জুমবাংলা ডেস্ক : সিলেটে শীতের সবজির মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে স্থানীয় জাতের ‘গোয়ালগাদ্দা’ শিমের। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখন এ শিম যাচ্ছে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। শিম রপ্তানি করে আয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। এ ছাড়া কৃষকরাও হচ্ছেন উপকৃত। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় গোয়ালগাদ্দা শিম চাষ নিয়ে কৃষকদের মাঝেও আগ্রহ বাড়ছে। প্রতিদিন প্রায় ৫ টন শিম বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জালালাবাদ ভেজিটেবল অ্যান্ড ফ্রোজেন ফিস এক্সপোটার্স গ্রুপের সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
শীতকালে সিলেটের প্রায় সবকটি উপজেলায় গোয়ালগাদ্দা শিমের চাষ হয়। বিশেষ করে গোলাপগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় এ জাতের শিমের চাষাবাদ হয়ে থাকে বেশি। গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মণাবন্দ, লক্ষ্মীপাশা ও ফুলবাড়ি ইউনিয়নে এ জাতের শিম বেশি উৎপাদন হয়ে থাকে। এক সময় এ শিমের চাহিদা সিলেটের মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। অন্যান্য জাতের শিমের চেয়ে গোয়ালগাদ্দা বেশি সুস্বাদু হওয়ায় এর সুনাম ধীরে ধীরে দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। বিদেশে সিলেটী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে গোয়ালগাদ্দা শিমের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় রপ্তানিকারকরা তাদের রপ্তানি পণ্যের তালিকায় যুক্ত করেন এ শিম। কয়েক বছর ধরে গোয়ালগাদ্দা শিম ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্তত ১৩টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
জালালাবাদ ভেজিটেবল অ্যান্ড ফ্রোজেন ফিস এক্সপোটার্স গ্রুপের সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সিলেটের কৃষকদের কাছ থেকে শিম সংগ্রহ করে তা প্রথমে বাছাই করা হয়। পরে প্রক্রিয়াজাত করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে তা ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়। নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত গোয়ালগাদ্দা শিম রপ্তানি হয়ে থাকে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫ মেট্রিক টন শিম রপ্তানি হয়ে থাকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ৫৫৫ হেক্টর জমিতে গোয়ালগাদ্দা শিম চাষ হয়েছে। আগামী বছর ৬০০ হেক্টর জমিতে গোয়ালগাদ্দা শিমের চাষ উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। চলতি বছর ৮৫ মেট্রিক টন শিম উৎপাদন হবে বলে আশা করছে গোলাপগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস। বাণিজ্যিকভাবে এ শিম চাষের সঙ্গে গোলাপগঞ্জ উপজেলার প্রায় সাড়ে ৪০০ পরিবার যুক্ত।
কৃষকরা জানান, গোলাপগঞ্জ উপজেলার পুরকায়স্থবাজার ও চৌধুরীবাজারে হাটের দিন কৃষকরা গোয়ালগাদ্দা শিম নিয়ে আসেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ভালো জাতের শিম কিনে সেগুলো রপ্তানিকারকদের কাছে পৌঁছে দেন। সবুজ আহমদ নামের এক ব্যবসায়ী জানান, তিনি স্থানীয় হাট থেকে শিম কিনে সেগুলো ঢাকায় পাঠিয়ে দেন। সেখান থেকে রপ্তানিকারকরা কিনে বাছাই ও প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানি করে থাকেন।
গোলাপগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাশরেফুল আলম জানান, চলতি বছর ৫৫৫ হেক্টর জমিতে গোয়ালগাদ্দা শিম চাষ হয়েছে। আগামী বছর ৬০০ হেক্টর জমিতে গোয়ালগাদ্দা শিমের চাষ উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। চলতি বছর ৮৫ মেট্রিক টন শিম উৎপাদন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।