বিশ্বে উদ্বেগজনক হারে কিশোর ও তরুণ বয়সে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। মৃত্যুর কারণ এবং প্রতিবন্ধিতা নিয়ে চালানো একটি গবেষণায় মিলেছে এমন ‘ভয়ঙ্কর’ তথ্য। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন উত্তর আমেরিকায় মাদক গ্রহণ, আত্মহত্যা এবং সাব-সাহারা আফ্রিকা অঞ্চলে সংক্রমক রোগ এবং ক্ষত তরুণদের মৃত্যুর ক্ষেত্রে অন্যতম বড় ভূমিকা রাখছে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় মৃত্যুর কারণ ভিন্ন হলেও এটিকে সবার জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে উল্লেখ করেছেন তারা।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, বিশ্বে যত রোগী আছেন তাদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ হার্টের রোগ এবং ডায়বেটিসে ভুগছেন। এছাড়া মানসিক রোগও আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব মানুষ রোগাক্রান্ত হয়েছেন তার অর্ধেকই প্রতিরোধ করা যেত যদি উচ্চ রক্তচাপ, বায়ুদূষণ, ধূমপান এবং স্থুলতা কমানো যেত।
‘গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিস স্টাডি’ নামে এ গবেষণাটি ১৬ হাজার ৫০০ বিজ্ঞানীর একটি নেটওয়ার্কের দ্বারা ৩০ হাজার ডাটা ব্যবহার করে করা হয়েছে। এটি স্বাস্থ্যবিষয়ক জার্নাল ‘ল্যাঙ্কেট’ এবং গত রোববার জার্মানির বার্লিনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে প্রকাশ করা হয়।
এতে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের মতো গত বছর ২০২৪ সালেও বিশ্বের ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলে মৃত্যুর হার কমেছে। এছাড়া করোনা মহামারির কারণে মানুষের আয়ুস্কাল যে কমে যাওয়ার বিষয়টিও চলে গেছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, নারীদের গড় আয়ু ৭৬ দশমিক ৩ বছর এবং পুরুষদের গড় আয়ু ৭১ দশমিক ৫ বছরে পড়েছে। যা ১৯৫০ সালের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। তবে গড় আয়ুর ক্ষেত্রে এখনো ভৌগলিকভাবে ভিন্নতা রয়েছে। যেসব অঞ্চলের মানুষের আয় বেশি সেখানকার গড় আয়ু ৮৩ বছর। অপরদিকে সাব-সাহারান আফ্রিকায় গড় আয়ু মাত্র ৬২ বছর।
তবে গবেষকরা জানিয়েছেন, তারা সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন কিশোর ও তরুণ বয়সের মৃত্যু নিয়ে।
উত্তর আমেরিকা এবং লাতিন আমেরিকার কিছু অংশে তরুণদের মৃত্যুর অন্যতম বড় কারণ আত্মহত্যা, মাদক গ্রহণ ও মদ পান।
এই অঞ্চলে তরুণদের মৃত্যু বাড়ার সঙ্গে বিষন্নতা ও হতাশার অনেক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড এভালুয়েশন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডাক্তার ক্রিস্টোফার মারে বলেছেন, “মানসিক সমস্যার বিষয়টি নিয়ে যদিও অনেক কাজ করা হচ্ছে। তবে এটির কারণ নিয়ে এখনো অনেক কিছু করার আছে।”
মানসিক সমস্যা কি সামাজিক মাধ্যম, মোবাইল বা কম্পিউটার বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্য বা পারিবারিক এবং সামাজিক প্রবণতার কারণে হচ্ছে কি না সেটি খুঁজে বের করতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অপরদিকে সাব-সাহারা আফ্রিকায় ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের মৃত্যুর ক্ষেত্রে সংক্রমক রোগ ও অন্যন্য ক্ষত বড় ভূমিকা রাখছে। এই অঞ্চলে ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী নারীদের মৃত্যুর হার যা ধারণা করা হতো সেটি ৬১ শতাংশ বেশি বলে নতুন গবেষণায় পাওয়া গেছে। সেখানে এ বয়সী মেয়েদের বেশিরভাগই গর্ভধারণ, শিশু জন্ম দিতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছে। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা এবং মস্তিস্কের রোগও অনেকের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।