জুমবাংলা ডেস্ক: শেরপুর জেলায় দুইবার করে চারা রোপণ পদ্ধতিতে আমনের চাষাবাদ বাড়ছে। কৃষকরা জানান, আমরা অনেক কষ্ট করছি। এখন বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলে আগে রোপণ করি। একমাস পর আবার এ ধানের চারা তুলে অন্য ক্ষেতে রোপণ করি। এখন বন্যায় পানিতে ধানক্ষেত ডুবলেও নষ্ট হবেনা। ফলনও আরো বেশি হবে। কথাগুলো বলেন, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল মধ্যপাড়া গ্রামের কৃষক তারা মিয়া। তিনি জানান, প্রতি বছর প্রায় আড়াই একর জমি আমন ধান চাষ করেন। এর মধ্যে বন্যা কবলিত প্রায় দেড় একর। এ দেড় একর জমিতে আগে প্রতি বছর পাহাড়ি ঢল আর বন্যার পানিতে ডুবে আমন ধান ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। কয়েক বছর যাবত তারা বন্যা কবলিত এলাকার কৃষকের কাছ থেকে শোনে নিজেরাও ওই পদ্ধতিতে বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের আমন ধানের চাষ করছেন। পাহাড়ী ঢলের পানিতে ডুবলেও ক্ষেতের কোনো ক্ষতি হয় না। বরং ফলন আরো বেশি হয়। একি কথা শোনান তার প্রতিবেশী আমজাদ হোসেন, ফকির মিয়া, ফজল মিয়া, আলমগীর হোসেনসহ বন্যা কবলিত এলাকার অনেক কৃষক। আবহাওয়া অনুক’ুলে থাকায় এখন সবাই আমন ধান চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন । সরেজমিন ঘুরে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তার সাথে কথা বলে ওঠে আসে এমন তথ্য।
কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি অর্থ বছরে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার হেক্টর জমি। এসব জমিতে প্রতি বছর আষাঢ়ের প্রথম দিকেই শুরু হয় চাষাবাদ। এবার কেউ আগাম চাষাবাদের জন্যে বীজতলায় আগেই বীজ বপন করেছেন। তবে এখন চলছে পুরোদমে বীজ তলা থেকে উত্তোলন করে রোপণের কাজ। বন্যা কবলিত কৃষকরা আগেই বীজ তলা থেকে চারা উত্তোলনের পর ঘন করে অল্প জমিতে রোপণ করেছিলেন। এখন আবার সেখান থেকে উত্তোলন করে অন্যত্র রোপণ করছেন। এসব রোপা আমনের চারা বন্যা সহনীয়। বরং ফলনও বেশি হয়। এ জন্য দিন দিন এ পদ্ধতিতে আমনের চাষাবাদ বাড়ছে। নিশ্চিন্তে চাষাবাদ করছেন কৃষকরা।
বিলভরট গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম ও কাকিলাকুড়ার আমজাদ আলীসহ অনেকে জানান, বোরো চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের ন্যায্য মূল্যও পেয়েছেন । এজন্য আগেভাগেই অনেকে বীজতলা তৈরি করে বীজ বপন করে এখন ক্ষেতে রোপণ করছেন। তাদের মতে, দিন দিন হাইব্রিড জাতের ধান চাষাবাদ বাড়ছে। তবে কতিপয় কৃষক পাইজম, নাতিশাল ও তুলশীমালাসহ দেশীয় জাতের কিছু ধানের চাষ করছেন। আমজাদ আলী বলেন, এ মাসে মুসলধারে বৃষ্টি হওয়ার কথা। কিন্তু সেই পরিমাণ বৃষ্টি এখনো হয়নি। এ জন্য অনেকেরই আমনের চাষাবাদে বিলম্ব হচ্ছে। বকচর গ্রামের আমের আলী বলেন, এখন সেচ দেয়ার মতো সুযোগও নেই। এজন্য বৃষ্টির ওপরই ভরসা। তবে এলাকার কৃষকরা এখন আমন চাষাবাদে ব্যস্ত।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, বন্যা কবলিত এলাকার কৃষকরা ওই পদ্ধতি অবলম্বন করছেন। এতে বন্যার কবল থেকে সহজেই রক্ষা পায়। ধানের ফলনও ভালো হয়। এ জন্য দিন দিন বাড়ছে দু’বার করে আমনের চারা রোপণ পদ্ধতিতে চাষাবাদ। তিনি আরো বলেন, বৃষ্টির কারণে কিছুটা ব্যহত হলেও এখনও অনেক সময় রয়েছে। এতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। কারণ সামনে আরো এক মাস আমন চাষাবাদের উপযুক্ত সময়। এতে ফলনেরও কোনো সমস্যা হবেনা। বৃষ্টি হলে এ সমস্যা সমাধান হবে। তবে নতুন এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে বন্যাকে হার মানাবে কৃষকরা। ফলনে বিপ্ল ব ঘটবে আমন চাষে। এমনটাই মনে করেন কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা। সূত্র: বাসস
![](https://inews.zoombangla.com/wp-content/uploads/2024/03/34-5.jpg)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।