দৃষ্টিশক্তি যখন ম্লান হয়ে যায়, তখনই আমরা চোখের যত্ন নেওয়ার গুরুত্ব বুঝতে পারি। আমাদের চোখ প্রতিদিন হাজারো আলোর ঝলক, ধুলাবালি ও ডিজিটাল স্ক্রিনের সামনে পড়ে। এমন অবস্থায় শুধুমাত্র ওষুধ নয়, দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন আনতে বলেন বিশেষজ্ঞরা। দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর খাবার নিয়ে তারা পরামর্শ দেন, এমন কিছু উপাদান প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় রাখলে চোখ থাকবে সুস্থ ও সতেজ।
Table of Contents
দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর খাবার: বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু নির্দিষ্ট খাবারে থাকা ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও মিনারেল চোখের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। নিচে এমন ৫টি খাবারের কথা উল্লেখ করা হলো যা প্রতিদিন খাওয়া উপকারী বলে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন:
১. গাজর
গাজর বিটা-ক্যারোটিনের অন্যতম প্রধান উৎস। বিটা-ক্যারোটিন হলো ভিটামিন A এর পূর্বধারা যা চোখের রেটিনার কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি চোখকে রাত্রিকালীন অন্ধত্ব থেকে রক্ষা করে এবং চোখের শুষ্কতা কমায়।
২. সবুজ শাকসবজি
স্পিনাচ, কলমি শাক, পালংশাক প্রভৃতি শাকসবজিতে থাকে লুটেইন ও জিয়্যাক্সানথিন, যা চোখের রেটিনা রক্ষা করে ক্ষতিকর আলোর প্রভাব থেকে। গবেষণা অনুযায়ী, এই উপাদানসমূহ বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন রোধে সহায়ক।
৩. ডিম
ডিমের কুসুমেও রয়েছে লুটেইন ও জিয়্যাক্সানথিন, যা চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন E ও Zinc যা চোখের কোষগুলিকে সুরক্ষা দেয়।
৪. বাদাম ও বীজ
আখরোট, কাজু, সূর্যমুখী বীজ, চিয়া বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন E ও Omega-3 fatty acids। এই উপাদানগুলো চোখের কোষ সুরক্ষা করে এবং চোখের শুষ্কতা কমাতে সাহায্য করে।
৫. মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলু গাজরের মতোই বিটা-ক্যারোটিনে ভরপুর। এটি ভিটামিন A-র ভালো উৎস, যা চোখের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
চোখের যত্নে অতিরিক্ত টিপস
- প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন যাতে চোখে হাইড্রেশন বজায় থাকে।
- কম্পিউটারে কাজ করার সময় প্রতি ২০ মিনিট পরপর ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরের কিছু দেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন (20-20-20 rule)।
- সানগ্লাস ব্যবহার করুন রোদের ক্ষতিকর UV রশ্মি থেকে চোখ রক্ষার জন্য।
- প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।
চোখের স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি: বর্তমান বাস্তবতা
বর্তমান সময়ে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে স্ক্রিন টাইম অনেক বেড়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল বা কম্পিউটার স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকলে চোখ ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে যায়। তাই বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন খাবারের মাধ্যমে ভেতর থেকে চোখের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি প্রযুক্তির ব্যবহার সীমিত করা উচিত।
দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর খাবার কেন গুরুত্বপূর্ণ?
মানবদেহে চোখ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের মূল অংশ। চোখ সুস্থ না থাকলে আমরা কোনো কাজই সঠিকভাবে করতে পারি না। তাই প্রতিদিন কিছু নির্দিষ্ট খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে চোখ সুস্থ থাকে, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং বয়সজনিত চোখের রোগের ঝুঁকি কমে যায়।
জেনে রাখুন-
প্রতিদিন গাজর খেলে কি দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয়?
হ্যাঁ, গাজরে থাকা বিটা-ক্যারোটিন দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সহায়তা করে। এটি ভিটামিন A-র একটি ভালো উৎস।
ডিম কি চোখের জন্য ভালো?
অবশ্যই। ডিমে থাকা লুটেইন ও ভিটামিন E চোখের কোষ রক্ষা করে এবং চোখের ক্লান্তি কমায়।
চোখে Omega-3 কি উপকার করে?
হ্যাঁ, Omega-3 fatty acids চোখের শুষ্কতা কমাতে ও কোষ সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখে।
শাকসবজি কি চোখের রেটিনা রক্ষা করে?
সবুজ শাকসবজিতে থাকা লুটেইন ও জিয়্যাক্সানথিন চোখের রেটিনা রক্ষা করে এবং চোখের আলো সংবেদনশীলতা বাড়ায়।
কম্পিউটারে কাজ করলে চোখের সমস্যা হয়?
দীর্ঘ সময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখে ক্লান্তি আসে, শুষ্কতা তৈরি হয় এবং দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।