জুমবাংলা ডেস্ক: ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক তরুণীর দেহে অস্ত্রোপচারের পর পেটের মধ্যেই কাঁচি রেখে সেলাই করার পৌনে দুই বছর পর সেটি বের করা হয়। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে কাউকে সুনির্দিষ্ট করে দায়ী বা চিহ্নিত করা হয়নি। কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা উল্লেখ নেই। বরং কয়েকটি বিদেশি নিবন্ধের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘বিভিন্ন দেশে এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে।’ তবে প্রতিবেদনে অস্ত্রোপচারের সময় অধিক সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত সোমবার দুপুরে ওই হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমানের হাতে তদন্ত প্রতিবেদন তুলে দেন তিন সদস্যের কমিটির প্রধান, সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামরুল হাসান। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কানিজ ফাতেমা ও সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন মো. কামরুজ্জামান।
হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, তদন্ত কমিটি কার গাফিলতিতে পেটে কাঁচি রেখে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে, তা শনাক্ত করতে পারেনি। তাই ওই অস্ত্রোপচারের সঙ্গে যুক্ত কাউকে শাস্তি দেওয়ার বিষয়টিও প্রতিবেদনে আসেনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২০২০ সালের ৩ মার্চ সার্জারি ইউনিট-২-এর দায়িত্বে নিয়োজিত সহযোগী অধ্যাপক মোল্লা শরফউদ্দিনের নেতৃত্বে ওই অস্ত্রোপচারে আরো তিন-চারজন চিকিৎসক অংশ নেন। পরিচালক আরো বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে বিশ্বের বিভিন্ন মেডিক্যাল জার্নালের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘এজাতীয় ঘটনা রেয়ার নয়। এর আগেও বিভিন্ন দেশে অস্ত্রোপচারের সময় এজাতীয় ঘটনা ঘটেছে।’
পরিচালক বলেন, তদন্ত কমিটি বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, অস্ত্রোপচারের সময় একজন সেবিকাকে যন্ত্রপাতির দায়িত্বে নির্দিষ্টভাবে নিয়োজিত রাখা। পাশাপাশি অস্ত্রোপচারের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয় ও আয়াদের আরো বেশি দায়িত্বশীল হওয়ার তাগিদ দিয়ে বলা হয়েছে, অস্ত্রোপচারের সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
উল্লেখ্য, গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ঝুটি গ্রামের খায়রুল মিয়ার মেয়ে মনিরা খাতুনের পেটে ২০২০ সালের ৩ মার্চ অস্ত্রোপচার করা হয় ওই হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ইউনিট-২-এ। ওই সময় একটি কাঁচি মনিরার পেটে রেখে সেলাই করে দেওয়া হয়। পৌনে দুই বছর পর গত ১১ ডিসেম্বর একই হাসপাতালে আবার অস্ত্রোপচার করে তরুণীর পেট থেকে কাঁচিটি বের করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘পেটে কাঁচি রেখেই সেলাই, দুই বছর পর অপসারণ’ শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।