চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষের চুক্তির চলমান প্রক্রিয়ার বৈধতা প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ফাতেমা নজীব চুক্তি প্রক্রিয়া অবৈধ ঘোষণা করেছেন। বেঞ্চের জুনিয়র বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ার চুক্তি প্রক্রিয়া বৈধ ঘোষণা করেছেন। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ পৃথকভাবে এ রায় ঘোষণা করেন।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এখন নিয়মানুযায়ী প্রধান বিচারপতি বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ গঠন করে দেবেন। তখন সেই বেঞ্চে বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে।
এদিকে, চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ কনটেইনার টার্মিনালগুলো পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশি কোম্পানির হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্তে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নগরী। গত ১৭ নভেম্বর লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল ৩০ বছরের জন্য ডেনমার্কভিত্তিক এপি মোলার মায়ের্স্ককে দেওয়া হয়েছে। একই দিনে ঢাকায় বুড়িগঙ্গা তীরের পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল ২২ বছরের জন্য সুইজারল্যান্ডভিত্তিক মেডলগকে দেওয়ার চুক্তি হয়।
কিছু সংগঠন চুক্তি বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এর মধ্যে আছে চট্টগ্রাম শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ), বন্দর রক্ষা পরিষদ, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি, কিছু বামপন্থি দল, জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলাম। তাদের প্রশ্ন, নির্বাচনের আগে এমন দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার কতটা আছে, তা নিয়ে। এ ছাড়া চুক্তির বিস্তারিত গোপন রাখা, দরপত্রের দ্রুত মূল্যায়ন ও অভিজ্ঞদের মতামত না নেওয়া নিয়ে জোর সমালোচনা এবং দেশের আয়ের বড় অংশ বিদেশি অপারেটরের কাছে যাবে—এমন আশঙ্কার কথা তুলে ধরছেন আন্দোলনকারীরা।
গতকাল আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ ও ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
এর আগে গত ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষের চুক্তির চলমান প্রক্রিয়ার বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়। একই সঙ্গে আদেশের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করা হয়।
গত ৩০ জুলাই এনসিটি পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষের চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে যে কোনো অপারেটরকে এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব (নিযুক্ত) দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুযায়ী ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং (দরপত্র আহ্বান) নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয় রুলে।
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন রিটটি করেন। রিটে নৌ সচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়। ‘নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে’ শিরোনামে গত ২৬ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ প্রতিবেদনসহ এই বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এনসিটি পরিচালনায় ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।
এর আগে ১৩ নভেম্বর রুলের শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের কাছে হস্তান্তর করা হবে না বলে আদালতকে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল। পরে ২৫ নভেম্বর তিনি বলেন, নির্বাচিত সরকার যে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, অন্তর্বর্তী সরকারও একই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল। এখানে বছরে ১০ লাখ কনটেইনার ওঠানো-নামানো সম্ভব। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে দেশীয় প্রতিষ্ঠান দিয়ে পরিচালিত এই টার্মিনাল বর্তমানে নৌবাহিনী নিয়ন্ত্রিত চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড দিয়ে চালানো হচ্ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এনসিটি থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ১ হাজার ২১৬ কোটি টাকা। হাইকোর্টে শুনানির কারণে চুক্তি কার্যকর হয়নি, তবে সরকার টার্মিনালটি সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়ার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিচ্ছিল।
