মহামারি ক.রোনা ভাইরাস ঠেকাতে চীনা কোম্পানি সিনোভেক যে ভ্যাকসিন অবিস্কারের করেছে তা বাংলাদেশে পৌঁছালেই আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) পরীক্ষামূলক প্রয়োগ (ট্রায়াল) শুরু করবে ।
এছাড়া রাশিয়া থেকে টিকা আনতে দেশটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বাংলাদেশ । অন্যদিকে ভারতের বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড বাংলাদেশে তাদের টিকার পরীক্ষা করার আগ্রহ দেখিয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, তারা চীন, রাশিয়া, ভারত ছাড়া অন্য দেশ থেকে টিকা আনার সম্ভাব্য বিকল্প পথ খুঁজে দেখছে। কোভ্যাক্সের মাধ্যমে টিকা পাওয়ার প্রক্রিয়ায়ও বাংলাদেশ যুক্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ক.রোনার ভ্যাকসিনের জন্য টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সব দেশে আবেদন করে রাখা হয়েছে। যেখানেই আগে পাওয়া যাবে, দেশের মানুষের জন্য টিকা আনা হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, বিভিন্ন দেশে ১৭৯টি পৃথক টিকা উদ্ভাবনের চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে ১৪৫টি আছে প্রাথমিক পর্যায়ে এবং পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে ৩৪টি। ১২ আগস্ট রাশিয়া যে টিকার সফলতার ঘোষণা দিয়েছিল, তালিকায় তার নাম নেই। তবে রাশিয়ার টিকার ব্যাপারে ইতিমধ্যে অনেক দেশ আগ্রহ দেখিয়েছে। বাংলাদেশও দেখিয়েছে।
চীনের ভ্যাকসিন
বাংলাদেশ সরকার চীনের কোম্পানি সিনোভ্যাকের টিকা পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে। আইসিডিডিআরবি এই পরীক্ষা করবে। ট্রায়ালের প্রধান গবেষক ও আইসিডিডিআরবির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ড. কে জামান জানান, ‘আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। চীনা কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলেই টিকা বাংলাদেশে পৌঁছাবে। আমরা ট্রায়াল শুরু করে দেব।’ ঠিক কবে নাগাদ পরীক্ষার টিকা বাংলাদেশে পৌঁছাবে, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না আইসিডিডিআরবি। তবে সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
আইসিডিডিআরবির সঙ্গে সিনোভ্যাকের চুক্তিতে বলা আছে, পরীক্ষায় নিরাপদ ও কার্যকর প্রমাণিত হলে সিনোভ্যাক ১ লাখ ১০ হাজার টিকা বাংলাদেশকে বিনা মূল্যে দেবে। এ ছাড়া টিকা তৈরির প্রযুক্তিও বাংলাদেশকে দেওয়ার কথা আছে। সিনোভ্যাকের এই টিকার নাম ‘ক.রোনাভ্যাক’। ইতিমধ্যে ব্রাজিল ও ইন্দোনেশিয়ায় ক.রোনাভ্যাকের পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
রাশিয়ার ভ্যাকসিন
গতমাসের ১২ আগস্ট রাশিয়া টিকা উদ্ভাবনের ঘোষণা দেয়। তবে রাশিয়ার বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত টিকা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। তবে ৪ সেপ্টেম্বর চিকিৎসা সাময়িক ল্যানসেট–এ রাশিয়ার টিকা নিয়ে বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ প্রকাশের পর আলোচনা অনেকটাই থেমে গেছে।
একাধিক সরকারি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকার রাশিয়ার কাছে থেকে টিকা পাওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ করেছে। ২৮ আগস্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত একটি সভার কার্যবিবরণীতে দেখা যায়, রাশিয়ার এক একটি টিকার দাম পড়বে ১০ মার্কিন ডলার বা ৮৫০ টাকা।
ভারতের উদ্ভাবন ও উৎপাদন
ভারত একই সঙ্গে টিকা উদ্ভাবন এবং অন্য দেশের উদ্ভাবিত টিকা উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত রয়েছে। সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া টিকা উৎপাদনের চুক্তি করেছে অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রোজেনেকার সঙ্গে। আবার সেরামের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মা। তবে সেরামের টিকা বাংলাদেশে বিনা মূল্যে না স্বল্প মূল্যে পাওয়া যাবে, তা এখনো জানা যায়নি।
অন্যদিকে ভারতের বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড বাংলাদেশে তাদের টিকার পরীক্ষার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। একটি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তারা প্রাথমিক আলোচনাও করেছে। আনুষ্ঠানিক বা লিখিত প্রস্তাব তারা এখনো দেয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।