আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ৮ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৬১০ কোটি ডলার যা দিয়ে মাত্র এক মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। অর্থসংকটের মুখে দেউলিয়ার ঝুঁকিতে এখন দেশটি।
গত কয়েক ব্ছর ধরেই অর্থনৈতিক টানাপড়েনের মুখে পাকিস্তান। টানা রাজনৈতিক সংকট, তার ওপর এ বছরে দেশটিতে ভয়াবহ বন্যার আঘাত- পাকিস্তানকে নিয়ে গেছে দেউলিয়ার একেবারেই দ্বারপ্রান্তে। বিশ্বমন্দার এই সময়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকেও নতুন কোন তহবিল পাওয়ার আশ্বাস পায়নি দেশটি।
প্রবল আর্থিক সংকটে ধুঁকতে থাকা পাকিস্তানে বাজেটে বড় ধরনের ঘাটতি ও দুর্বল মুদ্রানীতি ব্যবস্থা আগে থেকেই ছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রবৃদ্ধির নিম্নগতি, বৈদেশিক মুদ্রার হ্রাস ও সরকারি ঋণ। এ ছাড়া কাঠামোর দুর্বলতা, কর অব্যবস্থাপনা ও ব্যবসার প্রতিকূল পরিবেশ তো আছেই।
রিজার্ভ কমার কারণ হিসেবে এক বিশেষ প্রতিবেদনে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, বর্তমান সরকার ২০২২ -২৩ অর্থবছরের জন্য প্রবৃদ্ধির দিকে খুব একটা নজর দেয়নি। এমনকি দেশটিতে আর্থিক স্থিতিশীলতা ছাড়াও দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষণা করে ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত মাসে দেশটির রিজার্ভ কমেছে এক হাজার একশ ৬০ কোটি ডলার। গত বছরের ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ছিল এক হাজার ৭৭০ কোটি ডলার যা এখন ৬১০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। এ অর্থ দিয়ে এক মাসের আমদানি করতে পারবে পাকিস্তান।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে নেট বৈদেশিক রিজার্ভ এখন ৫৯০ কোটি ডলার। তার অর্থ দেশের মোট তরল বৈদেশিক রিজার্ভ এখন মাত্র ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার।
২০১৯ সালে পাকিস্তানকে ৩ বছরের কিস্তিতে ৬০০ কোটি ডলারের সম্প্রসারণযোগ্য ঋণ দিতে সম্মত হয় আইএমএফ। তবে এ বছরের শুরুতে শর্ত মানতে না পারায় কিস্তির অর্থ দেয়া বন্ধ রাখে সংস্থাটি। তবে কৃষিখাত ও রপ্তানিমুখী খাতে রেয়াতপ্রাপ্ত বিদ্যুতের জন্য ভর্তুকিতে বড় ধরনের সংরক্ষণ না করতে চাইলে ঋণের অর্থ দিতে ত্বরান্বিত করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল কখন নবম পর্যালোচনা শেষ করে পাকিস্তানকে অর্থ সহায়তা দেবে তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে পাকিস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইলসহ বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন, এখনও দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে পাকিস্তান।
এদিকে, চীন থেকে নেয়া ঋণ এখনও শোধ করতে পারেনি পাকিস্তান। তবে বুধবার অতিরিক্ত আর্থিক প্যাকেজ হিসেবে আরও প্রায় ৮৮০ কোটি ডলারের সহযোগিতা চাওয়ার পর ইসলামাবাদকে প্রতিটি সম্ভাব্য উপায়ে সাহায্য করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে চীন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।