জুমবাংলা ডেস্ক: শেরপুর জেলায় দিনদিন তিল চাষ বাড়ছে। এই জেলার ব্রহ্মপুত্র নদীর চরাঞ্চলের বেলে ও বেলে-দোঁআশ মাটির অনাবাদি জমিতে কম পরিশ্রমে অধিক ফলন এবং দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা তিল চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
তিল চাষ করে লাভবান হচ্ছেন জেলার নকলা উপজেলার চরঅষ্টধর, চন্দ্রকোণা, পাঠাকাটা, টালকী, বানেশ্বরদী ও উরফা ইউনিয়নের অগণিত চাষি।
চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৪ থেকে ৫ হেক্টর জমিতে তিল চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। গতবছর ২ হেক্টর জমিতে তিল চাষ করা হয়েছিল। এখানকার উৎপাদিত তিলের দানা অধিক পুষ্ট হওয়ায় বেশ চাহিদা রয়েছে।
তিল চাষের জন্য অনুকূল আবহাওয়া থাকা নকলার চন্দ্রকোনা, চরঅষ্টধর ও পাঠাকাটা ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলের যে দিকে দৃষ্টি যায় সেদিকেই শুধু তিল গাছের সবুজের সমারোহ চোখে পড়ে।
শস্য ভান্ডার খ্যাত শেরপুরের নকলায় এবার তিলের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাতে তিলে নবযুগের সূচনা হবে এমন ধারনা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
বহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী এলাকার অপেক্ষাকৃত অনুর্বর জমিতে ধানের ফলন কম হওয়ায় ও উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় এ এলাকার কৃষকরা ধান ছেড়ে তিলসহ অন্যান্য শস্য চাষে ঝুঁকছেন।
চরাঞ্চলে তিল চাষে কৃষকমনে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুুমে উপজেলায় ৪ থেকে ৫ হেক্টর জমিতে শতাধিক কৃষক তিল চাষ করেছেন। এছাড়া অন্যান্য ফসলের আইলে তিলের আবাদ সবার নজর কেড়েছে।
ভূরদী খন্দকারপাড়া কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার সভাপতি ছাইদুল হক, সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, বাছুরআলগার কৃষক মুক্তার হোসেন, মোকলেছুর রহমানসহ অনেকেই জানান, তিল চাষে কোন খরচ নেই বললেই চলে। যে খরচ হয় তার তুলনায় ৫/৬ গুন বেশি লাভ পাওয়া য়ায়।
কৃষি বিভাগ থেকে নিয়মিত পরামর্শ নিয়ে তিলের যতœ নিচ্ছেন তারা। তাদের তিল ক্ষেতের অবস্থা দেখে অনেকে মনে করছেন এবারের উৎপাদন কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে। উৎপাদন খরচ কম, কিন্তু লাভ বেশি পাওয়ায় আগামীতে তিল চাষির সংখ্যা ও জমির পরিমাণ অনেক বাড়বে এমনটাই আশাব্যক্ত করছেন অনেকে।
শস্য ব্যবসায়ীরা জানান ধান, গম ও ভূট্টা মজুদ করার চেয়ে তিল বা সল্পকালীন অন্যান্য কৃষিপণ্য মজুদ করলে লাভ ও কদর উভয়ই বেশি পাওয়া যায়। এসব শস্যে লোকসান হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. সুমান্ত দাস বলেন, বাংলাদেশে চাষকৃত তৈল ফসলের মধ্যে তিল একটি গুরুত্বপূর্ণ তৈলজাত ফসল। এ তৈলজাত ফসলটি অপেক্ষাকৃত কম উর্বর জমিতে ফলানো সম্ভব। এ ফসল আবাদে খরচ ও শ্রম কম লাগে। তিল অন্যান্য ফসলের আইলেও ফলানো যায়। তাই কৃষকরা দিন দিন তিল চাষে ঝুঁকছেন। মাঠ পর্যায়ে কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ।-বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।