একজন অবসর নিয়েছেন, আরেকজনের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু। ডেভিড ওয়ার্নার-স্যাম কনস্টাস দুজনেই বিবিএলে একই দলে খেলছেন প্রতিনিয়ত জনপ্রিয়তা বাড়ছে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের। কিছু ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গেও এসব টুর্নামেন্ট সাংঘর্ষিক হয়ে উঠতে দেখা যায়। তবে সেই বিভেদ মিটিয়ে তারকা ক্রিকেটারদের আরও বেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে আকৃষ্ট করতে আনা হচ্ছে নতুন সব নিয়ম। তেমনই কিছু অদ্ভুত নিয়মের প্রস্তাব উঠেছে অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগে (বিবিএল)। এর মধ্যে রয়েছে– এক বলেই দুই রানআউট, মেডেন ওভার দিলেই ব্যাটারকে আউট ঘোষণার মতো নিয়ম!
বর্তমানে বিগ ব্যাশের ১৪তম আসর চলছে, যেখানে বাকি কেবল শিরোপানির্ধারণী ম্যাচ। আগামী ২৭ জানুয়ারি আসরের ফাইনালে মুখোমুখি হবে হোবার্ট হারিকেন্স ও সিডনি থান্ডার। এরই মাঝে বিবিএলের পরবর্তী আসর থেকে নতুন কিছু নিয়ম চালুর আলোচনা চলছে। আন্তর্জাতিক ফরম্যাটে খেলা ক্রিকেটারদের ওয়ার্কলোড বিবেচনায় অদ্ভুত নিয়মগুলোর প্রস্তাব এসেছে বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যম ‘দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’।
অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের বরাতে গণমাধ্যমটি বলছে– কয়েকটি নিয়ম পরিবর্তনের প্রস্তাবনা নিয়ে ‘ক্লোজডোর’ কর্মশালা হয়েছে, যেখানে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে সেসব প্রস্তাব, পরবর্তী মৌসুমেই সেগুলো চালুর লক্ষ্যও রয়েছে। তবে বিগ ব্যাশ ও তাদের স্টেকহোল্ডারদের কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কিছু প্রকাশ্যে আনেনি। খেলার মানোন্নয়ন ও বিবিএলকে আরও সফল টুর্নামেন্টে রূপ দিতে কিছু বিষয় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন নীতি-নির্ধারকরা।
শুরুর দিকে, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) বড় রান এবং দ্রুততম সময়ে খেলা শেষ করার মতো বিষয়ে আগ্রহী ছিল। দ্রুত ম্যাচ শেষ করলে ওয়ার্কলোড কমবে তারকা খেলোয়াড়দের, এটি লিগের গুণমান উন্নত করবে বলেও বিশ্বাস তাদের। এমন ধারণা তৈরি হয়েছিল যুক্তরাজ্যের আরও সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট ‘দ্য হান্ড্রেড’-এর অনুসরণে। ক্রিকেটারদের ক্লান্তি ও ওয়ার্কলোড কমিয়ে তাদের সেরা পারফরম্যান্স বের করে আনাই লক্ষ্য অজি ক্রিকেট বোর্ডের।
আলোচনায় রয়েছে যেসব প্রস্তাব
ডাবল প্লে রুল
এক বলে দুই ব্যাটার আউটের নিয়মকে বলা হচ্ছে ‘ডাবল প্লে রুল’। যদি দুই ব্যাটার একই সময়ে ক্রিজের বাইরে থাকেন, তাহলে একটি বলের সাহায্যে উভয় প্রান্তের উইকেট ভেঙে দিলে দুই ব্যাটারই আউট হয়ে যাবেন। সাধারণত রানআউটের ক্ষেত্রে একজন ব্যাটারকেই ক্রিজ ছাড়তে হয়, এই নিয়মের প্রয়োগ হলে একসঙ্গে বিদায় হবে দুজনেরই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একজনকে রানআউট করার পর একই বলে আর এক ব্যাটারকে রান আউট করা যায় না।
ডিএইচ : ‘এ ডেজিগনেটেড হিটার’
বিবিএলের প্রস্তাবনায় আসা আরেকটি নিয়মের নাম– ‘ডেজিগনেটেড হিটার’। এই নিয়মে একটি দলকে যেকোনো একজন ক্রিকেটার বেছে নিতে বলা হবে, যিনি শুধু ব্যাট করবেন। ফিল্ডিং না করলেও চলবে। তার বদলে নামানো যাবে অন্য ফিল্ডার। একইভাবে কোনো বোলারের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম করা হতে পারে। তাহলে বোলিং কোটা পূরণ হলেই উঠে যাবেন তিনি। এভাবে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা (উদাহরণস্বরূপ– স্টিভ স্মিথ, মার্নাস লাবুশেনরা কেবল ব্যাটিং এবং প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্করা কেবল বোলিং করবেন) আরও বেশি সময় বিগ ব্যাশে সময় দিতে পারবেন।
টানা দুই ওভার বা ১২ বল বোলিং
ইংলিশ লিগ ‘দ্য হান্ড্রেড’–এ খেলা হয়ে থাকে ১০০ বলে। যেখানে ওভার হয় ৫ বলে, কোনো দল চাইলে একজনকে দিয়ে দুই ওভার বা টানা ১০ বল করতে পারে। তেমনি বিগ ব্যাশেও টানা ১২ বলের নিয়ম আসতে পারে। এতে ফিল্ড সেট-আপেও তেমন বদলানো লাগবে না, ফলে তারা আরও দুর্দান্ত কোনো বল বাঁচানোর মতো মনোযোগী হতে পারবেন। তবে কোনো বোলারের চার ওভারের কোটায় কোনো পরিবর্তন হবে না। ২০ ওভারের ম্যাচে একজন বোলারের নির্ধারিত ওভার অপরিবর্তিতই থাকবে।
মেডেন ওভারের নিয়মে পরিবর্তন
এই নিয়মে কোনো ব্যাটার দিলেই টানা ৬ বল ডট বা এক ওভার মেডেন দিলেই তিনি আউট বলে বিবেচিত হবেন। এর বাইরে মেডেন ওভারের জন্য বাড়তি সুবিধাও থাকতে পারে ওই বোলারের জন্য। মেডেন পেলে তিনি পাঁচ ওভার (নির্দিষ্ট কোটার চেয়ে এক ওভার অতিরিক্ত) বল করতে পারবেন। প্রস্তাবিত এসব নিয়মের কোনোটিই এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে পরবর্তী মৌসুম শুরুর আগে তা নিয়ে আলোচনায় বসবে সিএ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।