বিনোদন ডেস্ক : ভারতের রিয়্যালিটি শো ‘সা রে গা মা পা’ দিয়ে দুই বাংলায় তুমুল জনপ্রিয়তা পান সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল। এরপর মৌলিক কিছু গান নিয়েও হাজির হন তিনি। যা তার জনপ্রিয়তাকে তুঙ্গে নিয়ে যায়।
কিন্তু একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে নিজেকে অনেকটা হারিয়ে ফেলেছেন এই সঙ্গীত শিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে তার ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন অনেক ভক্ত ও শ্রোতা। এবার নিজের অধঃপতনের কারণ নিজেই চিহ্নিত করলেন এই গায়ক। দায়ি করলেন অল্প সময়ে পাওয়া তারকাখ্যাতি তাকে এসব কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছে।
সম্প্রতি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নোবেল বলেন, ‘আমার সব অভিযোগ নিজের ওপরেই। আমি আমাকে যত্ন করতে পারিনি। তাই শ্রোতাদের অসম্ভব ভালোবাসা পেয়েও তা ধরে রাখতে পারিনি। এই দোষ শুধুই আমার। কারণ তারকাখ্যাতি এবং অর্থ একসঙ্গে পেয়ে গিয়েছিলাম, যা আমাকে পথভ্রষ্ট করে দেয়। আমি কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করতাম না, যা মন চাইত তাই করতাম। কোনো কাজকে আমি গুরুত্ব দিতাম না। যাকে তাকে অপমান করে কথা বলতাম। কিন্তু এমনটা করা আমার উচিত হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে আসলে টাকার চেয়ে বড় সেলিব্রিটি নাই। ওই টাকাটা যখন পকেটে এসে যায় তখন অনেক কিছু নিয়ে আর চিন্তা করা হয় না। এটাই সমস্যা। তখন মনে হয়েছে- যা হচ্ছে হোক, উল্টায়ে যাক পৃথিবী! আমি তো আমার সব চালাইতেছি। এগুলোই আমার সঙ্গে বেশি হয়েছে। আমি কাজে বিষয়ে যত্নশীল ছিলাম না।’
মূলত অল্প সময়েই তারকাখ্যাতি-অর্থ একসঙ্গে তার ক্যারিয়ারে ক্ষতি ডেকে এনেছেন বলে মন্তব্য করেন নোবেল। তবে নিজেকে সামলে আবারও গানের জগতে ফিরছেন এই গায়ক। প্রায় চার বছর পর ফিরছেন কাজে।
এ প্রসঙ্গে নোবেল বলেন, ‘চার বছর বিরতির পর আবারও ফিরে আসার চেষ্টা করছি। প্রতিনিয়ত নিজকে গড়ার চ্যালেঞ্জ নিচ্ছি। সেই চ্যালেঞ্জে সফল হতে নিজের সঙ্গেই যুদ্ধ করে যাচ্ছি। আশা করছি এবার দর্শকদের ভালোবাসা ধরে রাখতে পারব। কারণ এই ভালোবাসা যদি ধরে না রাখতে পারি তাহলে কালের গর্ভে আমি হারিয়ে যাব একদিন। যেমন হারিয়ে ছিলাম এই চার বছর।’
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ এ সময়টিতে আমি একটি বিষয় উপলব্ধি করেছি। কাজ ছাড়া আমাকে কেউ মনে রাখবে না, মনে রাখেনি। তাই এবারের ফিরে আসার যুদ্ধ শুধুই আমার একার। কারণ শাস্তি যা পাওয়ার আমি পেয়েছি। এখন এই ভুলগুলো শুধরে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াই আমার মূল লক্ষ্য।’
দেশের ব্যান্ড সংগীতের জীবন্ত কিংবদন্তি নগর বাউল জেমসের সঙ্গে তুলনাই তার ক্যারিয়ারের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে নোবেল বলেন, ‘রিয়্যালিটি শো আমাকে তারকাখ্যাতি এনে দেয়। এরপর আমার ভক্তরা আমাকে ভালোবাসা দিয়ে মাথায় তুলে দেয়। এ বিষয়ে আমি তাদের দোষ দিচ্ছি না, কিন্তু আমি বিষয়টি উপভোগ করে নিজেকে তখন হারিয়ে ফেলি। এরপর পরে বুঝতে পারি, জেমস ভাইয়ের সঙ্গে তুলনাই আমাকে সেসময় শেষ করে দিয়েছিল। কারণ জেমস ভাই ভিন্ন বিষয়।’
সব শেষ নোবেল বলেন, ‘যারা আমার গান পছন্দ করেন, তারা আমাকে কারও সঙ্গে তুলনা করবেন না প্লিজ। কারণ সংগীতে আইয়ুব বাচ্চু, এন্ড্রু কিশোর ও আসিফ আকবর ভাইদের অর্জন আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। কেউই জীবনভর চাইলেও তাদের মতো হতে পারবে না।’
নোবেলের হাতে বর্তমানে কিছু গান ও সিনেমা রয়েছে, যা ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য নির্মাণ হবে। এর মধ্যে একটিতে খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে তাকে। গানের পাশাপাশি পর্দায় খলনায়ক চরিত্র নিয়েই ফিরতে চান এই গায়ক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।