জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের দক্ষিণাঞ্চলে এবারো আমের গাছ মুকুলে মুকলে ছেয়ে গেছে। গাছে গাছে থোকা থোকা আমের মুকুল সবার চোখ জুড়াচ্ছে। আশা জাগাচ্ছে গৃহস্থ্যসহ চাষিদের মনেও। ইতোমধ্যে সবুজ থেকে হলুদ বর্ণ ধারন করেছে আমের মুকুল। তবে এবার লাগাতার কুয়াশায় অনেক মুকুলই কালো হতেও শুরু করেছে। যা আমের উৎপাদন ও গুণগত মানের জন্য কিছুটা অশনি সঙ্কেত বলেও মনে করছেন কৃষিবিদরা।
পরিপূর্ণ বাণিজ্যিকভাবে আবাদ ও উৎপাদন না হলেও দক্ষিণাঞ্চলে আম-কাঠালসহ বিভিন্ন ফলের আবাদ হচ্ছে। এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া ফল আবাদের উপযোগী। প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত দক্ষিণাঞ্চলে গত কয়েক দশকে বিভিন্ন ধরনের ফলের আবাদ ও উৎপাদন ক্রমশ বাড়ছে। সারা দেশে যে প্রায় ১০ লাখ টন আম উৎপাদন হচ্ছে, তার অন্তত দেড় লাখ টনই হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে। ইতোমধ্যে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ‘বারি-১১’ নামের বার মাসী আম উৎপাদনে সাফল্য এসেছে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি)’র কৃষি বিজ্ঞানীরা ‘বারি আম-১১’ নামে বার মাসী নতুন জাতের উদ্ভাবন করেছেন। মৌসুম ছাড়াই বছরে চার বার উন্নতমানের সুমিষ্ট আম উৎপাদনে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হারতা’র বিভিন্ন এলাকার অর্ধ শতাধিক কৃষক পরিবার ইতোমধ্যে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় এলাকার আরো অনেকেই এ আম চাষে ঝুকছেন।
পুরানো দিনের ফজলি, লক্ষণভোগ, হিম সাগরের পরে ল্যাংড়া আমের আবাদ আগে থেকেই প্রচলিত ছিল এ অঞ্চলে। গত দু’দশকে দক্ষিণাঞ্চলে ‘আম্রপালি’ আমের আবাদ ও উৎপাদনও বেড়েছে। তবে আমসহ ফলের বাণিজ্যিক আবাদে এখনো সবচেয়ে বড় সমস্যা আবাদ এবং পরিচর্যা প্রযুক্তিসহ উন্নতমানের চারা ও কলম অপ্রতুলতা। দক্ষিণাঞ্চলে বারি উদ্ভাবিত রসালো এ ফলের চারা ও কলম চাষি পর্যায়ে পৌঁছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অঞ্চলে বারি ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই)’র হাতে গোনা কয়েকটি নার্সারি থাকলেও তার খোঁজ বেশিরভাগ মানুষই জানে না।
বারি’র মতে, পাকা আমে যথেষ্ট পরিমাণ ক্যারোটিন ও ভিটামিন-এ এবং খনিজ থাকে। এমনকি ভিটামিন-এ’র দিক থেকে আমের অবস্থান বিশ্বের সব ফলের ওপরে। এমনকি স্বাদ-গন্ধ, পুষ্টিমান ও ব্যবহার বৈচিত্রে আম এখনো তুলনাহীন বলে দাবি পুষ্টিবিদদের। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রায় ২০টি উন্নতমান, স্বাদ ও উচ্চ ফলনশীল আমের জাত উদ্ভাবন করেছে। এ সবের মধ্যে ‘মহানন্দা’ বা বারি আম-১, বারি আম-২, আ¤্রপালি বা বারি আম-৩, হাইব্রিড আম বা বারি আম-৪, বারি আম-৫, বারি আম-৬, বারি আম-৭, বারি আম-৮, কাঁচা মিঠা বা বারি আম-৯ অন্যতম। বারি উদ্ভাবিত এসব আমের ওজন দেড়শ’ গ্রাম থেকে ২৭০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। এসব আমের ফলন হেক্টর প্রতি ২৫ টন।
মাঠ পর্যায়ের কৃষিবিদদের মতে, আবাদ ও উৎপাদন উপযোগী জলবায়ুর কারণে দক্ষিণাঞ্চলকে আম আবাদের অন্যতম ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। আর সে লক্ষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মাঠ কর্মীদের উদাসীনতা পরিহার করে আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করারও তাগিদ দিয়েছেন। ডিএই’র বরিশাল অঞ্চলের দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে অধিকতর গুরুত্ব প্রদানের কথা বলা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।