রাজধানীর মিরপুর শাহ আলী মার্কেট, মিরপুর-১ বাজার, কারওয়ান বাজার, শান্তিনগর বাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার, যাত্রাবাড়ী ও কুতুবখালী বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান চালানো হয় রাজধানীর বাইরেও। অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সারা দেশে ৪১টি টিম ৫৩টি বাজারে অভিযানের মাধ্যমে ৯০টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ২ লাখ ৩৭ হাজার টাকা জরিমানা করে।
অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রোজিনা সুলতানা কারওয়ান বাজারে সাংবাদিকদের বলেন, দাম নিয়ন্ত্রণে দেশব্যাপী বাজারে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
তবে বাজারে এই অভিযানের কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। বিকেলে কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামেই বিক্রি হয়েছে আলু ও পেঁয়াজ। নির্দেশনা অগ্রাহ্য করে বেশি দামে আলু বিক্রির কারণ জানতে চাইলে এক বিক্রেতা বলেন, ‘সরকারের দামের চেয়ে ৫-৬ টাকা বেশি রাখতেছি। এইটুক হইল আমার বাঁইচা থাকার খরচ।’
তবে কয়েকজন বিক্রেতা জানান, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের প্রভাব কাল রবিবার থেকে বাজারে পড়তে শুরু করবে। অনেকে আগে থেকেই পণ্য কিনে রেখেছেন। তাই তাঁরা কেনা দামের চেয়ে কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারছেন না।
অন্যান্য পণ্যের দাম
গতকাল শান্তিনগর, কারওয়ান বাজার, রামপুরা, কচুক্ষেত, মোহাম্মদপুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন ৪০-৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৪০-৫০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০-১২০ টাকা, টমেটো ১০০-১৩০ টাকা, শসা ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। রসুন (চীনা) ২০০-২২০ টাকা, আদা (মিয়ানমারের) ২৮০-৩০০ টাকা কেজি। ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯৫ টাকা ধরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।