চট্টগ্রামের অন্য দুটি টার্মিনাল চিটাগং কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) এবং জেনারেল কার্গো বার্থ (জিসিবি) দেশীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে পরিচালিত। সিসিটি মোট কনটেইনারের ১৯ শতাংশ এবং জিসিবি ৩৭ শতাংশ হ্যান্ডেল করে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের আমদানি-রপ্তানির প্রায় ৯০ শতাংশ পরিচালনা হয়। ২০২৩ সালে এই বন্দরে ৩০,৫০,৭৯৩ একক কনটেইনার পরিবহন হয়েছে। ২০২৪ সালে তা বেড়ে হয় ৩২,৭৫,০০০ একক, যা ৭.৩৬ শতাংশ বৃদ্ধি।
বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি নিয়ে চলছে তীব্র সমালোচনা। চুক্তির বিস্তারিত গোপন রাখা হয়েছে। কত মাশুল, ট্যারিফ, চার্জ বা শুল্ক-কর সরকার পাবে—তা প্রকাশ করা হয়নি। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, সরকারি নীতিমালা ও পিপিপি গাইডলাইন অনুযায়ী চুক্তি সম্পূর্ণ প্রকাশ নিরাপদ নয়। যদিও অনেক সমালোচক মনে করছেন, আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা উচিত ছিল। এ ছাড়া চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন হওয়ায় অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হয়নি।
সরকার যুক্তি দিচ্ছে, দক্ষতা বাড়াতে বিশ্বমানের অপারেটর আনা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে একটি জাহাজ বার্থিংয়ের জন্য গড়ে তিন-চার দিন অপেক্ষা করতে হয়, যেখানে সিঙ্গাপুরে সময় লাগে ১২-২৪ ঘণ্টা। কনটেইনার খালাসের সময় ৭-১০ দিন লাগে। বিদেশি অপারেটররা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে টার্ন-অ্যারাউন্ড টাইম কমিয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারবে। লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালে প্রায় ৬,৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে এবং স্বাক্ষরের পরপরই ২৫০ কোটি টাকা সাইনিং মানি পাওয়া গেছে। পানগাঁওয়ে মেডলগ ৪৯০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে এবং ১৮ কোটি টাকা সাইনিং মানি দিয়েছে। এতে দেশের কোনো অর্থ ব্যয় হচ্ছে না। লালদিয়ায় বছরে ৮-১০ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডেল করলে প্রতি কনটেইনারে সরকার পাবে ২১-২৩ ডলার, আর পানগাঁওয়ে ২৫০ টাকা।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘বি টার্মিনাল বা লালদিয়ার মতো নতুন প্রকল্পে বিদেশি বিনিয়োগ আনা যেতে পারে, কিন্তু এনসিটি পরিচালনায় বিদেশি অপারেটরের কোনো প্রয়োজন নেই। এখানে বিদেশি অপারেটর এলে আয়ের বড় অংশ তারা নেবে।’
সমালোচকরা মনে করছেন, দরপত্র খোলামেলা, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক হওয়া উচিত ছিল। কাস্টমস সংস্কার, আধুনিক স্ক্যানার, স্বয়ংক্রিয় রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এবং দক্ষ জনবল নিশ্চিত করলে কার্যকারিতা ১-২ দিনে আনা সম্ভব।
চুক্তি ঘোষণার পরই চট্টগ্রামে আন্দোলন শুরু হয়। মশাল মিছিল, মানববন্ধন এবং সড়ক অবরোধের মাধ্যমে শ্রমিক ও নাগরিকরা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। আর এসব কর্মসূচির কারণে হালিশহর, আগ্রাবাদ, বড়পোল ও বন্দরগেট এলাকায় প্রায়ই অসহনীয় যানজট তৈরি হচ্ছে। বিলম্বিত হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি সেবা। রাস্তা বন্ধ করতে আগুন জ্বালানো হয়, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে।
বন্দর রক্ষা পরিষদের উপদেষ্টা হাসান মারুফ রুমি বলেন, ‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর বিদেশিদের হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভৌগোলিক ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এনসিটি পরিচালনা দেশীয় প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে দক্ষতার সঙ্গে করছে। বিদেশি অপারেটর প্রয়োজন নেই।’
