জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই, কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস এবং মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মোহাম্মদ হাশিম অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
বুধবার (২৮ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিন বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পৃথক বৈঠকে দূতরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন। এ ছাড়া ইউএনডিপির একটি প্রতিনিধি দলও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে। বৈঠকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে পুনর্গঠনে সহায়তা করার জন্য কানাডাকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।
প্রফেসর ইউনূস সে দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদ এবং উন্নয়ন সংস্থাসহ কানাডার সাথে তার তার দীর্ঘ সম্পর্কের কথা স্মরণ করে বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে তার সরকারের কানাডার সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বলেন, তার গল্প কানাডার স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের বড় বিনিয়োগ দরকার, অন্তর্বর্তী সরকার উত্তরাধিকারসূত্রে একটি অর্থনীতি পেয়েছে, যেটি বিপুল পরিমাণ ঋণের ভারে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত।
তিনি বলেন, আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হল অর্থনীতি ঠিক করা। সরকার পূর্ববর্তী শাসনামলে ভেঙেপড়া গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকেও পুনরুদ্ধার করছে এবং শাসনে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা আনছে।
কানাডার হাইকমিশনার বলেন, তার সরকার প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। কানাডা বাংলাদেশে সার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করতে আগ্রহী। উত্তর আমেরিকার দেশ থেকে বাণিজ্য পছন্দ অব্যাহত রাখার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে অবশ্যই কারখানায় শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে পোশাক ক্রয়কারী ব্র্যান্ডের উদ্বেগের সমাধানের জন্য তার সরকার ‘আইএলও (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) মানদণ্ডের সাথে সমানভাবে’ শ্রমিকদের অধিকার বজায় রাখবে।
মিজ নিকোলস বলেন, কানাডা জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার বিচার ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনকে সহায়তা করতেও আগ্রহী। প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজার ক্যাম্প থেকে কিছু রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে উপচে পড়া ভিড় কমানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, তার সরকার রোহিঙ্গা তরুণদের আশা জাগানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূস বাংলাদেশকে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় জাতিগোষ্ঠীর (আসিয়ান) সদস্য হতে মালয়েশিয়ার সমর্থন চেয়েছেন। বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মো. হাশিম তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করলে তিনি এ সহায়তা কামনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ আসিয়ান ও সার্কের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি হতে পারে। মিসেস হাশিম বলেন, কুয়ালালামপুর আসিয়ানের পরবর্তী চেয়ার হতে যাচ্ছে এবং তিনি আসিয়ান সদস্যপদসংক্রান্ত বিষয়ে মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষের কাছে অধ্যাপক ইউনূসের বার্তা পৌঁছে দেবেন। তিনি বলেন, মালয়েশিয়া অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করবে। আমরা আপনার উপর বিশ্বাস করি। আমরা আপনাকে শুভ কামনা রইলো।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এসময় প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদসহ মালয়েশিয়ার নেতাদের সঙ্গে তার বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।