জুমবাংলা ডেস্ক: আগামী জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে একই দিনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। খবর ইউএনবি’র।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ দুই সিটিতে ভোটগ্রহণে গতানুগতিক ব্যালট পেপারের পরিবর্তে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে।
নির্বাচন কমিশনার শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা নীতিগতভাবে দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন জানুয়ারিতে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং ডিসেম্বর মাসে তফসিল ঘোষণা করা হবে।’
ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, ‘ইসি ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে দুই সিটির তফসিল ও ২০২০ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে ভোটের আয়োজন করবে।’
তিনি ইউএনবিকে জানান, ‘পুরো নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।’
কমিশন শিগগিরই তফসিল ও ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করবে জানিয়ে ইসি কর্মকর্তা আরও বলেন, ইসি সচিবালয় এ নির্বাচনে বিদ্যমান ভোটার তালিকাই ব্যবহার করবে। দেশের হালনাগাদ ভোটার তালিকা দুই সিটি নির্বাচনের পর প্রকাশ করা হবে।
ইসি সচিবালয় দুটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ পরিচালনার জন্য নির্বাচন কর্মকর্তা- প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের তালিকা করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
কর্মকর্তারা বলেন, ইতিমধ্যে নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রাথমিক প্যানেল তৈরি করার জন্য ঢাকা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এরই মধ্যে দুই সিটির নির্বাচন আয়োজনে ইসিতে ১৮০ দিনের দিনগণনা শুরু হয়েছে। গত নভেম্বরের মাঝামাঝিতে দুই সিটি কপোরেশনকে নির্বাচনের কথা জানানো হয়।
ডিএনসিসি ও ডিএসসিসির জন্য যথাক্রমে ১৪ ও ১৮ নভেম্বরের পর যেকোনো দিন তফসিল ঘোষণার কথা জানিয়েছিল ইসি।
স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ অনুসারে, দেশের যেকোনো সিটি করপোরেশনের নির্বাচন পাঁচ বছর মেয়াদের শেষ ১৮০ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে হবে, যা করপোরেশনের প্রথম সভা আয়োজনের পর থেকে গণনা করা হবে।
ডিএসসিসি ও ডিএনসিসির পাশাপাশি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) সর্বশেষ নির্বাচন ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল এক দিনেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে ডিএনসিসিতে প্রথম বৈঠক ১৪ মে, ডিএসসিসিতে ১৭ মে এবং সিসিসিতে ৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
সে হিসেবে, ডিএসসিসির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের ১৩ মে, ডিএনসিসির ১৬ মে এবং সিসিসি ৫ আগস্ট।
তবে, সিসিসি নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়ে ইসি এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
এদিকে, বিগত নির্বাচনের পরে ঢাকার দুই সিটিতে ৩৬টি নতুন ওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি ডিএসসিসি এবং ডিএনসিসির সীমানাও বাড়ানো হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণে ১৮টি ও ঢাকা উত্তরে ১৮টি নতুন ওয়ার্ড যুক্ত হয়েছে।
ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুর পরে, মেয়র পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ফেব্রুয়ারিতে। এ ছাড়া, একই দিনে ৩৬টি নতুন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
তবে, ফেব্রুয়ারিতে নতুন ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত ৪৮ কাউন্সিলর- সাধারণ ৩৬ এবং সংরক্ষিত আসন থেকে ১২ নারী কাউন্সিলর- আরও বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করতে চান।
কাউন্সিলররা সাধারণত পাঁচ বছর মেয়াদে নির্বাচিত হন, এমন যুক্তি দিয়ে ইসিতে বর্ধিত সময় চেয়ে আবেদনও করেছেন তারা।
এ বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, তাদের দেয়া এ যুক্তি যৌক্তিক নয়। কারণ পাঁচ বছরের মেয়াদটি করপোরেশনের জন্য প্রযোজ্য, আইনটি কোনো মেয়র বা কাউন্সিলরের জন্য নয়।
স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন-২০০৯ এর অনুচ্ছেদ ৬ এর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আইনে বলা হয়েছে করপোরেশন গঠন করে প্রথম সভা আয়োজনের পর থেকে এর মেয়াদ পাঁচ বছর হবে।’
রাজধানী ঢাকার দুটি সিটি করপোরেশনে প্রায় ৫৪ লাখ ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডের আওতায় ৩০ লাখ ৩৬ হাজার এবং ডিএসসিসিতে ৭৫টি ওয়ার্ডের আওতায় ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ভোটার রয়েছে।
দুই সিটির আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা হবে আড়াই হাজার।
ডিএসসিসিতে একটি মেয়র পদ, ৭৫টি কাউন্সিলর পদ এবং ২৫টি সংরক্ষিত আসন (নারীদের জন্য) এবং ডিএনসিসির একটি মেয়র পদ, ৫৪টি কাউন্সিলর পদ এবং ১৮টি সংরক্ষিত আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।