যেকোনো জীবের বংশবৃদ্ধি করতে হলে প্রোটিন তৈরি করতে হয়। প্রোটিন তৈরি করতে হলে দরকার কাঁচামাল হিসেবে অ্যামিনো অ্যাসিড, নির্দেশনা বা নকশা হিসেবে জিনোম, নকশাটি বাস্তবায়ন করার কারখানা হিসেবে রাইবোজোম এবং কারখানার কর্মী হিসেবে বিভিন্ন প্রকার অ্যানজাইম ও বিশেষ আরএনএ।
এগুলোর মধ্যে ভাইরাসের শুধু জিনোম আছে আর কিছু নেই। তাই বংশবৃদ্ধি করতে হলে সে কোনো একটি কোষের ভেতর ঢুকে সেই কোষের অ্যামিনো অ্যাসিড, রাইবোজোম ইত্যাদি ব্যবহার করে নিজের জিনোমের নকশামাফিক প্রোটিন বানায়। এরপর সেগুলোকে জোড়াতালি দিয়ে ভাইরাসকুলের নতুন সদস্যরা জন্মায়। ডেঙ্গু ভাইরাসও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে যেকোনো ভাইরাস চাইলেই যেকোনো কোষে ঢুকে পড়তে পারে না।
ভাইরাসের এনভেলোপ (কিংবা তা না থাকলে ক্যাপসিড) এমন কিছু প্রোটিন ধারণ করে, যা একপ্রকারের চাবি হিসেবে কাজ করে। আর কোষের ঝিল্লির বাইরের দিকেও থাকে বিভিন্ন প্রকারের প্রোটিন। সেগুলো কাজ করে তালা হিসেবে। যে চাবির সঙ্গে যে তালা খাপ খায়, সেই চাবি দিয়ে তো সেই তালাই খুলবে, অন্য তালা নয়।
কোনো ভাইরাসের বাইরের স্তরের প্রোটিন যে কোষের বাইরের দিকের প্রোটিনের সঙ্গে সুনির্দিষ্টভাবে বন্ধন তৈরি করতে পারে, সেই কোষ হলো সেই ভাইরাসের টার্গেট। ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে টার্গেট কোষ হলো আমাদের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনোসাইট, ম্যাক্রোফেজ ও ডেনড্রাইটিক কোষ।
পরিণত ডেঙ্গু ভাইরাসের এনভেলোপে থাকা ই এবং এম প্রোটিন এসব কোষে তার প্রবেশে সহায়তা করে। উল্লেখ্য, অপরিণত ভাইরাসের বেলায় এম প্রোটিনের জায়গায় তার বিকৃত রূপ প্রি-এম প্রোটিন থাকে। কোষের ভেতরে ভাইরাস যখন বংশবৃদ্ধি করতে থাকে, তখন এমন কিছু প্রোটিন তৈরি হয়, যেগুলো শেষ পর্যন্ত ভাইরাসের কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত হয় না। তবে সেগুলো ছাড়া ভাইরাস বানানোও যায় না।
অনেকটা ছাদ ঢালাই দেওয়ার সময় ব্যবহৃত কাঠের পাটাতনগুলোর মতো। সেগুলো ঢালাই জমে যাওয়ার পর খুলে ফেলা হয়। এসব প্রোটিনকে বলে নন-স্ট্রাকচারাল প্রোটিন বা সংক্ষেপে এনএস। ডেঙ্গু ভাইরাসের এ রকম সাতটি এনএস থাকে (১ থেকে ৭) যার মধ্যে এনএস১ সবচেয়ে নিশ্চয়তার সঙ্গে শনাক্ত করা যায় বলে জ্বরের প্রথম দিন থেকে এটি রোগনির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।