ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ছয় সন্তানের জন্ম দিয়েছেন প্রিয়া নামের এক প্রসূতি। ওজন কম হওয়ায় তিনটি শিশুকে ঢামেকে এবং অপর তিনটিকে বেসরকারি হাসপাতালের এনআইসিইউতে (নবজাতকের জন্য নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউ) রাখা হয়েছে।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে ঢামেকের ২১২ নম্বর ওয়ার্ডে তিনটি ছেলে ও তিনটি মেয়ে প্রসব করেন ওই নারী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের এক নম্বর ইউনিটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবিদা সুলতানা বলেন, ‘গতরাতে আমাদের এখানে প্রিয়া নামের এক গর্ভবতী নারী ভর্তি হন। পরে আজ সকালে তিনি ছয়টি সন্তানের জন্ম দেন।’
‘তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটি ‘বেবি’ বলা যায় না, এটি আসলে ২৭ সপ্তাহের ইনএবিটেবল অ্যাবরশন।’
তিনি জানান, এর আগে একটি পূর্ণবয়স্ক শিশুর জন্ম দিয়েছিলেন প্রিয়া, কিন্তু সেটি ডেলিভারির সময় মারা যায়। এবার জন্ম নেওয়া ছয় নবজাতকের মধ্যে তিনটির ওজন ৯০০ গ্রামের মতো এবং বাকি তিনটির ওজন প্রায় ৮০০ গ্রাম।
ডা. আবিদা সুলতানা বলেন, ‘শিশুদের মধ্যে তিনটি ঢামেকের এনআইসিইউতে এবং অন্য তিনটি বেসরকারি হাসপাতালের এনআইসিইউতে চিকিৎসাধীন। এখন পর্যন্ত আলহামদুলিল্লাহ সবাই জীবিত আছে, ভালো আছে।’
এই চিকিৎসকের মতে, আমাদের দেশে চিকিৎসকেরা ২৮ সপ্তাহকে ভ্রূণের জীবনোপযোগী বয়স হিসেবে গণ্য করেন। কিন্তু এই নারীর ক্ষেত্রে সেই সময়ের আগেই ডেলিভারি হয়েছে। ফলে শিশুদের প্রাণ-সংকট রয়েছে। তবে ঢামেকের উন্নত এনআইসিইউ সুবিধা থাকায় ভাগ্যে থাকলে তারা বেঁচে যেতেও পারে।
ঢামেকের এই সহযোগী অধ্যাপক জানান, সাধারণত একসঙ্গে ছয়টি শিশু গর্ভে ধারণ করা স্বাভাবিকভাবে সম্ভব নয়। রোগী ‘ফার্টিলিটি ওভুলেশন ইন্ডাকশন ড্রাগ’ সেবন করেছিলেন, যার কারণে একসঙ্গে একাধিক সন্তান ধারণ হয়েছে। এই ওষুধ সেবন করলে নারীদের দুই, তিন, চার, পাঁচ, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে ছয়টি সন্তানধারণও হয়ে থাকে। এ অবস্থায় সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে এমন জটিলতার সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, আমরা যখন ইনফার্টিলিটি বা সন্তান না হওয়ার চিকিৎসা করি, তখন আইভিএ পদ্ধতি ব্যবহার করি। আইভিএফ পদ্ধতিতেও একাধিক ভ্রূণ গঠিত হয়। সাধারণত অতিরিক্ত ভ্রূণ থাকলে কয়েকটি অপসারণ করে বাকিগুলোকে বড় হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়; কিন্তু এই রোগী ওই ধরনের কোনো পদ্ধতি গ্রহণ করেননি। ফলে একসঙ্গে ছয়টি ভ্রূণই বেড়ে উঠেছে এবং জরায়ুর সীমাবদ্ধ ধারণক্ষমতার কারণে আগেভাগেই ডেলিভারি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ইনফার্টিলিটি চিকিৎসা নিলে সন্তান ধারণের (কনসিভ) পর রোগীকে নিয়মিত চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে থাকতে হয়। অনেক সময় রোগীরা প্রথম ধাপ পার হয়ে গেলে আর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন না, তখনই এ ধরনের ঘটনা ঘটে।
প্রিয়ার ননদাই বাবুল বলেন, ‘আমরা নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে এসেছি। প্রিয়া আমার শ্যালক হানিফের স্ত্রী। হানিফ কাতার প্রবাসী। এখানে চিকিৎসকেরা আমাদের খুব ভালো সহযোগিতা করেছেন। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’-ইউএনবি নিউজ
নৌবাহিনী প্রধানের সঙ্গে মালদ্বীপ ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স প্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।