ঢাকাইয়া সিনেমার এক সময়ের আলোচিত নায়িকা সাহিনা আকতার বনশ্রী আর নেই। কয়েক দিন ধরে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে মাদারীপুরের শিবচর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই চিত্রনায়িকা। খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার ভগ্নিপতি আবুল বাসার।
আবুল বাসার জানান, বনশ্রীর একমাত্র ছেলে ঢাকার মোহাম্মদপুরে বসবাস করেন। বর্তমানে তিনি শিবচরের পথে রয়েছেন। এরপর তার দাফনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আপাতত মরদেহ নেয়া হচ্ছে শিবচরের কুমিরপাড় এলাকায় নানিবাড়িতে।
১৯৪৪ সালের ২৩ আগস্ট মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার শিকদারকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বনশ্রী। মাত্র সাত বছর বয়সে পরিবারসহ ঢাকায় পাড়ি জমান তিনি। ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃতিমনা বনশ্রী বিটিভিতে আবৃত্তি করতেন, ছিলেন উদীচী গণসাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্য। অভিনয় শেখেন সুবচন নাট্য সংসদে।
১৯৯৪ সালে ইলিয়াস কাঞ্চনের বিপরীতে ‘সোহরাব-রুস্তম’ সিনেমার মাধ্যমে রুপালি পর্দায় অভিষেক হয় তার। ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে সফল হয় এবং বনশ্রী পরিচিতি পান নায়িকা হিসেবে। পরবর্তী সময়ে নায়ক মান্না, রুবেল ও আমিন খানের সঙ্গে কাজ করেন তিনি। উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘মহা ভূমিকম্প’, ‘নেশা’, ‘প্রেম বিসর্জন’ ও ‘ভাগ্যের পরিহাস’।
তবে চলচ্চিত্র থেকে সরে আসার পর জীবনে নেমে আসে আর্থিক অনটন। একসময় ফুল বিক্রি থেকে শুরু করে বাসে হকারি পর্যন্ত করতে হয়েছে সংসার চালাতে। শেষ বয়সে আশ্রয় মেলে শিবচরের আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরে। সরকারি সহায়তার টাকায় চলছিল তার দিনযাপন।
জনপ্রিয়তার শীর্ষে থেকেও জীবনের শেষভাগে দারিদ্র্য ও অবহেলার শিকার হন বনশ্রী। অবসান হলো ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের উজ্জ্বল নক্ষত্রের জীবনের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।