বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, বাংলাদেশে যেসব সেবা সংস্থায় সরকারি কর্মচারী রয়েছে তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এখনো দুর্নীতিতে আসক্ত। তাদের বিরুদ্ধে যেমন কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না তেমনি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কোন নজির দেখা যাচ্ছে না।
![সাব-রেজিস্টার](https://i0.wp.com/inews.zoombangla.com/wp-content/uploads/2025/02/4f5228795b3dd064ed485da53fc5090e-640c3fe8b1cc1-jpg.webp?resize=788%2C443&ssl=1)
সাম্প্রতিক সময়ে এক সাব-রেজিস্টার এর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি নামজারি করার জন্য অবৈধ অর্থ সংগ্রহ করতেন। আইন লঙ্ঘন করে ভুয়া দলিল তৈরি করার অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ভূমি বিরোধ থাকলেও তার নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখিয়েছেন তিনি।
বর্তমানে সরকারি আইন অনুযায়ী ১১৭০ টাকা দিয়ে নামজারি করা যায়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে বিভিন্ন ভূমি অফিসে পাঁচ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। টাঙ্গাইল সদরে ভূমি অফিসের সরকারি কর্মচারীরা কথা বলার সময় এ ধরনের প্রমাণ পাওয়া যায়। ঢাকার ডেমরার বাঁশেরপুল সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পরেও সেবা পেতে বঞ্চিত হন ভুক্তভোগীরা। তাদের দেওয়া অভিযোগ অনুযায়ী অর্থ না দিলে ফাইল সামনের দিকে এগোতে চায় না।
অবৈধভাবে খাজনা নিয়ে ভূমি হস্তান্তরের অভিযোগ রয়েছে কেরানীগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ গড়িয়েছে নিবন্ধন অধিদফতর পর্যন্ত। ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি জানান, তার জমি নিয়ে মামলা চলমান ও জমি নিয়ে স্থগিতাদেশ থাকলেও ভূমি অফিসের সঙ্গে লিঁয়াজু করে সাব-রেজিস্ট্রার জমি রেজিস্ট্রি করেছে। এতে তিনি মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এদিকে, তেজগাঁও রেজিস্ট্রি কমপ্লেক্সে সময় সংবাদের উপস্থিতি টের পেয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যান মোহাম্মদপুরের সাব-রেজিস্ট্রার শাহিন আলম। পরে খাস কামরায় দেখা মিললেও ক্যামেরায় কথা বলেননি তিনি। শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জের তৎকালীন সাব-রেজিস্ট্রার আরিফুর রহমানের বর্তমান কর্মস্থল চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ। অভিযোগের বিষয়ে তিনিও কথা বলেননি। তিনি জানান, অফিসিয়ালি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে পারব না।
আইনজীবীরা বলছেন, ভূমি রেজিস্ট্রেশন আইনে সাব-রেজিস্ট্রারদের দায়মুক্তি দেয়ায় চাইলেও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায় না। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বায়েজিদ ইসলাম বলেন, সেকশন ৮৬ অনুযায়ী, সরল বা সহজ বিশ্বাসে জমি কিনে রেজিস্ট্রেশন করা হলে ক্রয় দাতার বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যাবে না। এই সেকশনটি অনেকটা দায়মুক্তির মতো।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, ভূমি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতি আপাদমস্তক প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে। যারা দুর্নীতি দূর করবেন তারাও কোনো না কোনোভাবে এই অন্যায়ের সুবিধাভোগী। যার ফলে এখানে বিচারহীনতার মানসিকতা তৈরি হয়ে গেছে।
ভূমি ব্যবস্থাপনা পুরোপুরি ডিজিটাল ও দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিত করা গেলে নাগরিকরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাবেন বলে মত টিআইবির।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।