স্পোর্টস ডেস্ক : ফিফার তৎকালীন সহ-সভাপতি জ্যাক ওয়ার্নারের অর্থ কেলেঙ্কারির বিষয়ে অবগত ছিলেন সেপ ব্ল্যাটারও। ফিফার সভাপতি থাকাকালীন সম্প্রচার স্বত্ব নিয়ে দুর্নীতিতে ওয়ার্নারকে সহায়তাও করেছিলেন তিনি। সুইজারল্যান্ড পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে এমনই তথ্য। তবে মামলা দায়েরের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ থেকে রেহাই পাচ্ছেন ফিফার অর্গানাইজিং কমিটির সাবেক প্রধান কর্মকর্তা ও জার্মান ফুটবলার ফ্রেঞ্জ বেকেনবাওয়ার।
ঘুষের বিনিময়ে ২০১০ ও ২০১৪ বিশ্বকাপের সম্প্রচার স্বত্ব জ্যামাইকা ভিত্তিক একটি কোম্পানিকে পাইয়ে দিতে সহায়তা করেছিলেন ফিফার তৎকালীন সহ-সভাপতি জ্যাক ওয়ার্নার। সুইজারল্যান্ড পুলিশের দাবি, সংস্থাটির তখনকার সভাপতি সেপ ব্ল্যাটার আগে থেকে জেনেও বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। যে চুক্তির কারণে ওয়ার্নার, এমনকি ব্ল্যাটারও আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে থাকতে পারেন। পক্ষান্তরে মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে ফিফার।
তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, ক্যারিবীয় টিভি স্বত্বের ওই চুক্তি হয়েছিলো ২০০৫ এ। ফিফার দলিলে যার পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৩ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার। সুইস অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর ২০১৫ সালে ব্ল্যাটারের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ায় বিষয়টি খতিয়ে দেখা শুরু করে। একই বছর ওই অর্থ চুক্তির সঠিক পরিমাণ ফাঁস হয় দেশটির গণমাধ্যমে। ব্ল্যাটার-ওয়ার্নারের সঙ্গে জ্যামাইকান প্রতিষ্ঠানের চুক্তি হয়েছিলো প্রকৃতপক্ষে মাত্র ৬ লাখ ডলারের।
ফিফা সহ-সভাপতির পাশাপাশি ২০১১ সাল পর্যন্ত উত্তর, মধ্য ও ক্যারিবীয় ফুটবলের কনফেডারেশন-কনকাকাফের সভাপতিও ছিলেন ওয়ার্নার। নিজের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগোর এই ফুটবল কর্তার লেনদেনে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। কিন্তু, কে জানতো অদূর ভবিষ্যতে একে একে দুর্নীতির সব ঘটনাই চলে আসবে সামনে!
সুইস পুলিশের ৪৯১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে খুব একটা আগ্রহ দেখায়নি ব্ল্যাটার কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, ২০১১ সালে ফিফার নির্বাচনে ওয়ার্নার, ব্ল্যাটারের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিলে ওই সম্প্রচার স্বত্ব বাতিল করা হয়। এরপর দুর্নীতির একাধিক ঘটনায় ২০২১ সাল পর্যন্ত ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ হলেও, বারবার নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন ব্ল্যাটার। যদিও সহজে ছাড় পাচ্ছেন না তিনি। সুইস পুলিশ যে উঠেপড়ে লেগেছে।
তবে, নিষ্কৃতি পেয়েছেন জার্মান কিংবদন্তি ফ্রেঞ্জ বেকেনবাওয়ার। ২০০৬ বিশ্বকাপে ফিফার অর্গানাইজিং কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন তিনি। সাবেক ফুটবলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেসময় ফিফার অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ কোন খাতে খরচ হয়েছে তা খোলাসা করা হয়নি। ২০০৬ বিশ্বকাপ আয়োজনের পক্ষে ভোট কিনতে ফিফার সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিন হাম্মামকে ২০০৫ সালে ঘুষ দিয়েছিলেন বেকেনওয়ার, অনুসন্ধানে উঠে আসে এমন তথ্য।
কিন্তু সুইজারল্যান্ডে অভিযোগ গঠনের ১৫ বছরের মধ্যে জালিয়াতির মামলা না করলে, তা আর আইনের আওতাভুক্ত থাকে না। মাঝে করোনাভাইরাসের কারণে যে তদন্ত স্থগিত ছিলো। এবার কোনো রায় ছাড়াই ইতি টানতে হলো বেকেনবাওয়ারের দুর্নীতির ঘটনার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।