জুমবাংলা ডেস্ক : ‘তোর দোকানে কোনো চুরি হয়নি, তুই মিথ্যা কথা বলতেছস, ওদের সঙ্গে আপস হয়ে যা। অন্যথায় এ মামলাসহ আরো ১০টি মামলায় তোকে ভরে দেব’ হাটহাজারী মডেল থানার এসআই আরিফুজ্জামান এমন হুমকি প্রদান করেছেন দাবি করে চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার বরাবরে অভিযোগ করেছেন মামলার বাদি ভুক্তভোগী মো. নুরুল ইসলাম। রবিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভুক্তভোগী নিজে লিখিত অভিযোগটি দায়ের করেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামের দোকানে গত জানুয়ারিতে স্থানীয় কিশোর গ্যাংদের অন্যতম নেতা কামালের নেতৃত্বে তার ছেলে আরমান ও সজিব ৩০/৩৫ জন কিশোর নিয়ে বাকি টাকা পাওনাকে কেন্দ্র করে দোকান ভাঙচুর ও তার মাসহ ভাইদের ওপর হামলা করে। এতে গুরুতর আহত হয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে থানায় অভিযোগ করলেও কোনো সুরাহা পায়নি। উল্টো ওই কিশোররা তাকে অভিযোগ তুলে নিতে কামালের নেতৃত্বে হুমকি দেয়।
এর কয়েক মাস পর ১০ জুন সংঘবদ্ধ কিশোরের দল রাতে আমার দোকানে চুরি করে গ্যাস সিলিন্ডার, চুলা ও দোকানের রক্ষিত টাকাসহ মোট ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকার জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যায়। এরপর থানায় অভিযোগ করলে তারও কোনো সুরাহা (বিচার) পায়নি।
এ অবস্থায় অভিযুক্তরা থানায় অভিযোগ করার কারণে বলে দোকান কিভাবে করি দেখে নেবে বলে হুমকি দেয়। লিখিত অভিযোগে ইসলাম বলেন, দুঃখের বিষয় গত আগস্ট মাসে আবারো দোকানের টিন খুলে ৩৫ হাজার টাকার মোবাইল কার্ড ও বিকাশের টাকাসহ দোকানের ক্যাশ থেকে ৫৫ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় আমি নিজের চোখে দেখেছি।
ভয়ে তাদের বাধা দিতে পারিনি। কেননা তাদের সঙ্গে দেশীয় দা ছুরি ও রড ছিল। পরে থানায় অভিযোগ দিলে সেটা মামলা রুজু হয়। এ মামলায় একজন আসামি আটক করে পুলিশ। সে জামিনে এসে প্রকাশ্যে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করলে আমি আবারো নিরাপত্তার জন্য থানায় জিডি করি।
অত্যন্ত দুঃখের বিষয় মামলার যিনি তদন্ত কর্মকর্তা মডেল থানার এসআই আরিফুজ্জামান তিনি বিভিন্ন সময় মামলার খরচ লাগবে বলে টাকা নিয়েছে। পরে চার্জশিট লেখার জন্য আবারো ২০ হাজার টাকা দাবি করলে আমি অপারগতা প্রকাশ করি। এর সুযোগে উক্ত মামলার বিবাদিগণের সঙ্গে যোগসাজোস করে আমাকে উল্টো ওই মামলাসহ আরো ৮/১০টি মামলায় ঢুকিয়ে দেবে বলে প্রকাশ্যে হুমকি দেয়।
নোংরা ভাষায় গালাগাল দিয়ে হুমকি দেন আমি যেন এ মামলা প্রত্যাহার করি। আমার দোকানগুলো এ পর্যন্ত তিনবার চুরি একবার হামলা ভাঙচুর করার পরেও ভুক্তভোগী হয়ে এখন ওই পুলিশ কর্মকর্তার হুমকির ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। একদিকে উল্লেখিত আসামীগংদের হুমকি অন্যদিকে পুলিশ অফিসার আরিফুজ্জামানের প্রকাশ্যে হুমকির বিচারের দাবি করছে ভুক্তভোগী পরিবার।
এদিকে একই তারিখে সংবাদ সংগ্রহের কাজে থানায় গেলে ডিউটিরত অবস্থায় ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় থানা ডিউটি রুমে প্রকাশ্যে হাটহাজারীতে কর্মরত দৈনিক খবরপত্রের হাটহাজারী প্রতিনিধি সংবাদিক মাহমুদ আল আজাদকেও শারীরিক লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে এসআই আরিফুজ্জামানের বিরুদ্ধে। ওই সাংবাদিক ও চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এসআই আরিফ অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে আজাদকে। সাংবাদিকতা তোরে ঢুকাই দেব, তোর কোন বাপেরে কল দিবি দে। আমি থানায় এমনে আসিনি। ঘুষি মেরে মুখের সব দাঁত ফেলে দেব। দালালি করতে আসিস কেন? নিউজে কোন (!) করবি সহ নানা অশালীন ভাষায় আচরণ করেন এসআই। অভিযোগে প্রকাশ আরিফুজ্জামান এর আগেও একই থানায় ছিল কয়েক বছর। সে সুবাধে অভিযুক্তদের যোগসাজসে স্থানীয়দের থেকে গণসাক্ষর নিয়ে উল্টা সাংবাদিককে ফাঁসাতে অভিযোগ দায়ের করতে শিখিয়ে দেন। বর্তমানে ওই সাংবাদিক পরিবার ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে অভিযোগের সূত্রে প্রকাশ পায়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মসিউদৌলা রেজার কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সাংবাদিক লাঞ্ছিত ও ব্যবসায়ী বাদিকে উল্টো হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। দোকানে চুরির ঘটনার বিষয়ে আমি অবগত আছি, চুরির ঘটনা ও সাংবাদিক লাঞ্ছিতের বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পেলে ওই পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।