টানা দুদিনের বর্ষণের কারণে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে গেছে। এদিকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে টানা বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি স্থানে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। যা আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কুমিল্লার গোমতী নদীর দুই পাড়ের বাসিন্দাদের জন্য।
এদিকে পানিবৃদ্ধি পাওয়ায় গোমতীর চরে বসবাসরত মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তবে এখনো পানি বিপদসীমার প্রায় ২ দশমিক ৮ মিটার নিচে রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খাঁন মোহাম্মদ ওয়ালীউজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। কুমিল্লায় এত পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল না। ভারতের অংশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় গোমতী নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ থেকে ৫ মিটার বেড়েছে। উজানের পানি আমাদের এখানে পৌঁছাতে প্রায় ১৮ ঘণ্টা সময় লাগে। বিকেল নাগাদ গোমতীর পানির সর্বশেষ পরিস্থিতি স্পষ্ট হবে।’
বুধবার দুপুর ২টায় সরেজমিনে গোমতী নদীর টিক্কার চর, চানপুর ব্রিজ ও সংরাইশ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কিছু কিছু স্থানে চরাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। কয়েক জায়গায় ডুবে গিয়েছে গোমতীর পাড় ঘেঁষা মিনি কক্সবাজার খ্যাত বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র।
সরেজমিনে আরও দেখা গিয়েছে, গোমতীর চরাঞ্চলের বাসিন্দারা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে উঠে আসছেন বেড়িবাঁধে। তারা নিজ উদ্যোগে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন।
জগন্নাথপুর এলাকার চরের বাসিন্দা আরিফ হোসেন বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে ওঠে দেখি পানি ঘরের প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছে। আমরা খুব আতঙ্কে আছি। গত বছর বন্যায় আমাদের ঘরবাড়ি ভেসে গিয়েছিল। এলাকার লোকজন মিলে আমাদের নতুন ঘর তুলে দিয়েছিল। আবার যদি ঘর ভেসে যায়, তাহলে আমাদের পথে পথে থাকতে হবে।’
টিক্কার চর এলাকার পারভেজ আলম জানান, ‘গতকাল বিকালেও এত পানি ছিল না। সকালে ঘুম থেকে ওঠে দেখি পানি অনেক বেড়েছে। এভাবে বাড়তে থাকলে বিকেলের মধ্যে পানি বিপদসীমার ওপরে চলে যেতে পারে।’
এ বিষয়ে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভির আহমেদ বলেন, ‘গোমতীর পানি এখনো বিপদসীমার ৯ ফুট নিচে আছে। আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে পানি না এলে পরিস্থিতি তেমন খারাপ হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘গোমতীর চরে বসবাসরত মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসন সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।’
জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা সৈয়দ আরিফুর রহমান বলেন, মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে এই বৃষ্টি হচ্ছে। এটি আরও ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টা থাকতে পারে। সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি ৷
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।