বিনোদন ডেস্ক : সংগীতের কোনো দেশ নেই, জাতিভেদ নেই। সংগীত শাশ্বত; যা সীমানাপ্রাচীরের বাইরে সবার ঊর্ধ্বে ওঠে হৃদয় স্পর্শ করে মানুষের। আর তাইতো কোরিয়ান ফিউশন মিউজিক ব্যান্ড ‘ই-সাং’-এর গান ও মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় বিমোহিত হলেন ঢাকার দর্শকরা।
কোরিয়ান দূতাবাস ও আরটিভির উদ্যোগে শুরু হয় কোরিয়ান কনসার্ট। এই আয়োজনের শুরুতে আরটিভির বাংলার গায়েনের শিল্পীরা গায় বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত, অন্যদিকে কোরিয়ান জাতীয় সংগীত গায় ‘ই সাং’ ব্যান্ডের শিল্পীরা।
বাংলার গায়েনের শিল্পীরা লোক সংগীত পরিবেশন করেন। এরপর মঞ্চে ওঠে সাত সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত কোরিয়ান ফিউশন মিউজিক ব্যান্ড ‘ই সাং’। আধুনিক ফিউশন শৈলীতে তাদের ঐতিহ্যবাহী লোকগান, পপগানসহ বেশ কয়েকটি গান শ্রোতাদের গেয়ে শোনান।
ঐতিহ্যবাহী কোরিয়ান মিউজিক ইনস্ট্রুমেন্ট গেজিয়াম, জাংগু (ড্রাম) এবং তাপেইয়ংসো (বাঁশি), পাশাপাশি বেস গিটার, কিবোর্ড পিয়ানো এবং ড্রামের মতো পশ্চিমা যন্ত্রগুলোও তাদের পারফরম্যান্সের সময় বাজানো হয়। গানের পাশাপাশি শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর পারফরম্যান্সে বিমোহিত হন বাংলাদেশে বসবাসরত কোরিয়ান নাগরিক ও বাংলাদেশের দর্শকরা। হাতিরঝিলের অ্যাম্ফিথিয়েটারের সুরের জাদুতে মাতোয়ারা হন ঢাকার দর্শকরা। ভিন্নধর্মী ও জমকালো গান ও নাচের পরিবেশনায় উচ্ছাস প্রকাশ করে গ্যালারিতে থাকা দর্শকরা।
কনসার্টে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ ধরনের আয়োজন অত্যন্ত প্রশংসার দাবিদার। ভীষণ ভালো লাগছে আমার। কোরিয়ান ব্যান্ড ও তাদের সংস্কৃতির ওপর বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের অনেক আগ্রহ আছে। তাদের উচ্ছ্বাসই বলে দিচ্ছে সেটা। আমি ব্যাক্তিগতভাবে চাই দুই দেশের সংস্কৃতি বিনিময়ে এ ধরনের আয়োজন আরও বেশি করে হোক। সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশে ও ধরনের আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ সময় বেঙ্গল গ্রুপ ও আরটিভির চেয়ারম্যান আলহাজ মোরশেদ আলম এমপি বলেন, দুই দেশের সংস্কৃতির আদান-প্রদানে সমৃদ্ধ হবে তরুণ প্রজন্ম। কোরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। কোরিয়ানরা তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে বরাবরই বিশ্বস্ততার পরিচয় দিয়েছেন। দূতাবাসের সঙ্গে আরটিভির যৌথভাবে এই আয়োজন করতে পেরে আমরা অনেক আনন্দিত। এ ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে দুই দেশের সংস্কৃতির আদান প্রদান হবে।
আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক রহমান জানান, কোরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি, অর্থনৈতিক, কুটনৈতিক ও সংস্কৃতিক সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। আজকের এই কনসার্টের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের শিল্পীরা যেমন কোরিয়ান সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবে, তেমনি বাংলাদেশের শিল্পীদের পরিবেশনায় কোরিয়ান শিল্পীরাও বাংলাদেশের সংগীতের জগত সম্পর্কে জানতে পারবে। দুই দেশের সংস্কৃতি বিনিময় ও নিজেদের সমৃদ্ধ করতেই আজকের এই কনসার্ট।
অনুষ্ঠানে কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জাং কেইন বলেন, আমরা দুবছর আগেই এ ধরনের কনসার্টের আয়োজন করতে চেয়েছি। কোভিড মহামারির কারণে তা সম্ভব হয়নি। কোভিডের সংক্রমণ কমায় দুই বছর পর দূতাবাসের আয়োজনে এটা প্রথম অনুষ্ঠান। কোরিয়ান শিল্পীদের গানের প্রতি বাংলাদেশে অনেক ভক্ত আছে এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত ভালো লাগার বিষয়। দর্শকদের এত উৎসাহ উদ্দীপনা দেখে আমি অভিভূত। আমি আরটিভিকে ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর করে আয়োজনটি বাস্তবায়ন করা জন্য।
অনুষ্ঠানের অন্যতম পৃষ্টপোষক হুন্দাই বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাসসিম দাইয়ান তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, যা অত্যন্ত সুদৃঢ়। দুই দেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য, সংস্কৃতিসহ নানা বিষয়ে দ্বিপাক্ষীয় সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। আমি চাই, এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্পর্ক আরও গুরুত্ব পাবে। কোরিয়ান দূতাবাস ও আরটিভির উদ্যোগে এই কনাসার্টের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমরা অনেক খুশি। ভবিষ্যতে আমাদের পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ ও কোরিয়ার সংস্কৃতির মেলবন্ধন তুলে কোরিয়ার শিল্পীরা ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানটি বাংলায় গেয়ে শোনান। অনুষ্ঠানে চমক সৃষ্টি করেন ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম। প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর নিজেই গেয়ে ওঠেন বাংলা গান। এছাড়াও কোরিয়ান শিল্পীদের দিয়ে বাংলা গান গাওয়ান মেয়র। সূত্র : আরটিভি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।