জুমবাংলা ডেস্ক: দেশের ২৪ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হলেও ভ্যাপসা গরম কিছুতে কমছে না। দিনে যেমন রোদের প্রতাপ, রাতে তেমন গরম হাওয়া। প্রচণ্ড গরমে হাঁপিয়ে উঠছে মানুষ। গরমে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। গরম উপেক্ষা করেই তাদের বাইরে বের হতে হচ্ছে।
বনানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন হবিগঞ্জের সাইফুল ইসলাম। পরিবার নিয়ে থাকেন রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায়। রোববার সকালে অফিসে যেতে উত্তরা জসিমউদ্দিন মোড়ে গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। তীব্র গরমে কপালে জমছে বিন্দু বিন্দু ঘাম। গায়ের শার্ট ভিজে গেছে।
আরটিভি নিউজকে তিনি বলেন, গরমে জীবন অতিষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখনতো বর্ষাকাল। বৃষ্টি হওয়ার কথা। বৃষ্টি হলেতো গরম কিছুটা কমতো। কিন্তু বৃষ্টিরতো দেখা নাই।
তিনি আরও বলেন, সভা সমাবেশের কারণে রাস্তায় গণপরিবহন কম। একদিকে প্রচণ্ড গরম অন্যদিকে অফিসে যেতে গণপরিবহন সমস্যা। খুব ঝামেলায় আছি। সারাদেশে যেভাবে রাজনীতির মাঠ গরম হয়েছে। ঠিকমত অফিস করতে পারব চিন্তায় আছি।
মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরের রাস্তার পাশে শরবত পান করছিলেন রিকশাওয়ালা মনসুর মিয়া। বাড়ি বরিশালের মুলাদী। পরিবার নিয়ে থাকেন মিরপুর ১২ নম্বর।
আরটিভি নিউজকে তিনি বলেন, প্রচণ্ড গরম। আর সহ্য হচ্ছে না। রোদে পুড়লেও আমগো দেখার কেউ নাই। মরলেও দেখার কেউ নাই। দুঃখের কথা বলার জায়গাও নেই। দেখেন শরীরে গরমে কেমন ফোসকা পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, এর আগে গরমে ঘামে শরীর ভিজে ঠান্ডা লেগে জ্বর হইছিলো। ভুগছি অনেক দিন। শরীরটা দুর্বল হয়ে গেছে। এই গরমে বের হইছি পোলাপানের মুখের দিকে তাকাইয়া। রিক্সা নিয়া রাস্তায় না নামলে খাবারতো জুটবো না।
তবে আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও।
এদিকে এর মধ্যে সুখবর দিল আবহাওয়া অফিস। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহওয়া অধিদপ্তর। রোববার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন উত্তর উড়িষ্যা উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর উড়িষ্যা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছে।
মৌসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
ঢাকা, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, রংপুর, নেত্রকোণা, সীতাকুন্ড, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, ফেনী, মংলা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলসহ রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু জায়গা হতে প্রশমিত হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রংপুর ও ফেনীতে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।