নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ কাওসার আমীর আলীর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া নিজ জেলা বগুড়ার বিএনপি-জামায়াত পন্থি অফিসারদের নিয়ে ডেসকোতে একটি বড় সিন্ডিকেট গড়ে তোলারও অভিযোগ উঠছে তার বিরুদ্ধে। এই সিন্ডিকেটে রয়েছেন ডেসকোর প্রধান প্রকৌশলী (পিএন্ডডি) জুলফিকার তাহমিদ, প্রধান প্রকৌশলী (আইসিটি) শামীম আহসান চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী (উন্নয়ন) মোঃ শরিফুল ইসলাম এবং নির্বাহী প্রকৌশলী (এমডির স্টাফ অফিসার)।
ডেসকোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায, এমডি কাওসার আমীর আলী এবং তার সিন্ডিকেটের দুর্নীতি ও লুটপাটের ভয়াবহতার কারণে ডেসকোর মতো অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানটি এখন প্রায় ধ্বংসের পথে। ডেসকো প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম (২০২২-২৩ অর্থ বছর) লস প্রায় ৫৭০ কোটি টাকা এবং প্রতি মাসে এখন ডেসকোর লস হচ্ছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা।
তারা জানান, এমডি পদে চাকরির চার বছরে ডেসকো থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন কাওসার আমীর আলী। ঢাকায় তার রয়েছে একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাট। ধানমন্ডির সিকদার কনকর্ড টাওয়ারে রয়েছে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট যেখানে তিনি নিজেই থাকেন। দুবাইতেও রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট। কাওসার আমীর আলী ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচল নতুন শহরের পাশে ‘প্রবাসী পল্লি আবাসন প্রকল্পে’ রয়েছে ৫০ কোটি টাকা মূল্যের প্লট।
প্রকৌশলী কাওসার আমীর আলী ডেসকোতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে ২০২০ সালের ২৯ মার্চ যোগদান করেন। চুক্তিভিত্তিক চাকুরির মেয়াদ রয়েছে আগামী মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত। চাকরির মেয়াদ আর বেশি না থাকায় মরিয়া হয়ে উঠেছে তার নেতৃত্বাধীন সিন্ডিকেট। ডেসকোর টেন্ডার থেকে শুরু করে সকল কাজ নিয়ন্ত্রণ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই সিন্ডিকেট।
ইতোমধ্যে ডেসকোর এমডির বিরুদ্ধে টেন্ডারে অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য ও বিভিন্ন প্রকল্পে লুটপাটের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক থেকে পাঠানো এক চিঠিতে ডেসকো থেকে ওরাকল লাইসেন্স ক্রয়, নবায়ন, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)’র প্রধান কার্যালয় ভবন নির্মান প্রকল্পের, একটি লটে ২ লক্ষ মিটার ক্রয়য়ের, মাস্টার ইনফর্মেশন সেন্টার (এএমআইসি) প্রকল্পের অনুমোদিত প্রাক্কলন (estimate), বাজেট বরাদ্দ, টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি, টেন্ডার খোলা, আর্থিক ও কারিগরি কমিটির মূল্যায়ন প্রতিবেদন, NOA, চুক্তি, কাজ বুঝিয়ে দেওয়া ও নেওয়া সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র, বিল, টেভার খোলা, আর্থিক-কারিগরি কমিটির সদস্যদের নাম-ঠিকানা, পত্র যোগাযোগ, নোটসিটসহ সংশ্লিষ্ট নথির ফটোকপিসহ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র চাওয়া হয়েছে।
ডেসকোর নিয়ম অনুযায়ী কারও বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত বা সরকারের কোন সংস্থা থেকে তদন্ত চলাকালে ঐ কর্মকর্তা কোনও গ্রাচুয়িটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ড পাইবেন না কিন্তু কাওসার আমীর আলী দুদকের তদন্ত গোপন করে সার্ভিস বেনিফিট নেওয়ার জন্য ডেসকোর কর্মকর্তাদের চাপ প্রয়োগ করে গ্রাচুয়িটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ড নেওয়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে জানান কর্মকর্তারা।
ডেসকোর এমডি মো: কাওসার আমীর আলী বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় একটি ট্রেনিংয়ে রয়েছেন। তিনি এ মাসের ২৫ তারিখ ট্রেনিং শেষে দেশে ফিরবেন। বিদেশে ট্রেনিংয়ে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
আইএমএফের হিসাবে এখন দেশের রিজার্ভ কত, জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।