ত্রিস্তান দ্য কুনহা বেশ দূরের এক দ্বীপের নাম। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রত্যন্ত এলাকা হিসেবে আলোচিত এই দ্বীপ অন্যসব দ্বীপের চেয়ে বেশ আলাদা। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই দ্বীপ একটি বিশাল মহাদেশ বা সুপারকনটিনেন্ট বিচ্ছেদের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে। ত্রিস্তান দ্য কুনহা দ্বীপটি দক্ষিণ আটলান্টিকের একটি দ্বীপ। অতীতের সুপারকনটিনেন্ট গন্ডোয়ানার ভাঙনের কারণে এই দ্বীপের গঠন হয়।
ত্রিস্তান দ্য কুনহা দ্বীপের অধিবাসী ২৫০ জন। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন মানব বসতি হিসেবে পরিচিত। ব্রিটিশ শাসনের অধীন এই দ্বীপের বাসিন্দাদের সাত সমুদ্রের এডিনবার্গবাসী নামে ডাকা হয়। ত্রিস্তান দ্য কুনহা ছয়টি আগ্নেয় দ্বীপ নিয়ে গঠিত। ব্রিটিশ ফাঁড়ি সেন্ট হেলেনা দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে দেড় হাজার মাইল দূরে অবস্থিত এই দ্বীপ। মূল দ্বীপটি সাড়ে সাত মাইলজুড়ে বিস্তৃত। এই দ্বীপে শঙ্কু আকৃতির একটি আগ্নেয়গিরি আছে, যাকে কুইন মেরিস পিক বলা হয়।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬ হাজার ৭৬৫ ফুট উঁচু এই আগ্নেয়গিরি। আগ্নেয়গিরির কেন্দ্রের গর্তে একটি হৃদয় আকৃতির হ্রদ আছে, যা শীতকালে বরফে পরিণত হয় ও গ্রীষ্মে তরল হয়ে যায়। দ্বীপটিকে বন্য প্রাণী ও পর্যবেক্ষকদের জন্য স্বর্গ বলা হয়। সমুদ্র তীরে সীল, অ্যালবাট্রস ও নর্দার্ন রকহপার পেঙ্গুইন প্রজনন স্থল দ্বীপটি।
ত্রিস্টানের ছয়টি দ্বীপে পৃথিবীর আবরণের অতীতের ভূতাত্ত্বিক কার্যকলাপের প্রমাণ পাওয়া যায়। সব কটি দ্বীপ সমুদ্রের ভূত্বকের শিখর থেকে গঠিত। ইউরেশিয়া (ইউরোপ ও এশিয়া) ও আফ্রিকার প্লেটের সংযোগস্থল এই এলাকায় অবস্থিত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব প্লেট ধীরে ধীরে সরে যায়, তখন গলিত শিলা মধ্যবর্তী ফাঁক দিয়ে বুদবুদ হয়ে উপরে উঠে আসে।
ত্রিস্টান দ্বীপ পৃথিবীর গভীর থেকে আসা ম্যাগমা প্রবাহের ফলে গঠিত হয়েছিল। এই দ্বীপে অতীতে বিভিন্ন ভূপৃষ্টের পরিবর্তন দেখা যায়। প্রায় ১৩২ মিলিয়ন বছর আগে দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার মধ্যে এই এলাকা গঠিত হয়। প্রাচীন মহাদেশ গন্ডোয়ানা ভেঙে দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার বিকাশ ঘটে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।