প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটের তফসিল ঘোষণা করবেন আজ বৃহস্পতিবার। তবে তফসিল ঘোষণা হলেই যে সেটা আর পরিবর্তন করা যাবে না, তেমন কোনো বিধান নেই। পরিস্থিতির প্রয়োজনে পুনঃ তফসিলের রীতি বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাসে নতুন কিছু নয়।

এর আগে ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফের কমিশন পুনঃ ফসিল করে নির্বাচনের সময় এগিয়ে আনে। ১৯৯০ সালের ১৫ ডিসেম্বর ওই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১৯৯১ সালের ২ মার্চ। কিন্তু ওই দিন শবেবরাত হওয়ার কারণে পুনঃ তফসিল করে ভোটের তারিখ এগিয়ে এনে নির্ধারণ করা হয় ১৭ ফেব্রুয়ারি। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেরও পুনঃ তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল।
কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর ভোটের দিন চূড়ান্ত করে তফসিল ঘোষণা করে। কিন্তু জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, যুক্তফ্রন্টসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুনঃ তফসিলের মধ্য দিয়ে ভোট সাত দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়। ২৩ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৩০ ডিসেম্বর। বিতর্কিত ওই ভোট ‘রাতের ভোট’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর দশম জাতীয় সংসদের তফসিল ঘোষণা করে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কমিশন। এই নির্বাচনে প্রায় অর্ধেক আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। বাকি আসনগুলোতে বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলনের মধ্যেই কমসংখ্যক ভোটারের উপস্থিতিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেসময় তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটগ্রহণের দিন পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণ হারায় শতাধিক মানুষ। তবে ঘোষিত তফসিল থেকে সরে আসেনি তৎকালীন কমিশন।
২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি নবম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে বিচারপতি এম এ আজিজের নেতৃত্বাধীন কমিশন। কিন্তু ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারির পর ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে। এরপর ২১ জানুয়ারি ইসির তৎকালীন জনসংযোগ কর্মকর্তা এক গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সেই ভোটের সব কার্যক্রম বাতিল করেন এবং ৩১ জানুয়ারি বিদায় নিতে হয় পুরো কমিশনকে।
এরপর ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন ওই সময়ের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. শামসুল হুদা। পরে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এই তফসিলে চারবার পরিবর্তন আনা হয়। শেষ পর্যন্ত ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
তবে এবার সেই সম্ভাবনা কম বলেই নির্বাচন কর্মকর্তারা মনে করছেন। তারা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুসারে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে রোজার আগেই নির্বাচন করতে হবে। আবার নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা হচ্ছে ৬০ দিন সময় হাতে রেখে তফসিল ঘোষণা করা। সে ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারির ৮ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত যেকোনো দিন ভোটের তারিখ নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশনকে তফসিল ঘোষণা করতে হবে। এরপর নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই।
সূত্র: আরটিভি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



