বিনোদন ডেস্ক: সবেমাত্র তৃণমূলের টিকিটে ভোটে জিতে সংসদে গিয়েছেন, আর এর মধ্যেই তাঁর বিজেপি-তে যোগদানের জল্পনায় সরগরম বাংলার রাজনীতি। তিনি নুসরাত জাহান। লোকসভায় শপথ গ্রহণের দিন নুসরাতের বেশভূষা নিয়ে বিতর্কের মাঝেই তাঁর বিজেপিতে যোগদান নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বসিরহাটের প্রাক্তন সাংসদ তথা তৃণমূল নেতা ইদ্রিশ আলি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে ইদ্রিশ বলেন, ‘‘অনেকের সন্দেহ হচ্ছে, নুসরাত জাহান কি বিজেপিতে যেতে চান? আমার নিজের কথা না, অনেকে বলছেন’’। তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে নাম লেখানোর হিড়িক চলাকালীন, নুসরাত সম্পর্কে ইদ্রিশের এমন মন্তব্যে এ মুহূর্তে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। কেন এমন কথা বললেন ইদ্রিশ আলি?
নুসরাত জাহানের ‘আচরণ’ নিয়ে দলের অন্দরে ‘বিভ্রান্তি’ তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইদ্রিশ আলি। সিঁদুর-মঙ্গলসূত্র পরে সংসদে গিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছেন নুসরাত। পাশাপাশি লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে প্রণাম করা নিয়েও জোর চর্চা শুরু হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়েই নুসরতের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ইদ্রিশ আলি। এ প্রসঙ্গে বসিরহাটের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘‘আমাদের মূল শত্রু বিজেপি। আমাদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। সেখানে উনি প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের প্রশংসা করছেন।
যেখানে আমাদের কোনও সাংসদ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণকে সমর্থন করেন না, বাহবা দেন না, সেখানে উনি বাহবা দিচ্ছেন। জানি না, অনেকে বলাবলি করছেন, তবে কি উনি ওঁর স্বামীর কথায় বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন?’’ উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই তুরস্কে ব্যবসায়ী নিখিল জৈনের সঙ্গে বিয়ে হয় নুসরাত জাহানের। বিয়ের পরই সংসদে ‘নুসরাত জাহান রুহি জৈন’ হিসেবে শপথ পাঠ করেন বসিরহাটের সাংসদ।
এ প্রসঙ্গে ইদ্রিশ বলেন, ‘‘ভোটে দাঁড়ানোর সময়ও তিন তালাক নিয়ে দলের অবস্থানের বাইরে গিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। সে নিয়েও সমালোচনা হয়েছিল। আর এখন উনি প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের প্রশংসা করছেন। অরাজনৈতিক হলে যা হয়’’। অন্যদিকে, শপথ পাঠ শেষে ভরা সংসদে লোকসভার অধ্যক্ষের পায়ে হাত দিয়ে নুসরাতের প্রণাম করাও ‘ভাল চোখে দেখছেন না’ ইদ্রিশ। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের এই আইনজীবী নেতা বলেন, ‘‘এটা সংস্কৃতি নয়। বিজেপি সাংসদরাও করেননি, উনিই শুধু করেছেন এসব। প্রণাম করা, শ্রদ্ধা জানানো ব্যক্তিগত রুচির ব্যাপার।
কিন্তু সেটা তো সব জায়গায় হয় না। বাইরে করতে পারতেন’’। এরপরই ইদ্রিশের মন্তব্য, ‘‘দলের অনেকেই বলছে, এটা লজ্জার ব্যাপার। অনেকের সন্দেহ হচ্ছে, তাহলে কি বিজেপিতে যেতে চায় উনি?’’। ইদ্রিশের মতে, নুসরতের অবস্থান স্থির করা উচিত। উল্লেখ্য, সিঁদুর ও মঙ্গলসূত্র পরে সংসদে শপথ পাঠ করে তুমুল বিতর্কের মুখে পড়েছেন নুসরাত জাহান। এই বিতর্কে নুসরাতের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং শাহানওয়াজ হুসেন। রাজ্য ও জাতীয় স্তরের এই দুই বিজেপি নেতা-নেত্রীর এমন ‘সমর্থন’ ইদ্রিশের মন্তব্যের মাধ্যমে সৃষ্ট জল্পনাকে জল-হাওয়া দিচ্ছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য, এবারের লোকসভায় ইদ্রিশকে বসিরহাট থেকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। পরিবর্তে ওই আসন থেকে ঘাসফুল প্রতীকে লড়াই করেছেন বিনোদন জগতের চেনা মুখ নুসরাত। এর ফলে, নুসরাতের প্রতি ইদ্রিশের ক্ষোভ ‘স্বাভাবিক’ বলেও মনে করছে রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। দলের অন্দরে নুসরাত জাহানকে নিয়ে কর্মীদের একাংশের বিভ্রান্তি নিয়ে দলনেত্রীকে জানাবেন ইদ্রিশ আলি? জবাবে তিনি বলেন, ‘‘না, আমি কিছু বলব না এ নিয়ে। তবে অনেকেই আমার কাছে বলছেন’’।
ইদ্রিশ আলির এদিনের মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-র তরফে নুসরাতের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। টেক্সট মেসেজেরও উত্তর দেননি। এ বিষয়ে নুসরাতের প্রতিক্রিয়া জানা গেলে তৎক্ষণাৎ তা এই প্রতিবেদনে যুক্ত করা হবে।সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।