আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর একটি দক্ষিণ কোরিয়া। কিন্তু সেখানেও ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়ার পরও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না এটি।
শুরুতে দেশটির করনা পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ না থাকলেও আকস্মিকই তা চলে যায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রথম করোনাভাইরাস রোগী সনাক্ত হয় ২০ জানুয়ারি। মহামারি ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীনের উহান শহর থেকে আসা এক নারীর শরীরে সর্বপ্রথম ধরা পড়ে এটি। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে নেয়া হয় সেলফ কোয়ারান্টাইনে।
পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে দেশটিতে আরো ৩০ জন করোনায় আক্রান্ত হন। তবে পরিস্থিতি তখনও ছিলো সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু নাটকীয়তার শুরু হয় এরপর থেকেই।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি একজন মধ্যবয়স্ক নারী একটি ছোট ট্রাফিক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ডায়গু শহরের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই ৯ এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি স্থানীয় এক চার্চে দু’বার যান উপাসনায় অংশগ্রহণ করতে। কিন্তু এর মাঝেই ১৫ তারিখে তার জ্বর ধরা পড়ে এবং চিকিৎসকরা তাকে করোনাভাইরাসের জন্য পরীক্ষা করতে এবং একই সঙ্গে সেলফ আইসোলেশনে থাকার পরমার্শ দেন।
কিন্তু তিনি চিকিৎসকদের পরামর্শ উপেক্ষা করে ১৬ তারিখ শুধু চার্চেই নয়, এক বন্ধুর সঙ্গে রেস্তরাতেও যান।
১৭ তারিখ তার অবস্থার অবনতি হলে তিনি অবশেষে করোনাভাইরাসের জন্য পরীক্ষা করান। ১৮ তারিখে তার ফলাফল পজিটিভ আসে এবং তিনি হন দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ‘৩১তম রোগী’।
এর কিছুদিনের মধ্যেই দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা রাতারাতি বাড়তে থাকে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ সেই চার্চের সদস্য যেখানে সেই নারী একবার নয়, দু’বার গিয়েছিলেন।
কোরিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার (কেসিডিসি) -র উপাত্ত অনুযায়ী, সেই নারী অর্থাৎ ‘রোগী ৩১’ যে দু’বার চার্চে গিয়েছিলেন, সেখানে সেসময়ে মোট ৯ হাজার ৩০০ জন মানুষ ছিল যাদের মধ্যে ১ হাজার ২০০ জনের শরীরে পরবর্তীতে ফ্লু এর মত উপসর্গ ধরা পড়ে পরবর্তী দিনগুলোতে।
এছাড়া তিনি যেই রেস্তরায় খেতে গিয়েছিলেন, সেখানে কত মানুষ ছিল, সেই হিসাব অবশ্যই পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে এই একই চার্চের বেশ কিছু সদস্য ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারির মাঝে ডায়গুর কাছেই আরেক শহর চেওংডুর এক হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে। এই ডায়গু আর চেওংডু, এই দুই শহরেই সমগ্র দক্ষিণ কোরিয়ার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের ৮০ ভাগ অবস্থিত।
ধারণা করা হচ্ছে এই ৩১ নম্বর রোগীই দেশটিতে করোনার মহামারি রূপ ধারণ করার ক্ষেত্রে দায়ী। কিন্তু একটু সচেতনতাই রুখতে পারতো এই ভয়াবহতা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।