বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার সাক্ষি থেকে আসামি হওয়া তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি চিকিৎসা নিতে ঢাকা আসছেন বলে জািনেয়েছন তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। শনিবার বিকেল ৪টায় বরগুনা লঞ্চঘাট থেকে এমভি শাহরুখ লঞ্চে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন মিন্নি।
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, দিনকে দিন মিন্নি মানসিক ভারসমস্য হারিয়ে ফেলছে। আমরা মিন্নির আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে মিন্নিকে নিয়ে ঢাকা যাচ্ছি উন্নত চিকিৎসার জন্য। জামিনে কারামুক্ত হওয়ার পর থেকেই আমার মেয়ে মিন্নি শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কারো সঙ্গে কথা বলে না। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করে না। সেই সাথে আমাদের পরবর্তি আইনী লড়াইয়ের জন্য আইনজীবীদের সাথেও পরামর্শ করে আসব।
১৬ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে মিন্নিকে তার বাবার বাড়ি বরগুনা পৌর শহরের নয়াকাটা-মাইঠা এলাকা থেকে পুলিশ লাইনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে একই দিন রাত ৯টায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পরদিন মিন্নিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ১৯ জুলাই মিন্নি বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে একই আদালতে তিনি আবার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধি প্রত্যাহারের আবেদন করেন।
আদালতের বিচারক মূল নথিতে তার আবেদনটি সংযুক্ত করেন। এরপর কয়েক দফা আবেদন জানালেও নিম্ন আদালতে জামিন মেলেনি মিন্নির। পরে একই মামলায় জামিন চেয়ে মিন্নি হাইকোর্টে আবেদন করেন।
১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় পুলিশ। একই সঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ছয় কিশোর অপরাধী শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে রয়েছে।
এছাড়া আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ জামিনে রয়েছেন দুজন।
উল্লেখ্য, ২৬ জুন সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।