আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রামাণ্যচিত্রে মালয়েশিয়ায় নিজেদের দুর্দশার কথা জানানো সেই বাংলাদেশির ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে নোটিশ জারির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশটির সুশীল সমাজ। মালয় মেইল জানিয়েছে, একটি সাংবাদিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও মালয়েশিয়ান অভিবাসন বিভাগের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করা হয়েছে।
দ্য সেন্টার ফর ইন্ডিপেন্ডেন্ট জার্নালিজম (সিআইজে) বুধবার বিবৃতিতে বলেছে, ‘ওই ঘটনার পর বিদেশি শ্রমিকদের প্রতি মালয়েশিয়ার নাগরিকদের হিংসা বাড়ছে। বাংলাদেশির ব্যক্তিগত ফোন নম্বর থেকে শুরু করে ফেইসবুক আইডি সবকিছুই অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে তাকে উদ্দেশ্য করে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করছেন।’
‘এ বিষয়টিকে আরও খারাপ করতে অভিবাসন বিভাগ গতকাল ওই ব্যক্তির নাম, পাসপোর্ট নম্বর এবং শেষ ঠিকানা উল্লেখ করে নোটিশ জারি করেছে।’
মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের পদক্ষেপকে স্বাধীন সাংবাদিকতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও মন্তব্য করেছে সিআইজে।
মালয়েশিয়ার নাগরিক সমাজ সংস্থা নামের একটি সংগঠন তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ‘সরকারের এমন পদক্ষেপ বাংলাদেশিসহ অন্য অভিবাসীদের ব্যক্তিগত ক্ষতির কারণ হতে পারে। এটি সামাজিক আতঙ্ক সৃষ্টি করে অভিবাসী শিকারের মতো ঘটনায় রূপ নিতে পারে।’
এই বিবৃতির সঙ্গে অনেক সাধারণ মানুষও সংহতি প্রকাশ করেছেন।
কী আছে ওই প্রামাণ্যচিত্রে: ‘‘লকড আপ ইন মালয়েশিয়া’স লকডাউন’’ শিরোনামের প্রামাণ্যচিত্রে শুধু বাংলাদেশ নয়, আরো কয়েকটি দেশের অভিবাসীরা নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। প্রায় ২৬ মিনিটের ভিডিওটিতে সাড়ে পাঁচ মিনিটের দিকে রায়হান কবির নামের এক বাংলাদেশিকে দেখা যায়।
ভয়েস ওভারের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির চোয়াক জেলায় থাকেন রায়হান। উপস্থাপককে নিজের মোবাইলে একটি ভিডিও দেখান তিনি। সেই ভিডিওতে মালয়েশিয়ান প্রশাসনের কিছু পদক্ষেপের দৃশ্য ছিল। দেখা গেছে, ৬০০ মানুষকে তারা ট্রাকে করে অন্য কোথাও নিয়ে যাচ্ছেন।
রায়হানের অভিযোগ, ‘তারা আমাদের ফাঁদে ফেলেছে। ওষুধ, খাবারসহ সবকিছু দিয়েছে। কিন্তু কেউই বুঝতে পারেনি গ্রেপ্তার করা হবে। তারা খুনি নয়, সন্ত্রাসী নয়। শুধু কাগজপত্রহীন অভিবাসী।’
রায়হানের অবশ্য কাগজপত্রের সমস্যা নেই। বৈধ ওয়ার্ক পারমিট নিয়েই দেশটিতে আছেন তিনি। তবে হৃদয় নামে তার এক বন্ধুর ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হওয়ায় পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।
‘আমার বন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু দোষ তার নয়,’ দাবি করে রায়হান বলেন, ‘তার কোম্পানি ভিসা নবায়ন করেনি। আমি ইমিগ্রেশনে গিয়েছি, পুলিশের কাছে গিয়েছি। আমার বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে গেটে কান্নাকাটি করেছি।’
ভিডিওতে আরেক বাংলাদেশির কথা বলা হয়েছে, যিনি ২০ বছর ধরে দেশটিতে আছেন। উপস্থাপককে নিয়ে রায়হান তার কাছে যান। লকডাউনের সময় তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। রায়হান ইংরেজিতে কথা বললেও ওই ব্যক্তি বাংলায় নিজের দুর্দশার বর্ণনা দেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।