নিজস্ব প্রতিবেদক: ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি-১) প্রকল্পের আওতায় দেশের প্রথম পাতাল রেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বেলা ১১টার দিকে রূপগঞ্জের পূর্বাচল সেক্টর-৪ এ প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন।
এরপর সুধী সমাবেশে ভাষণ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফর কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে সমাবেশস্থলে যোগ দিয়েছেন। সবমিলিয়ে রূপগঞ্জের পুরো এলাকা জুড়ে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর আগমন কেন্দ্র করে রূপগঞ্জের পূর্বাচলে সেক্টর-৪ এ তৈরি করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। সেইসঙ্গে মঞ্চের চারদিকে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেন, সরকার ২০২৬ সালের মধ্যে আনুমানিক ৫২,৫৬১.৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর এবং পূর্বাচল থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত মাটির নিচ দিয়ে এবং এলিভেটেড উভয় সুবিধা সম্বলিত এমআরটি লাইন-১ নির্মাণ করবে।
২০৩০ সাল নাগাদ রাজধানী ঢাকায় মোট ছয়টি মেট্রোরেল রুট উদ্বোধন করা হবে উল্লেখ করে সিদ্দিক বলেন, ডিএমটিসিএল এই মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী এমআরটি লাইন-১-এর দুটি অংশ থাকবে- একটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত (বিমানবন্দর রুট) ১৯.৮৭২ কিলোমিটার অংশ। এটি হবে ভূগর্ভস্থ এবং এতে ১২টি স্টেশন থাকবে। অপর অংশটি নতুন বাজার থেকে প্রায় ১১.৩৭ কিলোমিটার এলিভেটেড লাইনসহ পূর্বাচল পর্যন্ত (পূর্বাচল রুট)। এতে সাতটি স্টেশন থাকবে।
অন্যদিকে বিমানবন্দর রুটের অংশ হিসেবে নতুন বাজার এবং নদ্দা স্টেশন হবে ভূগর্ভস্থ । বাংলাদেশ সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন (জাইকা) এমআরটি লাইন-১-এর নির্মাণ কাজের জন্য ৫২,৫৬১.৪৩ কোটি টাকার ব্যয়ভার বহন করবে। এর মধ্যে জাইকা প্রকল্প সহায়তা (পিএ) হিসাবে দেবে ৩৯,৪৫০.৩২ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার দেবে ১৩ হাজার ১১১ কোটি ১১ লাখ টাকা। জাপানি ফার্মের নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম বিমানবন্দর-কমলাপুর-পূর্বাচল মেট্রো লাইন নির্মাণ কাজ তদারকি করবে।
প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, এমআরটি লাইন-১-এ ১২টি ভূগর্ভস্থ স্টেশনে বিরতিসহ বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর ভ্রমণ করতে লাগবে ২৪ মিনিট ৩০ সেকেন্ড এবং সাতটি বিরতিসহ নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল যেতে সময় লাগবে মিনিট ৩৫ সেকেন্ড। যাত্রীরা নতুন বাজার ইন্টারচেঞ্জের মাধ্যমে ১৬টি স্টেশনে বিরতিসহ মাত্র ৪০ মিনিটের মধ্যে কমলাপুর থেকে পূর্বাচলে যেতে পারবেন। এমআরটি লাইন-১ চালু হলে, এ রুটে প্রতিদিন আট লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, নতুন বাজার স্টেশনে এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর রুট) দিয়ে একটি ইন্টারচেঞ্জ সুবিধা থাকবে,
যেখান থেকে যাত্রীদের জন্য পূর্বাচল থেকে বিমানবন্দর রুটে অথবা পূর্বাচল রুট থেকে বিমানবন্দরে যেতে পারবেন।
উল্লেখ্য, এরআগে ২০১৯ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৫২,৫৬১.৪৩ কোটি টাকায় দেশের প্রথম পাতাল রেল প্রকল্প এমআরটি লাইন-১ অনুমোদন দেয়।
একজন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, দেশের প্রথম আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেলের নির্মাণের কাজ উদ্বোধনের সঙ্গে বাংলাদেশ বহুল প্রত্যাশিত ভূগর্ভস্থ রেল যোগাযোগ যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এটি করতে পারেন। এরই মধ্যে সফলভাবে পদ্মা বহুমুখী সেতু ও বঙ্গবন্ধু টানেল বাস্তবায়নের মাধ্যমে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের সক্ষমতা প্রমাণ করেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।