জুমবাংলা ডেস্ক: বরগুনার তালতলী উপজেলার বেহেলা গ্রামের গোলপাতার রসের গুড় দেশের সীমানা পেরিয়ে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। এতে ভাগ্য ফিরছে অনেকের।
গাছিরা চান উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও গুড় বাজারে সরবরাহে সরকারি সহযোগিতা। প্রতিবছর শীত মৌসুমে ব্যস্ত হয়ে পড়েন বেহেলা গ্রামের গোল গাছিরা। গোলপাতার রস সংগ্রহ আর গুড় তৈরির কর্মযজ্ঞে এ সময়ে বদলে যায় পুরো গ্রামের চিত্র।
প্রায় চার মাস গোলের রস ঘিরে কর্মসংস্থান হয় উপজেলার কয়েক হাজার মানুষের। বেহেলা গ্রামে গোলের গাছ রয়েছে প্রায় ৪ হাজার। শীতে এসব গাছ হয়ে ওঠে কর্মসংস্থানের উৎস। একজন গাছি প্রতিদিন তিন থেকে চার শ গাছের রস আহরণ করতে পারেন।
গোলের রস সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকা সবাই গাছের মালিক নন। আবার সব মালিকই নিজে রস সংগ্রহের কাজ করেন না। অনেক গাছ মালিক সংগৃহীত রস সমান অংশে ভাগ করে নেওয়ার চুক্তিতে লোক নিয়োগ দেন। চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা মৌসুমজুড়ে রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদন কাজে নিয়োজিত থাকেন। রস থেকে যেমন গুড় তৈরি হয়, তেমনি রস সংগ্রহের জন্য কেটে ফেলা গাছের ডগাও ব্যবহার হয় জ্বালানি হিসেবে। গোলপাতাও বিক্রি হয় আলাদাভাবে।
নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত গোল গাছগুলো রস সংগ্রহের উপযোগী থাকে। শীত যত বাড়ে, গাছ থেকে রসও তত বেশি ঝরা শুরু হয়। আর একই সঙ্গে বাড়ে রস ও গুড়ের চাহিদা। গাছে প্লাস্টিকের পাত্র বসিয়ে সংগ্রহ করা হয় রস। প্রতি কলস রস বিক্রি হয় ৩০০-৪০০ টাকায়। আর প্রতি কেজি গুড়ের দাম স্থানীয়ভাবে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। এক কলস রস দিয়ে তিন কেজি গুড় পাওয়া যায়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, তালতলী উপজেলায় বর্তমানে ৯০ হেক্টর জমিতে গোল গাছের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। এসব বাগান থেকে সংগৃহীত রস জ্বালিয়ে প্রতি শীতে ১০ হাজার টনেরও বেশি গুড় উৎপাদন হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল রহমান বলেন, গোল গাছের রস ও গুড় একটি সম্ভাবনাময় ফসল। এখানকার লবণাক্ত মাটিতে ধান বা অন্য ফসল ফলানো চ্যালেঞ্জ। গোল গাছই এখানে ভালো হয়। এই সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে গবেষণার মাধ্যমে চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে তা কাজে লাগবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।