দুই বছরে ৭টি বিয়ে, ধরা পড়লেন প্রতারক পাত্রী

পাত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : একাধিক বিয়ের জন্য বিচার, মামলা, সাজার প্রায় সবগুলোতেই আসামি থাকে পুরুষ। তবে এবার এমন একজনের সন্ধান পাওয়া গেছে, যিনি মাত্র দুই বছরে সাতটি বিয়ে করে স্বামীদের সম্পদ লুটে নিয়ে ভেগেছেন। অষ্টমবার বিয়ে করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন পুলিশের হাতে। ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের।

পাত্রী

জানা গেছে, অষ্টম শ্রেণি পাস ২৮ বছর বয়সী ঊর্মিলা আহারিবার প্রতারকচক্রের মূল হোতা। নিজের সহযোগী হিসেবে তৈরি করেছিলেন একটি ‘সাজানো’ পরিবার। যারা পাত্রপক্ষের কাছে নিজেদের পাত্রীর বাবা, মা, ভাই, ফুফু হিসেবেই পরিচয় দিতেন। ফলে কোনো প্রকার সন্দেহের সুযোগ না দিয়ে হয়ে যেত বিয়ে। তারপর টাকা, গয়না হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দিতেন ঊর্মিলা।

‘পাত্রী’ ঊর্মিলা আহারিবারের বাড়ি মধ্যপ্রদেশের জবলপুরের ধনবন্তপুর। জানা গেছে, আট বছর আগে ২০ বছর বয়সেই অজয় আহিরবারের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যায় ঊর্মিলার। তবে বিয়ের কয়েক দিনের মধ্যেই স্বামী মারা যায়। এরপর বাপেরবাড়ি চলে আসেন তিনি। আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল ঊর্মিলা জামাকাপড় সেলাই করে খরচ চালাতেন।

এ সময় রাজস্থানের ভাগচন্দ নামে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। একই সময় শ্যাম নামে এক ব্যক্তির সঙ্গেও পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে ঊর্মিলা যখন এমন প্রতারণার সিদ্ধান্ত নেন, তখন তার সাথে যোগ দেয় অর্চনা ও অমরসিংহ প্যাটেল নামে আরো দুজন। তারাও অস্বচ্ছল পরিবারের। ফলে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতানোর জন্য সবাই মিলে একটি দল তৈরি করে। উর্মিলাকে সামনে রেখে লুটের ব্যবসায় নামে দলটি।

ডিজিটাল মুদ্রায় ভিক্ষা নেন ভিক্ষুক

খোঁজখবর নিয়ে বিয়ে না হওয়া বেশি বয়সের পুরুষদের বের করতেন তারা। তারপর ঊর্মিলাকে পাত্রী সাজিয়ে অন্যরা ঊর্মিলার আত্মীয় হয়ে বিয়ে সম্পন্ন করতেন। এ পর্যন্ত সবই ঠিক থাকে। তারপর সুযোগ বুঝে নগদ টাকা ও গয়না নিয়ে পালিয়ে যেত পাত্রী। বিয়ের চারমাস পর রাজস্থানের প্রথম স্বামীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ও গয়না পালিয়ে যান ঊর্মিলা। তারপর একে একে মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানের বিভিন্ন স্থানে আরো ছয়টি বিয়ে করেন তিনি। একই পদ্ধতিতে টাকা ও গয়না হাতিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যেত ঊর্মিলাসহ তার বাহিনী।

তবে গত বুধবার জবলপুরে একচল্লিশ বছর বয়সী দশরথ প্যাটেলকে বিয়ে করতে গিয়ে ফাঁদে পড়ে যায় ঊর্মিলাবাহিনী। স্থানীয় একটি মন্দিরে দশরথের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন ঊর্মিলা। এর কিছুক্ষণ পরই নগদ টাকা এবং গয়না নিয়ে পালিয়ে যান। কিন্তু ধরা পড়ে যান ঊর্মিলার প্রতিবেশী অর্চনা। তাঁর সূত্র ধরেই এক এক করে ঊর্মিলাসহ পুরো দলটিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রতারণার অভিযোগে এবার হয়তো বিয়ে ছাড়াই ‘শ্বশুরবাড়ি’ থাকতে হবে ঊর্মিলা ও তার বাহিনীকে!