জুমবাংলা ডেস্ক: ফেনীর সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা দরিদ্র, অসহায় ও সুন্দরী ছাত্রীদের টার্গেট করতেন এবং নানা প্রলোভনে তাদেরকে যৌ’ন নি’র্যাতন করেছেন বলে সাক্ষ্য দিয়েছেন ওই মাদ্রাসার শিক্ষক খুজিন্তা খানম।
তিনি আদালতকে বলেন, অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
বুধবার খুজিন্তা খানমসহ চারজন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালত আগামীকাল বৃহস্পতিবার আরও তিন সাক্ষীকে হাজির রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া নুসরাতের ওপর যৌ’ন নির্যাতন মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ৫ আগস্ট তারিখ ধার্য করেন।
বুধবার সিরাজসহ ১৬ আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক মমিনুর রশিদ প্রথমে সোনাগাজী ফাজিল মাদ্রাসার বাংলার প্রভাষক খুজিন্তাকে সাক্ষ্য দেওয়ার আহ্বান জানান।
খুজিন্তা সিরাজের যৌ’ন নির্যাতনের নানা কাহিনী তুলে ধরে বলেন, ২০০০ সালে সিরাজ মাদ্রাসার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ছাত্রীদের ওপর যৌ’ন নির্যাতন শুরু করেন। নারী শিক্ষক হওয়ায় ছাত্রীরা তার কাছে এসব অভিযোগ করেছেন। তিনি অধ্যক্ষের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বললে তিনি ক্ষুব্ধ হতেন।
খুজিন্তা জানান, নুসরাত ছাড়াও কয়েক মাস আগে আরেক ছাত্রীকে যৌ’ন নির্যাতন করেছে অধ্যক্ষ। নুসরাতের ওপর হামলার বর্ণনাও দেন খুজিন্তা। তিনি বলেন, নুসরাত আগুন আগুন চিৎকার করতে করতে তিনতলা থেকে নিচে নেমে আসছিল। তার গায়ে আগুন জ্বলছিল। তিনি দৌড়ে কাছে যান। তখন নুসরাতের শরীরের বোরকা ও সালোয়ার-কামিজ পুড়ে যায়। এ সময় তিনি ও মাদ্রাসার আয়া বেবী রানী দাস তাদের ওড়না খুলে নুসরাতের শরীরে জড়িয়ে দেন। মাদ্রাসার রেলিংয়ে থাকা একটি লুঙ্গি নুসরাতের গায়ে জড়িয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
খুজিন্তা জানান, মাদ্রাসার অধ্যক্ষের অনুগত নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, মোহাম্মদ জোবায়ের, পপি ও মনি প্রত্যক্ষভাবে নুসরাত হ’ত্যায় জড়িত। একই তথ্য জানিয়ে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে মাদ্রাসার আয়া বেবী রানী দাস, ছাত্রী আকলিমা আক্তার ও ছাত্র কায়ছার মাহমুদ। সাক্ষ্য শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন।
গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের শরীরে আগুন দেয় সিরাজের সমর্থকরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ মামলায় বুধবার পর্যন্ত ২৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।