জুমবাংলা ডেস্ক : দেশে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর-২০২০ কোয়ার্টারে মামলা রুজু হয়েছে ৫০ হাজার ৮৫৮টি, যা গত ২০১৯ সালের একই কোয়ার্টারে ছিল ৫৩ হাজার ৬১৬টি। বর্তমান কোয়ার্টারে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় মামলা হ্রাস পেয়েছে ২ হাজার ৭৫৮টি। আলোচ্য সময়ে পূর্বের কোয়ার্টারের তুলনায় (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০২০) খুন মামলা কমেছে ১২৮টি, যা মোট খুনের মামলার ১৩ দশমিক ৩৫ ভাগ। এছাড়া, উদ্ধারজনিত কারণে মামলা হ্রাস পেয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি সূচকে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
মঙ্গলবার পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের শাপলা কনফারেন্স রুমে কোয়ার্টালি অপরাধ পর্যালোচনা সভায় এসব তথ্য উঠে আসে। সভায় সভাপতিত্ব করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ।
সভায় দেশব্যাপী পুলিশের সকল ইউনিটভিত্তিক ডাকাতি, খুন, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, অপমৃত্যু, মাদকদ্রব্য উদ্ধার, অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার ইত্যাদি মামলা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচন, করোনা ও টিকাদান সংক্রান্ত পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা ইস্যু, বিট পুলিশিং প্রভৃতি বিষয় আলোচনায় উঠে এসেছে।
পর্যালোচনা সভায় প্রতিটি মামলা নিবিড়ভাবে তদারকির মাধ্যমে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মনিটরিং অব্যাহত রাখার জন্য মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক। এক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের তদারকি বাড়াতে হবে।
এ বিষয়ে আইজিপি বলেন, পুলিশের আচার-আচরণে ইতিবাচক অনেক পরিবর্তন এসেছে। ইতিবাচক পরিবর্তনের এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। আমরা চাই, থানায় আগত সেবাপ্রার্থীর সাথে যে কোনো প্রকার খারাপ আচরণের কথা বাস্তব নয়, গল্প ও কল্পকথার অংশ হোক। সেটি বিবেচনায় নিয়েই কাজ করছি আমরা। জনবান্ধব পুলিশ হতে হলে, থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদেরকে জনগণের সাথে ভালো আচরণ করতেই হবে, তাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে, সেবাপ্রার্থীর প্রতি সাপোর্টিভ হতে হবে। তিনি বলেন, পেশীশক্তি নয়, পুলিশের কাজে আইনি সক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে।
মাদকমুক্ত পুলিশ গড়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে আইজিপি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, মাদকের সাথে যে কোনো প্রকার অবৈধ সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেলে পুলিশের যে কোনো সদস্যের প্রতি শূন্য সহিঞ্চুতা প্রদর্শন করা হচ্ছে এবং এই প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে আমরা বিট পুলিশিং চালু করেছি। ইতোমধ্যে দেশব্যাপী বিট পুলিশিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিট পুলিশিং কার্যক্রম আরও গতিশীল করার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। সফলভাবে বিট পুলিশিং করলে সমাজে অনেক অপরাধ কমে আসবে। জনগণের সাথে নিবিড় যোগাযোগ ও সম্পর্ক বাড়াতে হবে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, অপরাধের সংঘটন কমাতে প্রো অ্যাকটিভ পুলিশিং’র পাশাপাশি প্রিভেন্টিভ পুলিশিং’র চর্চা বাড়াতে হবে। বিট পুলিশিং চর্চা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে।
শৃঙ্খলার ব্যাপারে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়ে আইজিপি বলেন, শৃঙ্খলার সাথে কোনভাবেই আপোষ করা যাবে না। কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী ও অন্যান্য পেশার মানুষের সাথে পেশাদার সম্পর্ককে গুরুত্ব দিতে হবে। পেশাদার সম্পর্ক এড়িয়ে কোনো ব্যক্তিগত সম্পর্ক নয়। অধীনস্থদের গতিবিধি ও কাজকর্মের খোঁজখবর রাখতে হবে। যে কোনো অপরাধ শক্ত হাতে দমন করতে হবে। পুলিশ বাহিনীর প্রতি মানুষের যে প্রত্যাশা, সে প্রত্যাশার ব্রতী হতে হবে।
এসময় পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর ড. মো. নাজিবুর রহমান, অতিরিক্ত আইজি (এএন্ডও) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, এসবি প্রধান মীর শহীদুল ইসলাম, সিআইডি প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান, ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম, র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ, সকল মেট্রোপলিটন কমিশনার ও রেঞ্জের ডিআইজিগণ উপস্থিত ছিলেন। জেলার পুলিশ সুপারগণ ভার্চুয়ালি সভায় যুক্ত ছিলেন। সভায় ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) ওয়াই এম বেলালুর রহমান অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২০ কোয়ার্টারের অপরাধ পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।