জুমবাংলা ডেস্ক: আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল হোসেন আলম (হিরো আলম) ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, নির্বাচন কারচুপি করতে যদি দশ জন সিল মারতে আসে তো আপনারা ২০ জন বের হয়ে আসবেন। সবাই যদি রুখে দাঁড়ান কেউ আসন ছিনিয়ে নিতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) নির্বাচন ভবনে ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার তিনি এমন আহ্বান জানান।
হিরো আলম বলেন, আমি জানি দেশবাসী আমার এই নির্বাচনের দিকে আশা রাখবে। আপনারা ভোট দেন, না দেন, কেন্দ্রে আসবেন। কেউ যদি সিল মারে, আমার কথা হচ্ছে – যদি ১০ জন সিল মারতে আসে আপনারা ২০ জন বের হবেন। যাতে সিল না মারতে পারে। তাহলে এরকম করে যদি সবাই রুখে দাঁড়ান কেউ আর সিল মারতে পারবে না। আমাদের আসন ছিনিয়ে নিতে পারবে না। আপনাদের নীরবতার কারণেই কিন্তু জোর করে আমাদের আসন ছিনিয়ে নেয়। জোর করে অন্য প্রার্থীকে বিদায় ঘোষণা করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার ভেতরে একটা নিরাশা ছিল যে, ’ইসিতে বোধহয় রায় পাব না। আসলে সত্যের জয় সবসময় হয়। আমি জোর গলায় বলেছিলাম যে, আমার সমর্থকদের স্বাক্ষর ঠিক আছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা যেদিন যাচাই করেছেন তাদের সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল। ওখানে আমার ভোটাররা উপস্থিত ছিলেন। আমি জিজ্ঞেস করতে বলেছিলাম, কিন্তু তিনি জিজ্ঞেস করেন নাই। এবং তিনি বলেছিলেন আমার সমর্থকদের স্বাক্ষরে মিল নাই। এখানে ইসি দেখেছে স্বাক্ষর মিল আছে। এখানে সবকিছু মিল করে দেখেছে আমি সঠিক আছি। সবকিছু বিবেচনা করে ইসি আমাকে বৈধ ঘোষণা করেছে। ‘
আস্থা ফিরে পেলেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে এ জনপ্রিয় ইউটিউবার বলেন, ‘আস্থার জায়গাটা তো অবশ্যই ভালো। এই যে দেখেন – আমি কিন্তু বারবার বলেছিলাম আমি (প্রার্থিতা) ফিরে পাব না। আজ (প্রার্থিতা) ফিরে পেয়েছি। এই রকম আজ হিরো আলম একটা ফিরে পেয়েছে। আরো যখন দশটা হিরো আলম ফিরে পাবে, আস্তে আস্তে আমাদের ইসির ওপর যে মানুষের ভুল ধারণা আছে এগুলো দূর হয়ে যাবে। মানুষের ইসির ওপর আস্থা আসবে, সেই হিসেবে জনগণ সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা করবে। যেই রকম আজ আমি এখানে সুষ্ঠু বিচার পেয়েছি। দেশবাসী দোয়া করবেন যেন ঢাকা-১৭ আসনে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে পাই। ‘
তিনি বলেন, ব্যালটেই আমার বেশি আস্থা। এর আমি ভোট করেছি, যেহেতু ছয়-নয় করেছে, তাই ইভিএমের প্রতি আমার আস্থা নাই। প্রতিদ্বন্দ্বিতা বলতে কী, এমপি-মন্ত্রী খোঁজ নিয়ে দেখেন। কেউ ঢাকা শহরে ছিল না। গ্রাম থেকে এসে ঢাকা শহরে বাসা নিয়েছে। তারপর জনপ্রিয়তা অর্জন করে নিয়েছে। তো আমাকে, হিরো আলমকে তো সারা বিশ্ব চেনে। জনপ্রিয়তা এবং সেই ভালোবাসায় জনগণ আমাকে ভোট দেবে। এখানে ক্ষমতাশালী বা মার্কা কী, তা দেখে ভোট দেবে না। এখানে প্রার্থী দেখে ভোট দেবে। লুটপাট করবে না, জনগণের জন্য কাজ করবে এরকম একটা ছেলেকে নিয়ে আসবে। আমি বেশি কিছু করতে পারবো না। কারণ সময় পাওয়া যাবে ছয় মাস। বস্তিবাসীর রাস্তাঘাট খুব খারাপ, এগুলো কাজ করতে হবে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও করব।
গত ১৮ জুন মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় হিরো আলমসহ আট প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন। এরপর ২০ জুন তিনিসহ চার প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন।
বৃহস্পতিবার আপিলের শুনানি শেষে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম ও জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসানের মনোনয়ন বৈধতা পেয়েছে। তারা ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। আগামী রোববার আদেশ জারি হবে। তবে অন্য দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী তারিকুল ইসলাম ভুঁঞা এবং আসাদুজ্জামান জালাল প্রার্থিতা ফিরে পাননি।
তাদের নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী দাঁড়াল নয় জন। অন্য সাতজন হলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, জাতীয় পার্টির জিএম কাদেরপন্থী সিকদার আনিসুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন, গণতন্ত্রী পার্টির মো. কামরুল ইসলাম (চেয়ারম্যান মনোনয়ন দিয়েছে), গণতন্ত্রী পার্টির অশোক কুমার ধর (মহাসচিব মনোনয়ন দিয়েছে), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট’র মো. আকতার হোসেন ও তৃণমূল বিএনপি’র শেখ হাবিবুর রহমান।
তফশিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ জুন। প্রতীক বরাদ্দ ২৬ জুন। ভোটগ্রহণ হবে ১৭ জুলাই।
গত ১৫ মে চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যু হলে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।