জুমবাংলা ডেস্ক: বাংলাদেশের নির্মিত প্রথম খ্রিষ্টান গির্জাটির নাম যিশুর গির্জা। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে কেবল কাগজে কলমে এই গির্জার উপস্থিতি থাকলেও গির্জা স্থানে এর কোন স্মৃতিচিহ্ন পর্যন্ত নেই। কেউ দেখেছে এমনও শুনা যায় না। ধারনা করা হয় কালের বিবর্তনে এটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। সেই জায়গা জুড়ে এখন রয়েছে দুটি বাড়ি আর বাকি জমিনে বেড়ে উঠেছে কিছু গাছপালা। তবে তাতেও এই জায়গা ঘিরে মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। অতীত স্থাপনার বিগত ঐশ্বর্যকে স্মরণ করে মানুষ এখনো এই জায়গায় ঘুরে দেখতে যান।
যিশুর গির্জা বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামে অবস্থিত। সাতক্ষীরা শহর থেকে এর দূরত্ব আনুমানিক ৭৫ কিলোমিটার। সাতক্ষীরা শ্যামনগর সড়কের পাশেই এই গির্জাটির অবস্থান ছিলো।
ইতিহাস হতে জানা যায়, ১৫৯৯ সালে ঈশ্বরীপুরে বাংলাদেশের প্রথম খৃস্টান গির্জা নির্মিত হয়। ১৫৪০ খ্রিষ্টাব্দে ইগ্নেসিয়াস লয়োলা নামক একজন স্প্যানিশ ব্যক্তির নেতৃত্বে জেসুইট বা যিশু সম্প্রদায় গঠিত হয়। তারপর খ্রিস্টধর্ম প্রচারের জন্য তারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েন। এদের মধ্যে একজনের নাম ছিলো পাদ্রী ফনসেকা।
পাদ্রী ফনসেকো নদীপথে ১৫৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২০ নভেম্বর ঈশ্বরীপুরে পৌঁছান । ঈশ্বরীপুর ছিলো তখনকার সময়ে রাজা প্রতাপাদিত্যের রাজধানী। ফনসেকা এখানে এসে আরো একজন খ্রিস্টান পাদ্রী ফাদার সোসার দেখা পান । ফাদার সোস ও ফনসেকা প্রতাপাদিত্যের দরবার কক্ষ বারদুয়ারীতে উপস্থিত হয়ে রাজাকে বারদুয়ারী ভবনের উত্তর-পূর্ব কোণে যেখানে খ্রিস্টান পল্লী অবস্থিত সেখানে একটি গির্জা নির্মাণের প্রস্তাব করেন ।
এ সময় তারা রাজা প্রতাপাদিত্যের দরবার কক্ষ বারদুয়ারীতে উপস্থিত হয়ে বেরিঙ্গান নামের এক প্রকার সুস্বাদু কমলালেবু রাজাকে উপহার দেন । প্রতাপাদিত্য গির্জা নির্মাণে তাদের সম্মতি দেন।রাজার সম্মতি পেয়ে তারা গির্জা নির্মাণের কাজ শুরু করেন। প্রতাপাদিত্য শুধু সম্মতিই নয় নির্মাণকাজে নানা সাহায্যই করে থাকেন। আর এর মধ্য দিয়েই নির্মিত হয় বাংলাদেশের প্রথম খ্রিষ্টান গির্জা। যা যিশুর গির্জা নামেই পরিচিত সবার কাছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।