জুমবাংলা ডেস্ক: নওগাঁর নিয়ামতপুরে শুধু দু’মুঠো ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার আশায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ময়েজ উদ্দীন নামে ৮০ বছর বয়সী এক অসহায় বাবা।
সোমবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে নওগাঁর নিয়ামতপুর থানায় ছেলে মুনছের আলী (৩৫) ও পুত্রবধূ সুলতানা বেগমের (৩০) বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন ওই বাবা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পাঁড়ইল ইউনিয়নের দিঘীপাড়া গ্রামের ময়েজ উদ্দীন বার্ধক্যজনিত কারণে বর্তমানে কর্মহীন ও অসহায় হয়ে পড়েছেন। কিন্তু তার ছেলে ভরণপোষণ না দেয়ায় বৃদ্ধ বয়সে শুধু বাঁচার জন্য নিজের খাবার নিজেকে রান্না করে খেতে হয়। যার কারণেই খাবারের নিশ্চিয়তা চেয়ে তিনি এই অভিযোগ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই বৃদ্ধ বাবার প্রতি তার ছেলে খুবই উদাসীন। বাবার তেমন কোনো খোঁজখবর রাখেন না ছেলে। বাবার সঙ্গে মাঝে মধ্যেই ছোট খাটো বিষয় নিয়ে তুমুল ঝগড়া করে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশও হয়েছে। তবে তার প্রতিকার হয়নি। অবশেষে নিরুপায় হয়ে ভরণপোষণের দাবিতে আইনের সাহায্য প্রার্থনা করেছেন তিনি।
কথা হলে ভুক্তভোগী বৃদ্ধ বাবা ময়েজ উদ্দীন ছেলের প্রতি আক্ষেপ করে বলেন, যোগ্য কর্মক্ষম ছেলে থাকলেও না খেয়ে তাকে দিন কাটাতে হয়। বয়সের ভারে বর্তমানে তিনি কিছুই করতে পারেন না। সম্প্রতি তার ভরণপোষণও বন্ধ করে দিয়েছে ছেলে। পুত্রবধূর প্রতি কিছুটা ভরসা করলেও সেও তার ছেলের মতোই আচরণ শুরু করেছে এখন। যেদিন শরীর খুব খারাপ থাকে সেদিন রান্না হয় না তার। না খেয়ে থাকতে হয় সারাদিন। পাড়া-প্রতিবেশীরা খোঁজ নিয়ে কিছু দিলে তিনি খাবার খান। বর্তমানে সব মিলিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে বৃদ্ধর। অসুখ-বিসুখ ও চিকিৎসার কথা বলতেই বৃদ্ধর দুই চোখ বেয়ে অশ্রু নেমে আসে।
কাঁদো স্বরে ময়েজ উদ্দীন বলেন, শুনেছি সরকার নাকি বৃদ্ধ বাবা-মার ভরণপোষণ নিশ্চিত করতে আইন করেছে। সেই ভরসায় শুধু দু’মুঠো ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার আশায় ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি।
ছেলে মুনছের আলী বলেন, বাবার বয়স হয়েছে। সব সময় হয়ত তার চাহিদা পূরণ করতে পারি না। বাবা যে অভিযোগ করেছেন তা ঠিক না।
এ বিষয়ে নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ন কবীর বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তা যাচাইয়ে তদন্ত চলছে। সত্যতা পেলে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।