রাকিব হায়দার, সাতক্ষীরা: শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে সাতক্ষীরার কোরবানীর পশুর হাটগুলো। সীমান্ত দিয়ে গরু আসা বন্ধ হওয়ায় এসব হাটে এবারও শুধুমাত্র দেশি গরু বিক্রি হচ্ছে। কোথাও ভারতীয় গরু নজরে পড়েনি। আর এতে খুশি খামারি ও ব্যাপারীরা।
কোরবানির ঠিক আগমুহূর্তে সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আসায় প্রতি বছরই স্থানীয় খামারিরা তাদের পশুর ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে চিন্তায় থাকে। কিন্তু স্বস্তির কথা হলো এবার ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধ থাকায় এবং সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের ফলে সাতক্ষীরার কোনও পশুর হাটে ভারতীয় গরু দেখা যায়নি।
সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবির কর্মকর্তারা জানান, সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকজুড়ে কঠোর নজরদারি থাকায় একটি ভারতীয় গরুও এবার আসেনি। ঈদের আগ মুহূর্তে যেন একটি গরুও প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য চেকপয়েন্ট বসানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আবাদের হাটে আব্দুল হালিম নামে একজন গরুর ব্যাপারী জুমবাংলাকে বলেন, এ বছর ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধ থাকায় স্থানীয় খামারি ও ব্যাপারীরা ভালো দামে গরু বিক্রি করতে পেরেছেন।
আঁগরদাড়ি গ্রামের গরু বিক্রেতা মিজানুর রহমান জুমবাংলাকে বলেন, হাটে ভারতীয় গরু না থাকায় গত বছরের তুলনায় দাম মোটামুটি ভালোই পেয়েছি। গো-খাদ্যের দাম বাড়ার কারণে এবার হাটে গরুর দামও একটু বেশি।
প্রতি বছর আবাদের হাট ছাড়াও সাতক্ষীরার পারুলিয়া, কলারোয়া, বুধহাটা আঠারমাইল, তারালীসহ অপরাপর পশুর হাটগুলোতে চোরাই পথে সীমান্ত দিয়ে আসা ভারতীয় গরু চোখে পড়লেও এবার কোনও ভারতীয় গরু দেখা যায়নি।
কোরবানির পশুর হাটগুলো পরিদর্শন ও খামারিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবারের কোরবানির জন্য ক্রেতাদের চাহিদা সাধারণত মাঝারি সাইজের গরুর। অধিকাংশ ক্রেতাই কোরবানির জন্য ৭০-৮০ হাজার টাকার মধ্যে গরু ক্রয় করেছেন। তবে ক্রেতারা বলছেন গত বছরের তুলনায় এবার সব ধরনের গরুর মূল্য কিছুটা বেশি।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার গড়েরকান্দা গ্রামের মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, অন্য বছরের তুলনায় গরুর দাম এবার একটু চড়া। এ বছর সাতক্ষীরায় ভারতীয় গরু প্রবেশ করতে না পারার সুযোগে গরুর দাম বেশি নিয়েছেন ব্যাপারীরা।
২০১৪ সালে ভারতে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশে ভারতীয় গরু আসা বন্ধ করে দেয়। আর সেটাই হয়েছে বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ। এখন বাংলাদেশ গবাদি পশুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। বাংলাদেশে এখন ছোট-বড় মিলিয়ে ২০ লাখ খামার আছে।
এর আগে প্রতি বছর ভারত থেকে প্রতি বছর ৩০ লাখের মতো গরু-ছাগল আসতো বৈধ এবং অবৈধ পথে। শুধু কোরবানির ঈদেই আসতো ২০-২২ লাখের মতো। কিন্তু এখন চিত্র পুরোই পাল্টে গেছে। উল্টো প্রতি বছর দেশি গরুরই একটি অংশ অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।