বিনোদন ডেস্ক : স্কুলের একটি অনুষ্ঠানে নেচেছিলেন কিশোরী জয়া প্রদা। সামনে দর্শকসারিতে ছিলেন এক পরিচালক। তিনি জয়াকে সুযোগ দেন তার ছবি ভূমি কোসম’-এ। সেখানে মাত্র তিন মিনিটের একটি নাচের সিকোয়েন্স ছিল জয়ার। ওই সিকোয়েন্সের পারিশ্রমিক ছিল ১০ টাকা।
সেসময় জয়াকে রাজি করিয়েছিলেন তার পরিজনরা। এভাবে তেলেগু ভাষার ছবি ‘ভূমি কোসম’ হয়ে থাকল অভিনেত্রী জয়া প্রদার প্রথম ছবি। ভারতীয় চলচ্চিত্রে সুন্দরী নায়িকাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। অন্ধ্রপ্রদেশের রাজামুন্দ্রিতে তার জন্ম ১৯৫৮ সালের ৩ এপ্রিল।
জয়ার জন্মগত নাম ললিতারানি রাবণম। বাবা কৃষ্ণ রাও ছিলেন তেলেগু ছবির প্রযোজক। মা নীলাবেণী ছিলেন গৃহবধূ। প্রথম ছবিতে তিন মিনিটের নাচের সিকোয়েন্সেই বাজিমাত। ১৭ বছর বয়সেই জয়া প্রদা হয়ে ওঠেন দক্ষিণী ছবির তারকা।
তামিল, তেলেগু এবং কন্নড় তিনটি ভাষার ছবিতে দাপটের সঙ্গে অভিনয়ের পরে জয়াপ্রদার আত্মপ্রকাশ ঘটে বলিউডে। তার প্রথম হিন্দি ভাষার ছবি ‘সরগম’ মুক্তি পায় ১৯৭৯ সালে। এরপর দক্ষিণী ছবি এবং বলিউড, দুই ইন্ডাস্ট্রিতেই প্রথমসারির নায়িকা ছিলেন জয়া প্রদা। কাজ করেছেন বাংলা ছবিতেও।
পাঁচটি ভাষায় পঞ্চাশটির বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন জয়া প্রদা। ১৯৮৫ সালে কেরিয়ারের স্বর্ণযুগে তিনি ছিলেন বলিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক প্রাপ্ত তারকা। এই সময়েই তিনি আয়কর সংক্রান্ত ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। এ ব্যাপারে তাকে সাহায্য করেছিলেন প্রযোজক শ্রীকান্ত নাহতা। ক্রমশ তার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন জয়া। এই নির্ভরশীলতা থেকেই দুজনের মধ্যে প্রণয়ের সূত্রপাত।
বিবাহিত শ্রীকান্ত তখন তিন সন্তানের বাবা। সব জেনেশুনেও সম্পর্ক থেকে পিছিয়ে আসেননি জয়া প্রদা। তাদের সম্পর্ক তখন ইন্ডাস্ট্রির গুঞ্জন। ১৯৮৬ সালে শ্রীকান্তকে বিয়ে করেন জয়া। প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স না করেই তাকে বিয়ে করেন শ্রীকান্ত।
শ্রীকান্তের প্রথম স্ত্রী এই বিয়েতে আপত্তি জানাননি। কিন্তু জয়া প্রদা কোনোদিন শ্রীকান্তের বাড়ি বা পরিবারে জায়গা পাননি। তিনি থেকে যান শ্রীকান্তের জীবনে দ্বিতীয় নারী হয়েই। বিয়ের পরে ইন্ডাস্ট্রি এবং ব্যক্তিগত জীবন দুদিকেই কোণঠাসা হয়ে পড়েন জয়া প্রদা।
শ্রীকান্ত-জয়ার কোনো সন্তান নেই। জয়ার মা হওয়ার ইচ্ছে থাকলেও শ্রীকান্ত সন্তান চাননি। মাতৃত্বের স্বাদ পূরণ করতে নিজের বোনের ছেলেকে দত্তক নেন জয়া।
১৯৯৪ সালে রাজনীতির জগতে পা রাখেন এই তারকা। প্রতিষ্ঠাতা এন টি রামা রাও-এর ডাকে তিনি তেলেগু দেশম পার্টিতে যোগ দেন। পরে চন্দ্রবাবু নাইডুর সঙ্গে মতান্তর হওয়ায় জয়া টিডিপি ছেড়ে যোগ দেন সমাজবাদী পার্টিতে। এই পার্টির টিকিটে তিনি ২০০৪ সালে রামপুর থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন।
কিন্তু এই দলেও জয়ার স্থায়িত্ব বেশিদিন হয়নি। দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে ২০১০ সালে তাকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর কিছুদিন ছিলেন অমর সিংহের রাষ্ট্রীয় লোকদলে। ২০১৯ সালে আবার দলবদল। যোগ দেন বিজেপিতে। এখনো সে দলেই আছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।