শ্রমিক নেতারা মনে করছেন, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি নির্বাচনের আগে দ্রুত সম্পন্ন করা হয়েছে। বন্দর সিঅ্যান্ডএফ ও পরিবহন শ্রমিকরা মনে করছেন, নতুন ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি কমবে এবং কাজের গতি বৃদ্ধি পাবে।
চট্টগ্রামের বন্দরে কনটেইনার পরিবহন ২০২৪ সালে বেড়ে ৩২,৭৫,০০০ একক হয়েছে। লালদিয়া টার্মিনালে বছরে ৮-১০ লাখ কনটেইনার ওঠানো-নামানো সম্ভব, আর পানগাঁওয়ে ১,৬০,০০০ একক। এই বিনিয়োগ বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে করা হচ্ছে, এতে দেশীয় অর্থ ব্যয় নেই, তবে রাজস্বের বড় অংশ বিদেশি অপারেটরের কাছে যাবে।
বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি নিয়ে বিতর্ক-সমালোচনা না কমে, বরং দিনদিন তীব্র হচ্ছে। দরপত্রের মূল্যায়ন এক দিনে করা হয়েছে, অভিজ্ঞদের মতামত নেওয়া হয়নি—এমন সব ইস্যু সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। বিদেশি অপারেটরের জন্য মাশুল বেড়েছে, যা আমদানি পণ্যের মূল্য বাড়াতে পারে। জাতীয় নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনীতির দিক থেকেও উদ্বেগ আছে।
অন্যদিকে বন্দর কর্তৃপক্ষের যুক্তি, সীমিত সক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং দক্ষতা বাড়াতে বিদেশি অপারেটর আনা হচ্ছে। বিদেশি অপারেটররা আধুনিক প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে ‘টার্ন-অ্যারাউন্ড টাইম’ কমাতে পারবে। রাজস্ব আয়ও বাড়বে। যদিও সমালোচকদের মতে, বিকল্প হিসেবে দরপত্র খোলামেলা, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক হলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করতে সক্ষম। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হাইকোর্টের শুনানি ও সরকারের নীতিগত বিবেচনার ওপর নির্ভর করছে।
বিদেশিদের হাতে বন্দর ‘তুলে দেওয়া’ নিয়ে একের পর এক আন্দোলন চলছে। চট্টগ্রাম বন্দরের ইস্যুকে কেন্দ্র করে নগরজুড়ে একের পর এক মিছিল-সমাবেশ দেখা যাচ্ছে। ‘বন্দর রক্ষা’ স্লোগান দেওয়া হলেও, ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন মোড়ে জমায়েত, উত্তেজনা সৃষ্টি এবং প্রতিদিন ভিন্ন ব্যানারে একই লোকজনকে দেখার ঘটনা জনমনে প্রশ্ন তৈরি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা বাড়ছে।
গত বুধবার বিকেলে প্রবর্তক মোড়ে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (টিইউসি) ব্যানারে লাল পতাকা মিছিল হয়। এতে ৭০-৮০ জন অংশ নেন, যার মধ্যে বেশ কয়েকজন নারীও ছিলেন। আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তাদের অনেকেই বলেন, দেশের সম্পদ রক্ষায় এসেছেন। কিন্তু অধিকাংশই নিজেদের প্রকৃত দাবি বা আন্দোলনের মূল ইস্যু ব্যাখ্যা করতে পারেননি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) বন্দর এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও, নগরের বিভিন্ন মোড়ে প্রতিদিনই ছোট-বড় জমায়েত হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের চলাচলে বিঘ্ন, রুটজুড়ে দীর্ঘ যানজট এবং জনদুর্ভোগ প্রকট আকার নিচ্ছে। অফিস শেষে বাসায় ফেরার সময় অনেকের অতিরিক্ত ২-৩ ঘণ্টা লাগছে।
মাঠের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, অধিকাংশ মিছিলে অংশগ্রহণকারীরাই জানেন না আন্দোলনের প্রকৃত দাবি কী। আগ্রাবাদ, হালিশহর, বন্দর সংলগ্ন বস্তি এলাকায় যেসব দিনমজুর বা অদক্ষ শ্রমিক থাকেন, তাদের মজুরি দিয়ে আন্দোলনে আনা হচ্ছে—এমন অভিযোগও রয়েছে।
চট্টগ্রামের সিঅ্যান্ডএফ শ্রমিক দেলোয়ার বলেন, ‘বিদেশি কোম্পানি এলে গেট পারমিট ঝামেলা কমবে, হয়রানি কমবে এবং বেতন সময়মতো পাওয়া যাবে।’
পরিবহন শ্রমিকরাও মনে করছেন, বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশিদের হাতে গেলে গেট পাস হয়রানি কমবে, অন্যদিকে গতি বাড়বে কাজের।
যদিও কেউ কেউ অনেক শ্রমিককে ভয় দেখাচ্ছেন যে, বিদেশি কোম্পানি এলে চাকরি থাকবে না। যার ফলে বিভ্রান্তি বাড়ছে। বন্দরের প্রকৃত শ্রমিকরা যেখানে উন্নত ব্যবস্থাপনা ও হয়রানি কমার আশায় বিদেশি ব্যবস্থাপনাকে স্বাগত জানাচ্ছেন, সেখানে বহিরাগতদের মিছিল-সমাবেশ জনদুর্ভোগ ছাড়া দৃশ্যমান কোনো সুফল দিতে পারছে না।
সূত্রঃ কালবেলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



