জুমবাংলা ডেস্ক : আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, দেশে খাদ্যের কোন সংকট নেই। এখন সারা দেশে বোরো ধান কাটা চলছে। কৃষকের ঘরে ঘরে এখন হাসির ঝিলিক লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তারপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদ উপলক্ষে সাধারণ মানুষকে উপহার দিচ্ছেন- যাতে করে কোনক্রমেই একটি মানুষকেও যেন ঈদে খাদ্যের জন্য কষ্ট করতে না হয়। ঈদের আনন্দ যাতে ম্লান না হয়। কৃষিমন্ত্রী বলেন, খাদ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে আমাদের বিজ্ঞানীরা নিরলসভাবে কাজ করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ব্রি–৮১, ব্রি- ৮৯, ব্রি ৯২ এবং মুজিববর্ষে ব্রি- ১০০সহ অনেকগুলো উন্নত জাতের ধান উদ্ভাবিত হয়েছে। ব্রি-৮১, ব্রি- ৮৯ ও ব্রি ৯২ জাতের ধানের ফলন অনেক বেশি। প্রতি বিঘায় ২৫- ৩০ মণ এবং প্রতি শতকে প্রায় ১ মণ।
এ জাতগুলো চাষের মাধ্যমে দেশে নতুন করে সবুজ বিপ্লব ঘটবে। দেশে খাদ্য উৎপাদন অনেকগুণ বাড়বে ও ভবিষ্যতে খাদ্য সংকট হবে না।
শনিবার(৮ মে) টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার মুশুদ্দি কামারপাড়ায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আয়োজিত ‘ব্রি-৮৯ ও ৯২ জাতের ধান কর্তন ও কৃষক সমাবেশ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ব্রি ৮৯ ও ব্রি- ৯২ চাষের মাধ্যমে উন্নত শস্য বিন্যাসে বোরো ধান ও আমন ধান চাষ করে পতিত সময়ে সরিষা আবাদ করা যাবে। প্রতিবছর আমাদেরকে বিদেশ থেকে ১৫-২০ হাজার কোটি টাকার বিপুল পরিমাণ ভোজ্য তেল আমদানি করতে হয়।
এ জাত দুটি চাষ করলে অতিরিক্ত ফসল হিসাবে সরিষা উৎপাদন করা যাবে। ফলে সরিষার উৎপাদন বাড়বে ও তেল আমদানির পরিমাণ কমবে।
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ব্রি’র তথ্যমতে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে রোপণকৃত ব্রি ধান-৮৯ ও ব্রি ধান-৯২ শনিবার কাটা হয়। আগে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী এলাকায় ব্রি ধান-২৮ এবং ব্রি ধান-২৯ আবাদ করা হতো যেখানে এসব ধানের ফলন ছিল বিঘাপ্রতি ১৮ থেকে ২০ মণ।
একই স্থানে ব্রি ধান-৮৯ ও ব্রি ধান-৯২ ধানের ফলন পাওয়া যায় বিঘাপ্রতি ২৫-৩০ মণ। এছাড়া ব্রি ধান-২৯ এর চেয়ে পাঁচ থেকে সাত দিন আগেই এ দুটি জাতের ধান কর্তন করা যায়।
ব্রি’র তথ্যমতে, বোরো-পতিত-রোপা আমন বাংলাদেশের একটি প্রধান শস্যবিন্যাস- যা সারাদেশের মোট আবাদযোগ্য প্রায় ২৭% জমিতে চাষাবাদ করা হয়। এই দ্বি-ফসলী শস্যবিন্যাসের নানাভাবে উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে- বিশেষ করে উঁচু এবং মধ্যম উঁচু জমিতে সহজে আবাদ করা যায়।
এ শস্যবিন্যাসের উন্নয়নের জন্য প্রথমত বোরো এবং রোপা আমন ধানের মধ্যবর্তী সময়ে সরিষা চাষ করা হয়। ভোজ্য তেলের জন্য বোরো-পতিত-রোপা আমন শস্যবিন্যাসে সরিষা অর্ন্তভূক্তি করতে পারলে ২.৬০ মিলিয়ন টন সরিষা উৎপাদন সম্ভব- যা থেকে বছরে ১.০৪ মিলিয়ন টন সরিষা তেল পাওয়া যেতে পারে।
এর আগে সকালে মন্ত্রী মধুপুরের গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদে ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ৩১ হাজার ১৮৭টি পরিবারকে ৪৫০ টাকা করে মোট এক কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার ভিজিএফ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ, বারি’র মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলাম, বিনা’র ডিজি ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গণি, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।