জুমবাংলা ডেস্ক : এক সময় ঢাকায় বৃষ্টির পানি সরার মতো ৭৭টি খাল ও লেক ছিল। এখন বেশিরভাগই দখল হয়ে গেছে। দখল হওয়া খালের মধ্যে মাত্র ১৪টি খনন করলেই অবিরাম জলাবদ্ধতা সমস্যার প্রায় ৮০ শতাংশ সমাধান হতে পারে। সে লক্ষ্যেই কাজ শুরু করেছে সরকার। যেসব খাল এখন উদ্ধার করা সম্ভব, সেগুলো দিয়ে ‘ব্লু নেটওয়ার্ক’ করার পরিকল্পনা হয়েছে। খালগুলো সংস্কার করে দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলা হবে। নগরে বৃষ্টি হলে দ্রুত পানি চলে যাবে এসব খালে। খালের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ করে নৌপথ হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী করলে সড়কে যানবাহনের চাপ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। খাল উদ্ধারে স্থানীয় বাসিন্দাদের সম্পৃক্ত করে খালকেন্দ্রিক আয়-রোজগারের পথও সুগম হবে।
বুধবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে পানি ভবনে ‘ব্লু নেটওয়ার্ক অ্যারাউন্ড ঢাকা সিটি’ শীর্ষক সেমিনারে তিন উপদেষ্টা ও বিশেষজ্ঞরা এমন পরিকল্পনার কথা জানান। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, রাজউক, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে যুক্ত করে দ্রুত খাল ও নদী দখলমুক্ত করার কর্মসূচি গ্রহণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো নভেম্বরের শুরুতে দুই থেকে তিন দিনের একটি কর্মশালা করবে। কর্মশালা থেকে কোন কোন খালকে কীভাবে উদ্ধার করা যায়– সে বিষয়ে পরিকল্পনা ও বাজেট তৈরি হবে। আগামীতে যেই আসুক এই রোডম্যাপ অনুযায়ী কাজ করবে। নভেম্বর মাসে যুব দিবসে যুবকদের যুক্ত করে দুটি খাল পরিষ্কার করবো। ডিসেম্বরে দুটি এবং ফেব্রুয়ারিতেও খাল পরিষ্কার করবো। এভাবে ধীরে ধীরে খাল উদ্ধার হবে। এই প্রজন্ম পরিষ্কার কোনো খাল দেখেনি। এখনো হাতিরঝিলের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় নাকে রুমাল দিয়ে যেতে হয়। যুব দিবসে যখন দেখবে যুবকরা খাল পরিষ্কার করছে, তখন তারা বাকি খালগুলো পরিষ্কারেও উদ্যোগ নেবে।
সেমিনারে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেন, বিগত বছরগুলোতে নদীর আশপাশের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের নামে গরিবের বাড়িঘর ভাঙা হয়েছে। অথচ এসব বাড়ির পাশেই বিশাল ভবন এখনও বীরদর্পে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা বিশেষজ্ঞদের সমন্বয় করে কমিটি করেছি। আমাদের প্রথম কাজ হবে তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে সমস্যা চিহ্নিত করা। তারপর সমাধানের পথ খুঁজে বের করা।
শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান জানান, অবৈধ দখলদারদের থেকে যদি খাল-নদী-নালা-জলাশয় উদ্ধার করতে না পারি, তাহলে জুলাই-আগস্ট মাসে অভ্যুত্থানের ফলাফল জনগণ দেখতে পাবে না। এজন্য মন্ত্রণালয় থেকে যা করা দরকার তা করবো।
সেমিনারে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি) রাজধানীর ৯টি জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে চলমান সমস্যার সমাধান দিয়েছে।
আরডিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, চিহ্নিত ১৪টি খাল খনন করতে পারলে নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যার ৮০ শতাংশ সমাধান হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।