দাবানল শুধু ক্ষতি করে, এই ধারণা সঠিক নয়। এর কিছু উপকারও আছে। দাবানল শুধু যে মাটির ওপরের গাছপালায় জ্বলে, তা নয়; মাটির নিচের গাছপালার শেকড়েও আগুন জ্বলতে পারে। যখন মাটিতে প্রচুর জৈব পদার্থ জমা থাকে, তখন মাটির নিচের আগুন দীর্ঘ সময় ধরে—কখনো কখনো পুরো মৌসুমজুড়ে জ্বলতে থাকে।
কিছু গাছের প্রজাতির টিকে থাকার জন্য দাবানল অপরিহার্য। যেমন কিছু গাছের বীজ থেকে অঙ্কুর গজানোর জন্য উত্তাপের প্রয়োজন হয়। চ্যাপারেল উদ্ভিদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে ম্যানজানিটা, চামিস (Adenostoma fasciculatum) এবং স্ক্রাব ওক (Quercus berberidifolia)। এরা আগুনের পরেই বীজ অঙ্কুরিত করতে পারে। এই উদ্ভিদের পাতায় দাহ্য পদার্থ বেশি থাকে। এই পাতা আগুনকে উসকে দেয়। এভাবেই এরা পুনরায় জন্মাতে পারে। এসব উদ্ভিদের জীবনচক্র সম্পূর্ণ করতে দাবানল প্রয়োজন। কিছু উদ্ভিদের জন্য কয়েক বছর পরপর আগুনের প্রয়োজন হয়। আবার কিছু প্রজাতির দাবানল প্রয়োজন হয় কয়েক দশক পরপর।
দাবানলে লাখো প্রাণী মারা যায় ঠিকই, তবে বাস্তুতন্ত্রকে স্বাস্থ্যকর রাখতেও দাবানল সহায়তা করে। তাই বলে মানবসৃষ্ট বা যে দাবানলের জন্য মানুষের কার্যকলাপ দায়ী, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আসলে, প্রাকৃতিক দাবানল বনের জন্য সহায়ক। গাছের ক্ষতিকারক পোকামাকড় ও রোগ জীবাণু মেরে ফেলে দাবানল।
ঝোপঝাড় ও আগাছা পরিষ্কার করার মাধ্যমে নতুন ঘাস, ভেষজ উদ্ভিদ এবং ঝোপ জন্মানোর সুযোগ করে দেয়। ফলে প্রাণী ও পাখিদের খাদ্য ও বাসস্থান তৈরি হয় নতুন করে। হালকা মাত্রার আগুন বনভূমির মেঝেতে পড়ে থাকা আবর্জনা ও ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে ফেলে। মাটিতে নতুন পুষ্টি যোগায়। মাটিতে সূর্যের আলো পৌঁছানোর জন্য জায়গা তৈরি করে দেয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।